নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
বিপ্লবী স্মৃতি বিজড়িত এবং ইংরেজ আমলের মেদিনী পুর পৌরসভার সিআইসির দায়িত্ব পেয়ে ঢেলে সাজাচ্ছেন কর্নেলগোলার বাসিন্দা মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র সৌরভ বসু।দু বছরে প্রায় পঞ্চাশ কোটির কাজ করে তিনি তাক লাগিয়েছেন।ইচ্ছে রয়েছে সকলের প্রচেষ্টায় মেদিনীপুর কে ঢেলে সাজানোর।তবে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে মা হিসেবেই মানেন।
সালটা হবে ৯৮ সাল,সে সময়েই ইলেভেনে পড়েন বর্তমান ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিপ্লব বসু তথা সৌরভ বসু। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই মানুষের সাহায্য করার একান্ত প্রচেষ্টায় শুরু হলো রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করা।সেই সময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের একনিষ্ঠ নেতা মহম্মদ রফিক।যা আবার লাল দুর্গ কেশপুরের সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় তিনি প্রচার করছেন।টিভিতে দেখে পেপারে পড়ে উদ্বুদ্ধ হন এবং রাজনীতিতে নেমে পড়ে কর্নেল গোলার এই একাদশ শ্রেণির ছাত্র।এরপর সময় যত কেটেছে ততই তৃণমূল কংগ্রেসের একান্ত সৈনিক হয়ে উঠেছে।এরই সঙ্গে মানুষকে সাহায্য করার একান্ত প্রবণতা আরোও বেড়েছে।অবশেষে প্রাপ্তি ২০০৭ সালে শহরের যুব সভাপতি,তাও আবার তৃণমূল কংগ্রেসের।লড়াই চালিয়েছেন মানুষের পাশে থেকেছেন।সেই সময় শাসক দল বামেরা আর সেই বামেদের সন্ত্রাস থেকে তৃণমূল কর্মীদের বাঁচাতে তিনি উঠে পড়ে লেগেছেন।এক ও একাধিক লড়াই চালিয়ে গেছেন কখনো রাস্তায় কখনো আবার থানার টেবিল চাপড়ে।পার্টির ভরাডুবির সময়ে ছেড়ে যান নি বরং জীবন দিয়ে লড়াই করে তিনি এই তৃণমূল দলের সংগঠন বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন।
শুধু রাজনৈতিক কারণেই নয় রাজনৈতিক ঊর্ধ্বে তিনি ওয়ার্ডের মানুষ এবং শহরের মানুষকে সাহায্য করার জন্য সর্বদাই চেষ্টা করে গেছেন।রাতে ভিতে, দুর্ঘটনায় অথবা কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফোন করলেই নিজে সশরীরে হাজির হয়েছেন উদ্ধার কাজে।সামান্যটুকু সঞ্চয় এর টাকা দিয়ে তিনি যেমন চাল ডাল তুলে দিয়েছেন তেমনি পাশে থেকে বিপদ উত্তরে দিয়েছেন এই বিপ্লব বসু।এরপর ২০১১ সালে দল ক্ষমতায় আসার পর তিনি পদ হারিয়েছেন,সেই সময় জেলা যুব তৃণমূলের দায়িত্বে রয়েছেন তারই বন্ধু প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী।কিন্তু হাল ছাড়েননি।তৎকালীন সময়ে মুকুল রায়ের আদর্শে দীক্ষিত হয়েই তিনি এগিয়ে গেছেন মানুষের দলের সংগঠন বাড়াতে।দল যখনই মনে করেছে তিনি দলের হয়ে লড়াই করেছেন তবে নিজেকে জাহির করে নয়।এরপর ২০১৩ সালে পৌরসভা নির্বাচনে দলের নির্দেশে নিজের টিকিট না নিয়ে বরং তার জায়গায় তিনি অনিল চন্দ্র দলবেরার হয়ে প্রচার করে রীতিমতো মেদিনীপুর পৌরসভায় সর্বোচ্চ ১৯৮০ ভোটের লিড দিয়ে জিতিয়েছেন ওয়ার্ড কে।কিন্তু জেতার পর সঙ্গ দেননি কাউন্সিলর অনিল চন্দ্র দলবেরা বরং গোষ্ঠী তৈরি করে তাকেই সাইড করে দিয়েছেন।
এরপর যত দিন কেটেছে তত তিনি পার্টির প্রতি সংগঠন মজবুত করার ইচ্ছে আরো বেড়েছে।মেদিনীপুরে সভা সমিতি মিটিং মিছিল বা ভোটের প্রচারে এগিয়ে এসেছেন এই বিপ্লব বসু।এরপর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর বিধানসভায় বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সিট দখল করেছে তৃণমূল বিধায়িকা হয়েছেন জুন মালিয়া।তার হয়েও তিনি আপ্রাণ জীবনপন দিয়ে লড়াই করেছেন এবং জিতিয়ে এনেছেন। ২০২২ সালে তাকে দল টিকিট দেয় অবশেষে এই ৯ নং ওয়ার্ডের জন্য।তিনি প্রচার শুরু করেন ওয়ার্ডের মানুষের জন্য।এতদিন পাশে থাকার সুবাদে তার কাজকর্ম দেখে মানুষ খুশিও হয়।এই ভোটে তারই প্রতিদ্বন্দ্বী বাম ও কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী অনয় মাইতি সঙ্গে তিনি জোর টক্করে ৩৮৮ ভোটে পরাজিত করেন।তবে লড়াইটা যে খুব সহজ ছিল না তাও তিনি অবশ্য মেনে নিয়েছেন।এরপর মেদিনীপুরে পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান সৌমেন খান।আর তার কাজে খুশি হয়ে সিআইসির(পূর্ত)দায়িত্ব দিয়েছেন মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান। তবে দায়িত্ব পেয়ে তিনি বসে থাকেন নি।দিনরাত এক করে কাজ করে গেছেন মেদিনীপুর পৌরসভার জন্য।
মেদিনীপুর পৌরসভার ২৫ টি ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট উন্নয়ন,ভাঙ্গা রাস্তা সংস্কার,জমে থাকা ময়লা সরিয়ে ড্রেন পরিষ্কার,নতুন ড্রেন তৈরি করার পাশাপাশি ওয়ার্ডে অন্ধকার সরিয়ে আলোর ব্যবস্থা করা,বাতিস্তম্ভ লাগানো সহ বিভিন্ন কাজে তিনি তদারকি করেছেন।ওয়ার্ডের জন্য তিনি কাজ করে ফেলেছেন প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা এই দু বছরে।সেই কাজ গুলির মধ্যে অন্যতম হলো রাস্তাঘাট,ড্রেন সংস্কারের সঙ্গে তিনি বিভিন্ন পুকুরের ঘাট বাঁধিয়ে দিয়ে কংক্রিট করেছেন।এরই সঙ্গে মন্দির,মসজিদ সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।এই মুহূর্তে তিনি মেদিনীপুর পৌরসভায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাজ করে ফেলেছেন।তার ইচ্ছে রয়েছে আগামী দিনে আরো ঢেলে সাজানোর মেদিনীপুর কে।অবশ্যই চব্বিশ সালে মেদিনীপুর লোকসভা ক্ষেত্রে মেদিনীপুরের বিধায়িকা জুন মালিয়া প্রার্থী হওয়ায় তাকে কনভেনার করা হয়। কনভেনার হয়ে তিনি একাধিক মিটিং,মিছিল,প্রচার, মানুষকে জড়ো করা,তৃণমূলের হয়ে প্রচার করা তৃণমূলকে বিশেষভাবে জয়ী করার প্রচেষ্টা তিনি চালিয়ে গেছেন।তিনি আর কেউ নন বছর ৪৩ এর কর্ণেলগোলার ভূমিপুত্র সৌরভ বসু।
তবে এই দিন তিনি ডি নিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান,”দলের প্রতি একান্ত অনুগত সৈনিক আমি।দল আমাকে যা কাজ দেবে আমি তাই করব।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে মা হিসেবে আমি মানি এবং তাকে শ্রদ্ধা করি এরই সঙ্গে সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইকে আমার তরফ থেকে স্যালুট জানাই।তাই তাদের আশীর্বাদ নিয়ে মেদিনীপুর পৌরসভার উন্নয়নকল্পে ২৫টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং চেয়ারম্যান সহ সকলকে নিয়ে মেদিনীপুর উন্নয়নকল্পে বিশেষ ভূমিকা আমি নেব এবং মেদিনীপুর কে ঢেলে সাজানোর ইচ্ছে রয়েছে আমার।