নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝাড়গ্রাম:
জানেন কি?আগামীকাল সরস্বতী পুজো।আগামীকাল প্রতিটি ঘরে ঘরে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা হবে।ঠিক সেই সময় কেবলমাত্র ধনের দেবী লক্ষ্মীর সাথে জ্ঞানের দেবী সরস্বতীর ও আরাধনা হবে।একই সাথে লক্ষ্মী সরস্বতীর আরাধনা হয়ে আসছে ১৬২ বছর ধরে।পূর্বপুরুষের হাত দিয়ে শুরু হওয়া পুজো আজও তার ঐতিহ্যের সঙ্গে অটুট রয়েছে।
বিনপুর দু’নম্বর ব্লকের হাড়দা গ্রাম পঞ্চায়েতের হাড়দা গ্রামে সাহা ও মন্ডল পরিবারের উদ্যোগে এই পুজো হয়ে থাকে।কেবলমাত্র পুজো বললে ভুল বলা হবে।দূর্গা পূজার থেকেও বেশি আনন্দই মেতে উঠেন এই গ্রামের মানুষরা।৫ দিন ধরে চলে পুজো আর পুজোকে কেন্দ্র করে ৭ দিন ধরে আয়োজন করা হয় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের তার পাশাপাশি আরও বিশেষত্ব রয়েছে এখানকার জিলেপি।২৫০ থেকে ৩০০ কুইন্টাল এরও বেশি জিলেপি বিক্রি হয় এই লক্ষ্মীপূজায়।পুজোর কমিটির সম্পাদক ভুবন মন্ডল বলেন,”বিষ্ণুপুরাণ মতে নারায়ণের দুই স্ত্রী রয়েছে লক্ষ্মী ও সরস্বতী তাই আমরা একজনকে ছেড়ে কিভাবে আরেকজনের পূজা করতে পারি।সে জন্যই আমাদের পূর্বপুরুষের শুরু করা পূজো লক্ষ্মী সরস্বতীকে একসঙ্গে পুজো আজো আমরা করে চলেছি।এই বছর আমাদের পুজো ১৬২ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে।পুজোকে কেন্দ্র করে আমরা আনন্দে মেতে উঠি।আমাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে আত্মীয় স্বজনরা আসেন পাঁচ দিন ধরে বাড়িতে থাকেন জমিয়ে খাওয়া দাওয়া এবং পুজোর আনন্দ উপভোগ করে আমরা সবাই মিলে।
এই পুজোকে কেন্দ্র করে সাত দিন ধরে চলে নামিদামি শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও যাত্রা”।১৬ শে অক্টোবর থেকে লক্ষ্মীপূজা শুরু হবে চলবে ২০ই অক্টোবর পর্যন্ত।পুজোর ঘট উত্তোলনের সময় বিশেষ আতশবাজির ও প্রতিবছর ব্যবস্থা করে এই পুজো কমিটি। কিন্তু এই বছর তাতেও তারা পরিবর্তন এনেছে গ্রীন আতশবাজি ব্যবস্থা করেছে তারা।লক্ষ্মী পূজার প্রাঙ্গণে কেবলমাত্র একটি জিলাপির দোকান থাকে।নিলামের মাধ্যমে সেই দোকান নিতে হয় ব্যবসায়ীকে।উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন এই বছর ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকায় নিলাম পেয়েছে হাড়দা গ্রামেরই এক ব্যক্তি।চালগুড়ি দিয়ে তৈরি করা হয় এই জিলাপি।জিলাপির স্বাদ সবার থেকে আলাদা।প্রতিবছর ২৫০ থেকে ৩০০ কুইন্টাল জিলাপি বিক্রি হয় এখানে।হাড়দা লক্ষ্মীপূজো দেখার জন্য ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলার বহু মানুষ সের সমাগম হয়।উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন তাদের এবারের পুজোর বাজেট রয়েছে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা।হাড়দা গ্রামের বসবাস করি ৫০০টি সাহা-মন্ডল পরিবারের থেকেই এই চাঁদা দেওয়া হয়। বাইরের কারো কাছ থেকে কোন প্রকার চাঁদা আদায় করা হয় না।জমির উপর, পেশার উপর চাঁদা ধার্য করা হয় নিজেদের সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে ।
পুজোর এই ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিনপুর থানার পুলিশ এই পুজো দেখার জন্য বহু পর্যটক আসে বলেও জানা গিয়েছে।