নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
বইয়ের নেশার টানে একটা দুটো কিনতে কিনতে আস্ত একটি লাইব্রেরী বানিয়ে ফেলেছেন স্বাস্থ্য কর্মী অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়।তার জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে বই নিয়ে।বাড়ির লাইব্রেরীতে wifi কম্পিউটার থাকলেও,আক্ষেপ একটাই কেউ পড়তে আসছে না তার লাইব্রেরীতে।মানুষ মোবাইল ছেড়ে বই মুখো হোক চাই অভিনন্দন।
শুরুটা হয়েছিল ২০০৯ সালে।এক বই এর মেলাতে গিয়ে বইয়ের নেশায় কিনে ফেলেছিলেন কয়েকটি বই।তারপর থেকে যেখানে যখনই মেলা স্টল দেখতে পেয়েছেন তখনই বইয়ের নেশার চোটে কিনে ফেলেছেন একটি,দুটি করে তার শখের বই।এই ভাবেই তিনি বই কিনতে কিনতে করে ফেলেছেন আস্ত একটি লাইব্রেরী তাও আবার নিজের বাড়ির মধ্যে।এই লাইব্রেরীতে গল্প, কবিতা,ছড়া,রান্না সহ বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন লেখকের বই রয়েছে। রয়েছে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,নজরুল ইসলাম সহ একাধিক লেখক এর বই। বই রয়েছে মেদিনীপুরের উঠতি লেখক ও কবিদের লেখা বই ছড়া ও কবিতা। এই ১৩ বছরে তার সংগ্রহ এ মাত্রা প্রায় হাজার ছাড়িয়েছে। বাড়ির সামনের অংশটাতে লোহার রেক দিয়ে সাজিয়ে গড়ে তুলেছেন বই রাখার আস্ত লাইব্রেরী।
শুধু দিনে না রাতেও তিনি নতুন নতুন আলোর ধাঁধায় ভরিয়ে তুলেছেন এই লাইব্রেরীতে।লাইব্রেরির মধ্যে রাখতে চেয়েছেন কম্পিউটার ওয়াইফাই এবং পড়ার সাজ সরঞ্জাম। যাতে দূরের পড়ুয়ারা এসেও কোনভাবেই বই পড়া থেকে বঞ্চিত না হয়। ৩৬ বছর জীবনের ৩৬ টা বসন্তই শুধু কেটেছে বইয়ের মধ্য দিয়ে। এখন তিনি একধারে স্বাস্থ্য কর্মী অপরদিকে অবসর টাইমে কবিতা গান ছড়া এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডে গান গেয়ে বেড়ান এই অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়ের।অভিনন্দনের বাড়ি মেদিনীপুর শহরের বল্লভপুরে। মা বাবা স্ত্রীর সঙ্গে তিনি থাকেন তার মুখার্জি কুটিরে। তিনি কাজ করেন মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য ভবনের স্টোরের কর্মী হিসাবে। আর তার নেশায় চটেই এই লাইব্রেরী এখন নজর কাড়ছে মেদিনীপুর জেলায়। বই মানুষের মনুষ্যত্ব তৈরি করে মানুষকে বিবেকবান ও শিক্ষিত করে তোলে এই বার্তা দিতেই তিনি এই তৈরি করেছেন আস্ত লাইব্রেরী এবং বইপ্রেমীদের জন্য তিনি খুলে দিয়েছেন দরজা।
এক সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্যকর্মী অভিনন্দন মুখোপাধ্যায় বলেন সবার জন্য আমার লাইব্রেরী উন্মুক্ত।পড়ুয়ারা প্রয়োজনে আমার লাইব্রেরির wifi,computer ব্যবহার করতে পারবে। আমার একটাই আবেদন বই পড়তে আসুক বর্তমান প্রজন্ম।