Book Published: বয়ঃসন্ধির সমস্যাও যে কত জটিল তা নিয়ে আস্ত একটা বই লিখলেন 13 বছরের তোর্সা!নাম দিলেন “ECHOES OF INNOCENCE”

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:

জঙ্গল মহল অধ্যুষিত এই পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা সাঁওতালি সমাজের অন্যতম ডাক্তার সুবল কুমার মুর্মু ও হাইস্কুল এর শিক্ষিকা পদ্মা হাঁসদা মুর্মুর ১৩ বছর কন্যা তোর্সা মুর্মুর লেখা বই “ECHOES OF INNOCENCE” পাবলিশড হলো।যে বইতে উল্লেখ আছে কিশোর বয়সের অনুসন্ধিৎসা, চিন্তা ভাবনা,বয়:সন্ধি কালীন সমস্যা ও বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত ও সেই সমস্যা সমাধানের দিশা ও রয়েছে বইটিতে।

বই উদ্বোধনে কিশোরী

প্রসঙ্গত,জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে সুবল বাবুর আদি বাড়ী।এখন কর্মসূত্রে এখন বেশ কয়েক বছর ধরে মেদিনীপুরে বসবাস করেন সুবল বাবু।মেয়েকে তারা মেদিনীপুরের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনে ভর্তি করান।কাজের চাপে ও পরবর্তী কালে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্যে মেয়েকে ঠিকঠাক সময় দিতে পারেন নি।অপরদিকে তোর্সা র মা বাড়ী থেকে ৬০ কিমি দূরে শিক্ষকতা করার জন্যে মেয়েকে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেন নি।তবে তোর্সা সঙ্গী হিসাবে পেয়েছিল তার দিদিমা কে।অষ্টম শ্রেনীতে পড়া কালীন বয়ঃসন্ধি কালীন বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত নিয়ে লিখে ফেলেছে আস্ত একটা গোটা বই।বই টা নাম ” ECHOES OF INNOCENCE”।প্রায় ২১ টি চ্যাপ্টার এর মধ্য দিয়ে ১৪৫ পৃষ্ঠার এই বইয়ে আরও উল্লেখিত হয়েছে,”বয়স সন্ধি কালীন সমস্যা গুলিকে প্রাথমিক ভাবে বাবা মা কে জানাতে কুণ্ঠা বোধ করে যেকোনো ছাত্র ছাত্রী.তখন সহায় হয়,দাদু,ঠাকুমা,দিদিমারা।

লেখিকা তার যৌথ পরিবারের প্রয়োজনীয়তাও বয়স সন্ধিকালিন সমস্যার প্রতি যথেষ্ট যত্নবানের আবেদন রেখেছেন।বইটি তে মূল চরিত্র ১৫ বছরের অবন্তিকা সেন জীবনের গভীরে তলিয়ে যায়।একজন কিশোরী তার কৈশোরে পা রাখছে।বছরের পর বছর চ্যালেঞ্জ,বিক্ষিপ্ততা এবং বোঝার জন্য এবং মনোযোগের আকাঙ্ক্ষা যা প্রায়শই জীবনের এই রূপান্তর মূলক পর্ব কে সংজ্ঞায়িত করে।জীবনের পথটি যে কেবল গোলাপের বিছানা নয়,কখন কখনও তা কণ্টকাকীর্ণ হয়ে ওঠে।এটি সেই বই যা আমাদের কে,আমাদের অসুবিধা থেকে বিকশিত হতে বলে।বইটিতে তিনি বেশ কয়েকটি কাল্পনিক চরিত্র হিসাবে অপরাজিতা,অভোয়ানন্দ্র,বন্ধুর চরিত্রে রাজশ্রী,কাকুর চরিত্রে অমিত,ঠাকুর দা হিসাবে অমরজিৎ,আন্টি হিসাবে অন্যায়া এবং শেষে তার বন্ধু হিসাবে কাইসা কে দেখিয়েছে।মূল চরিত্র অবন্তিকা সেন এর জীবনের গভীরে তলিয়ে যাওয়া এবং জীবনের চূড়ান্ত পরিণতিই এই বইয়ের মূল উপজীব্য বিষয়।

এই দিন এক জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বইটির উদ্বোধন করলেন তার বাবামা।এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন শহর জেলা ও রাজ্যের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ছিলেন কলকাতার আই বি টি এম এন্ড আই এইচ সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাংক কলকাতার ডিরেক্টর ডাক্তার স্বপন সরেন। বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনের প্রধান শিক্ষিকা শবনম দত্ত, খড়গপুর আই আই টি এর মেটেরিয়াল সায়েন্সের প্রফেসর ভানু ভূষণ খাটুয়া,বিশিষ্ট সাঁওতালি সাহিত্যিক ও অধ্যাপক শ্যাম,সি, টুডু,সাঁওতালী কবি সুরেন্দ্র নাথ হেমব্রম, মেদিনীপুর কলেজের অধ্যাপক সুজিত দে,শিক্ষক সৌভিক বাঁকুড়া,ঝাড়গ্রাম মেডিকেল কলেজ ডাক্তার দুর্লভ চন্দ্র মান্ডি,ডাক্তার অনিল কুমার মুর্মু,ডাক্তার জয়ন্ত মুর্মু,খড়গপুর রেল হসপিটাল,ডাক্তার দেবাশীষ বেরা,কাব্য ও কলার অধ্যক্ষ ও কর্ণধার চিত্তরঞ্জন দাস,ডাক্তার অজিত মান্ডি,ডাক্তার সিতাংশু শেখর কুমার,ডাক্তার মৃণাল রানা সহ অন্যন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

যদিও এই দিন এক সাক্ষাৎকারে তোর্সা জানায় আগামী দিনের সে লিখেই যেতে চাই এই ধরনের বই।তবে বড় হয়ে ইচ্ছে রয়েছে ডাক্তার হওয়ার।অন্যদিকে তোর্সার মা পদ্মা মুর্মু বলেন আমরা সব রকম ভাবে মেয়ের পাশে রয়েছি।তবে মেয়ে যে একটা গোটা বই লিখে দিতে পারবে এই অভিজ্ঞতা আমাদের ছিল না।এই বই আগামীদিনে সব জায়গায় পাওয়া যাবে।


Share

dnews.in