নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝাড়গ্রাম :
এ এক বিরল ঘটনা জঙ্গল মহলে।স্বামী খুনে বন্দী মহিলার শিশু কন্যা পেল জন্ম সার্টিফিকেট।ঝাড়গ্রামের বিশেষ সংশোধনাগারে বন্দী মহিলার শিশুকন্যার জন্ম সার্টিফিকেট এইদিন জেল সুপারের হাতে তুলে দিলেন DLSA-র বিচারক।এক বছর পরম প্রাপ্তি। এই ঘটনায় খুশির হাওয়া জঙ্গলমহল ঝাড়গ্রামে।
জন্মদিনে বড় উপহার পেল শিশুকন্যা,জন্ম সার্টিফিকেট জেল সুপারের হাতে তুলে দিলেন বিচারক!এইরকমই এক ঘটনা ঝাড়গ্রামে।ঘটনা ক্রমে জানা যায় গত ২০২২ সালের ১ জুন থেকে জামবনি ব্লকের গিধনির এক গৃহবধূ ও তাঁর স্বামী ঝাড়গ্রাম থানার একটি খুনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলে বন্দি হয়।জেলে বন্দি হওয়ার আগের থেকেই মহিলা গর্ভবতী ছিলেন।তারপর ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারি ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তিনি এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।কিন্তু জেলে বন্দি থাকার কারণে কন্যা সন্তানের জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করতে পারছিলেন না।হাসপাতালে জন্ম নেওয়া শিশুর জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করতে গেলে মায়ের আঁধার বা ভোটার বা রেশন কার্ডের মধ্যে যে কোন একটির প্রতিলিপি প্রয়োজন।এছাড়াও একটি মোবাইল নম্বর দরকার।যেহেতু মহিলা জেলে বন্দি রয়েছেন তাই তার নিজের কাছে কোনো কাগজ নেই।
যার ফলে বাচ্চার জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করতে সমস্যা হচ্ছিল।বিষয়টি গত ৯ নভেম্বর লিখিত আকারে ঝাড়গ্রাম বিশেষ সংশোধনাগারের সুপারের মাধ্যমে ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুক্তি সরকারকে জানায় জেলবন্দি ওই মহিলা।এরপর জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব সমস্ত কাগজপত্র দিয়ে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপারকে কন্যা সন্তানের জন্ম সার্টিফিকেট তৈরির নির্দেশ দেন।হাসপাতাল থেকে জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করে আদালতের হাতে তুলে দেওয়া হয় যা কিনা বিরল ঘটনা বলে জানাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম বিশেষ সংশোধনাগারের সুপার রাজেশকুমার মণ্ডলের হাতে এক বছরের কন্যার জন্ম সার্টিফিকেট তুলে দেন ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুক্তি সরকার।এইদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রাম জেলা আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মধুরিমা মণ্ডল,ঝাড়গ্রাম আদালতের সিভিল জাজ জুনিয়র ডিভিশন শ্রুতি সিংহ।বিচারকরা বাচ্চার হাতে নতুন শীতের পোশাকও তুলে দেন।
এ প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুক্তি সরকার বলেন,”ঝাড়গ্রাম এর বিশেষ সংশোধনাগারে এক মহিলা বন্দীর কন্যা সন্তান হয়েছিল কিন্তু এক বছর ধরে তার জন্ম সার্টিফিকেট ছিল না।জেল সুপারের মাধ্যমে আমাদেরকে বিষয়টি জানালে আমরা হাসপাতালে সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই কন্যা সন্তানের জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করে জেল সুপারের হাতে তুলে দেওয়া হয়”।