নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
মকর সংক্রান্তির বিশেষ আকর্ষণ মেদিনীপুরের ঘুড়ি আর এই ঘুড়ি উড়ানোর ট্র্যাডিশন মেনেই চলছে এখন শহরে।এরই সঙ্গে যোগ হয়েছে মাইক্রোফোনের আওয়াজ।ঘুড়ি কেটে গেলে আওয়াজ উঠছে ভো কাট্টা। যদিও মোবাইলে আসক্ত বর্তমান প্রজন্ম তবুও ট্রাডিশনকে বজায় রেখেছে পুরনো মানুষজন।
জঙ্গলমহল অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনীপুরে এই পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে চলে ঘুড়ি উড়ানোর ধুম,ঠিক উৎসবের আকারে।দীর্ঘ বছর ধরে এই ট্রাডিশন চলে আসছে কিন্তু বর্তমানে সেই ঘুড়ি উড়ানোতে ও ছেদ পড়েছে।কেননা এই নতুন প্রজন্ম যারা উঠছে তারা এখন আর ঘুড়ি উড়ানো নয় বরং মোবাইলে আসক্ত।এক সময় এই ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য খাওয়া দাওয়া ভুলে এই মকর সংক্রান্তির দুদিন ভোরবেলা থেকে উঠেই ছাদে চলত সারাদিন ব্যাপী ঘুড়ি উড়ানো।ছোট থেকে বড়,এমন কি ঘরের গৃহবধুরাও হাত লাগাতো এই ঘুড়ি উড়ানোতে। কিন্তু সেই সব দিন এখন ইতিহাস বরং এখন গতানুগতিক এই ঘুড়ি উড়িয়ে পথ এড়িয়েছে মেদিনীপুর বাসি।যদিও এই দিন মেদিনীপুর শহরের বক্সিবাজার সংলগ্ন এলাকায় ধরা পড়লো সেরকমই চিত্র।বেশ কয়েকজন যুবক,কচিকাঁচা তারা ঘুড়ি উড়াচ্ছে রীতিমতো ছাদে লাটাই নিয়ে।
এরই সঙ্গে তারা ব্যবহার করেছেন মাইক্রোফোন। যখনই ঘুড়ি কেটে যাচ্ছে তারকেশ্বরে চেঁচিয়ে বলছেন ভো কাট্টা।শুধু একজন নয়, একাধিক জন লাটাই হাতে নিয়ে এখন আর মাঞ্জা সুতোর পরিবর্তে চাইনিজ সুতো দিয়ে ওড়াচ্ছেন সেই ঘুড়ি।এক রঙা,দু রঙা আর সাদা কাগজের ঘুড়ির সঙ্গে শোভা পাচ্ছে প্লাস্টিকের ঘুড়ি।অনেকে এসেছেন যদিও তিনি কাজের সুবাদে বাইরে থাকেন। তারাও এসেছেন এই দুদিন পুরনো দিনের ফেলে আসা দিনগুলি উপভোগ করার জন্য।এই দিন প্রয়োজন মতো হাওয়া বাতাস না থাকায় অনেকটাই ক্ষোভ জন্মেছে ঘুড়ি প্রেমী মানুষের মধ্যে।
এই বিষয়ে যুবক পল্লব রায় বলেন সেই ছোট থেকেই মাঞ্জা দেওয়া সুতো নিয়ে ঘুড়ি উড়িয়েছে আমরা কিন্তু এখন যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে হাজির হয়েছে চাইনিজ সুতো।যদিও এখন আর বাচ্চারা ঘুড়ি উড়ায় না।একটাই কারণ মোবাইল।তারা মোবাইলে এখন বন্দি।আমরা ট্রাডিশন মেনে এখনও ঘুড়ি উড়াই,ভালো লাগে। অন্যদিকে বিভাস রায় বলেন ছোটবেলা কেটে গেছে ঘুড়ি উড়ানোর যুগে।এরপর কাজের সূত্রের বাইরে থাকি কিন্তু মকর সংক্রান্তি এলে মনে পড়ে এবং ছুটে আসি এই দুদিন ঘুড়ি উড়ানোটা উপভোগ করি।কমে গেছে বলবো না,তবে আগের মতন আর নেই।তবে আমরা এখনো আগের মতই ঘুড়ি উড়াই বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে।