নিজস্ব প্রতিনিধি,ভাদুতোলা:
ভাদুতলা বিবেকানন্দ হাইস্কুল (উচ্চমাধ্যমিক)-এর ব্যবস্থাপনায় শনিবার বিদ্যালয়ে ছাত্রাবাসের ছাত্রদের নিয়ে এবং বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কুসংস্কার বিরোধী সচেতনতা শিবির অনুষ্ঠিত হলো বিদ্যালয়ের রবীন্দ্র মঞ্চে।পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। ছাত্রদের মধ্যে “ঠাকুর ভর করেছে” কুসংস্কার কে দূর করতে এই উদ্যোগ।
উল্লেখ্য,কয়েকদিন আগে ছাত্রাবাসে কয়েকজন ছাত্র রাত্রি বারোটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ‘ঠাকুর ভর কররেছ’ এই আছিলায় এক প্রকার তাণ্ডব চালায় গোটা হোষ্টেল জুড়ে। ঘটনায় প্রকাশ সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণীর কয়েকজন ছাত্র হঠাৎই ভর করার ভান করে অজ্ঞান হয়ে যায়।ওই দিন তার আগে রাত্রি সাড়ে আটটার সময় একটি ছাত্রকে অসুস্থতার কারণে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।ছেলেটি এখন ভালো আছে। কিন্তু ওই দিন রাতে ছাত্রটিকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়ে হোস্টেল সুপার এবং সহ শিক্ষকেরা ফিরে আসার পর দেখতে পান অভাবনীয় এই তান্ডব লীলা।দীর্ঘ সময় ধরে অন্যান্য ছাত্ররা তখন অনিশ্চয়তা এবং ভয়ে কাঁপছে। সরকারি প্রতিনিধি,জনপ্রতিনিধি,প্রাক্তন ছাত্র ও শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় সাড়ে তিনটা নাগাদ কিছুটা শান্ত হয় ছাত্ররা।পরের দিন অভিভাবক সভা আহ্বান করে সম্মিলিত সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে ‘ভর হওয়া’ সমস্ত ছাত্রদের বাড়িতে থেকে মানসিক চিকিৎসা করবার জন্য ছাত্রাবাস থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।বিগত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় ছাত্র এবং অভিভাবক-অভিভাবিকা দের নিয়ে সচেতনামূলক সভা করা হয়।
কিন্তু তাতেও ছাত্রদের মধ্যে ভীতি কাটিয়ে ওঠা যায় নি।তাই পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চে সহযোগিতায় ড.বাবুলাল শাসমল নন্দদুলাল ভট্টাচার্য,বিধান পড়িয়ার উপস্থিতিতে সচেতনতা মূলক নাটক ও বক্তব্য পরিবেশিত হয়।ছাত্র ও অভিভাবক অভিভাবিকাদের সামগ্রিক অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।মূলত কুসংস্কার কে দূরে সরিয়ে রেখে যুক্তিনির্ভর মুক্ত চিন্তা নিয়ে আগামী দিনে পথ চলবার জন্য সবাই সংকল্প বদ্ধ হন।বিদ্যালয়ের তরফে প্রধান শিক্ষক ড. অমিতেশ চৌধুরী আয়োজক সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও এদিনের কর্মসূচিতে সহ-প্রধান শিক্ষক ড.সুরজিৎ ঘোষাল সহ শিক্ষক শিক্ষিকা রবীন্দ্রনাথ মূর্মূ, স্বপন মন্ডল,শীতিকন্ঠ পাত্র, সুব্রত কুমার দে, মধুরিমা ধর,চুনকা সরেন এবং শিক্ষাকর্মী চম্পা ঘোষ ও দোলা দাস উপস্থিত ছিলেন।সকাল ৯ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,ছয় বছর আগে এরকম একবার ভর হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।তাতে ছাত্ররা পরে ঘটনা ঘটানোর জন্য ভুল স্বীকার করলে ছাত্রাবাসে থাকবার অনুমতি দেওয়া হয়।