নিজস্ব প্রতিনিধি,খড়গপুর:
এতদিন ধরে বৈজ্ঞানিকরা তথ্য দিয়ে আসছিলেন ওজোন স্তরে ফুটো হয়ে গিয়েছে আর তাতে ক্ষতি হচ্ছে পৃথিবীর মানুষের কিন্তু সেইসব সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে যুগান্তকারী তথ্য দিলেও খড়গপুর আইআইটি।সম্প্রতি খড়্গপুর IIT এর সমুদ্র, নদী, বায়ুমন্ডল সম্বন্ধীয় ‘কোরাল’ (CORAL) বিভাগের অধ্যাপক জয়নারায়নণ কুট্টিপুরথ নেতৃত্বে একদল আন্তর্জাতিক গবেষক “সাম্প্রতিক দশক গুলিতে গ্রীষ্মমন্ডলীয় স্ট্রাটোসস্ফিয়ারে কোনও গুরুতর ওজন হ্রাস নেই” (No Severe Ozone Depletion in the Tropical Stratosphere in Recent Decades) শিরোনামে যে গবেষণা চালান তাতেই উঠে এসেছে এমন যুগান্তকারী তথ্য।
মূলত এতদিন ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এবং সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছিলেন পৃথিবীর মানুষকে রক্ষাকারী ওজোন স্তর সব ফুটো হতে শুরু করেছে। এবং সেই ফুটো দিয়ে নির্গত হচ্ছে ক্ষতিকারক রশ্মি। যার দ্বারা সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে পৃথিবীর। কিন্তু সেই সম্ভাবনা এবং দাবীকে উড়িয়ে দিয়েছে খড়গপুর এর আই টির একদল অধ্যাপক। তাদের গবেষণা অনুযায়ী বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তরে কোনো ফুটো নেই (No Severe Ozone Depletion in the tropical stratosphere) তা অক্ষত অবস্থায় আছে।এর থেকে মানুষের শরীরে কোনও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও নেই (No health threat)।উল্লেখ্য যে, পূর্ববর্তী পাঁচ দশক ধরে অর্থাৎ ১৯৮০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গবেষণায় যে সমস্ত তথ্য উঠে এসেছে,তাতে গ্রীষ্মমন্ডলীয় বা ক্রান্তীয় বলয়ে ওজন স্তরে ফুটো থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। তা ‘ভুল’ বা ‘অসম্পূর্ণ’ গবেষণা বলেই দাবি করেছেন অধ্যাপক জয়নারায়নণ কুট্টিপুরথের নেতৃত্বাধীন গবেষকরা।তাদের দাবি এর আগের গবেষণা করা হয়েছিল ভুপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমন্ডলের ১১ কিলোমিটারের মধ্যে। যাতে সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়।তাঁদের গবেষণা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৫-২০ কিলোমিটার উচ্চতায়।এতে তাঁরা যেমন ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে সূর্যের ‘অতিবেগুনী রশ্মি’র বিকিরণ উপগ্রহ থেকে লক্ষ্য করেছেন।ঠিক তেমনই স্ট্র্যাটোসস্ফিয়ার বা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের দ্বিতীয় নিম্নস্তরে এর ক্ষতিকর প্রভাবও খতিয়ে দেখতে পেরেছেন। ৩০ ডিগ্রি সাউথ ৩০ ডিগ্রি নর্থ।এই প্রক্রিয়ায় উপগ্রহ ক্যামেরায় বায়ুমন্ডলে ওজন স্তরের অবক্ষয় তাঁরা লক্ষ্য করেছেন।
তারপরই সিদ্ধান্তে এসেছেন ওজোন স্তর ‘অক্ষত’ থাকার বিষয়টিতে।তারা এও বলেন ওজোন স্তরের গড় ওজন ভ্যালু ২৬০ ডবসন ইউনিট (ডি ইউ)।বর্তমানে তা রয়েছে ২২০ ডিইউ।যা ঠিকঠাক বলেই মনে করেছন গবেষকরা।এর ফলে পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্র যেমন প্রাণী, গাছপালা থেকে মানুষের ভয়ের কিছু নেই বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। যা যুগান্তকারী আবিষ্কার বলেই মনে করছে গবেষকরা।