নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝাড়গ্রাম:
১২ বছরের নাবালিকাকে হাত ও মুখ বেঁধে বাড়ির ছাদে ধর্ষণ।এই পৈশাচিক ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা করার অভিযোগ নাবালিকাকে।এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত যুবককে ২ বছরের মধ্যেই কুড়ি বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ।এই নির্দেশ দিল ঝাড়গ্রামের বিশেষ পকসো আদালতঝাড়গ্রাম জেলা ও দায়রা আদালত।
ঘটনা ক্রমে জানা যায় ওই সাজাপ্রাপ্ত যুবকের নাম রবীন্দ্র সরেন (২১),বাড়ি নয়াগ্রাম থানা এলাকায়।ঘটনা ক্রম নয়াগ্রাম থানা এলাকায় ১২ বছরের এক নাবালিকাকে প্রতিবেশী যুবক রবীন্দ্র সরেন এর মা সাবান কেনার জন্য দোকানে পাঠায়।ওই নাবালিকা সাবান কিনে রবীন্দ্রদের বাড়িতে ফিরলে বাড়িতে তখন রবীন্দ্র এর মা ছিল না।সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই রবীন্দ্র নামে যুবক নাবালিকাকে বাড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে হাত ও মুখ বেঁধে বাড়ির ছাদে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।বিষয়টি কাউকে জানালে নাবালিকাকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় রবীন্দ্র।সেইমতো ওই নাবালিকা ঘটনার পর বিষয়টি কাউকেই জানায়নি।ঘটনার একমাস পরে নাবালিকা অসুস্থ হয়ে গেলে পরিবারের লোকজন তাকে নয়াগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।তারপরেই নাবালিকা বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের কে জানাই যে তাকে তাদের প্রতিবেশী রবীন্দ্র সরেন ধর্ষণ করেছে।
গত ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের ১৭ তারিখ নাবালিকার বাবা নয়াগ্রাম থানায় এই ঘটনা প্রসঙ্গে লিখিত অভিযোগ জানায়।এই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নয়াগ্রাম থানার পুলিশ রবীন্দ্র সরেন কে গ্রেফতার করে।নয়াগ্রাম থানার পুলিশ ধর্ষণ এবং পকসো ধারায় মামলা রুজু করে ঝাড়গ্রাম আদালতে পেশ করলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।সেই ঘটনার ২ মাসের মাথায় আদালতে চার্জশিট পেশ করে নয়াগ্রাম থানার পুলিশ । ২০২২ সালের জুন মাস থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর গতকাল শুক্রবার রবীন্দ্র সরেন কে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত।
ঝাড়গ্রাম জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত রায় বলেন,”১২ বছরের নাবালিকাকে হাত ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে অন্তসত্ত্বা করার ঘটনায় ঝাড়গ্রামের বিশেষ পকসো আদালত ঝাড়গ্রাম জেলা ও দায়রা আদালত দ্বিতীয় এর বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় দোষী সাব্যস্ত রবীন্দ্র সরেন কে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন।সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আদায় হলে নাবালিকাকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।এছাড়াও ওই নাবালিকাকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন, “ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের ট্রায়েল মনিটারিং সেল তারা দ্রুততা এবং গুরুত্ব সহকারে নারী নির্যাতন এবং নারী পাচার সংক্রান্ত কেসের বিচার প্রক্রিয়ার যাতে দ্রুত ত্বরান্বিত করা যায় তার জন্য নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছে।বিভিন্ন মামলার সাক্ষীদেরকে সঠিক সময়ে হাজির করা তাদের সত্য উদঘাটন করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।এর আগেও আমাদের অনেক কেসে সাজা হয়েছে।আগামী দিনও বিভিন্ন মামলা গুলির যাতে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া যায় তার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।