নিজস্ব প্রতিনিধি,ভাদুতলা:
দীর্ঘ বছর ধরে পাহাড়ের চূড়ার মত ডাই করে রাখা হচ্ছে ছাই আর বাতাস লাগলে তা উড়ে নষ্ট হচ্ছে গ্রামবাসী দের জীবন জীবিকা।একদিকে যেমন শারীরিক অসুস্থতা নানা রকম রোগের প্রাদুর্ভাব সেইসঙ্গে ফসলের ব্যাপক পরিমাণে ক্ষতি।বাধ্য হয়ে প্রশাসনিক দপ্তরে ঘুরছেন এলাকার পাঁচ সাতটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষজন।দাবি একটাই,অবিলম্বে এই ওয়েল মিল বন্ধ করুক বা ছাই অন্য কোথাও ফেলুক এই মালিক কর্তৃপক্ষ।
বায়ু দূষণে পশ্চিম মেদিনীপুরে।বিশেষ করে এই বায়ু দূষণের মাত্রা বেশি যোগ হয়েছে খড়গপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেল্টে।একদিকে টাটা রয়েছে অন্যদিকে রেশমি মেটালিক এছাড়াও ছোট ছোট শিল্প কারখানায় রীতিমতো বায়ু দূষণ ঘটেই চলছে।যা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে অভিযোগ জানাচ্ছেন এলাকার মানুষজন।এবার বায়ু দূষণে নতুন মাত্রা যোগ হলো শালবনী।ঘটনা ক্রমে বলতে গেলে বলা যায়,শালবনী থানার কুতুরিয়াতে রয়েছে একটি জঙ্গলমহল এগ্রো অয়েল প্রাইভেট লিমিটেড নামে মিল।যে মিলে মানুষের খাবার তেলের তৈরি হওয়ার পর ফেলে দেওয়া মাটি থেকে অয়েল তৈরি করছে এখানকার কোম্পানি।যে তেল কাজে লাগে মূলত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি চালাতে এবং মেসিনারি চালাতে। এই তেল তৈরি করলে এর থেকে কোটি কোটি টন ছাই উৎপন্ন হয়।আর সেই ছাই খেলতে ফেলতে রীতিমত পাহাড় চূড়া করে নিয়েছে এই কোম্পানি।এক সময় নিজের মিলের মধ্যেই ছাই ফেলত তারা কিন্তু পর্যায়ক্রমে কাজ চলার ফলে,সেই ছাই বাইরে ফেলছে।এর ফলে একদিকে যেমন এখানকার শাল,শিমুল,পলাশ সহ বড় বড় গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে তেমনি ছায়ের পাহাড়ে চূড়ায় হারিয়েছে এলাকার বাস্তু তন্ত্র।
এখানে কুতুরিয়া,ধান্যশোল, সোনা কড়া,কড়াদানা সহ একাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের বসবাস এখানে।এছাড়া প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে কলেজে স্কুলের পড়ুয়ারা।কিন্তু এই ছাই নিয়ে অতিষ্ঠ তারা।একদিকে যেমন খাবারের জলে,ঘরের ছাদ বাড়ির উঠোনে ছাই ভর্তি অন্যদিকে এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় নাকে মুখে চুলে ভর্তি হয়ে যায় এই ছাই। আর তাতেই আতঙ্কগ্রস্থ এলাকার মানুষজন।তারা চান এই কোম্পানির সেই ছাই যেন তাদের এক্তিয়ার মধ্যে এবং নির্দিষ্ট নিয়ম বিধি অনুযায়ী ফেলে।যাতে সেই ছাই গ্রামের মানুষের উপর উড়ে না আসে এবং জনজীবন নষ্ট না করে।যদিও এই নিয়ে তারা একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছে।কিন্তু সমস্যা সমস্যায় থেকে গেছে,নিস্তার মেলেনি এই বায়ু দূষণ থেকে।পাশাপাশি জমিতে ফসল নষ্ট হচ্ছে ছাইয়ের উড়ে আসার কারণে।যার জন্য তিতিবিরক্ত আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা দ্বারস্থ হয়েছেন প্রশাসন এবং সংবাদ মাধ্যমের কাছে।
এ বিষয়ে গ্রামবাসীরা বলেন, আমরা আর থাকতে পারছি না।আমরা বাঁচতে চাই।আমরা 2021 সাল থেকে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি বিভিন্ন দপ্তরে।কিন্তু তাতেও কোন সূরাহা হচ্ছে না।গ্রামের বহু লোক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।আমরা বাধ্য হয়ে এবার রাস্তায় নামবো। তাতেও যদি সমস্যার সমাধান হয় না হয় তাহলে আমাদের বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামতে হবে।
যদিও এ বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী এক বিবৃতিতে বলেন বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আমরা এই বিষয়ে খোঁজ খবর চালাচ্ছি।