নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
জলের অপর নাম জীবন।আর পানীয় জল হলো কোনো প্রাণীর স্বাস্থ্যের প্রথম ও প্রধান উপাদান।বর্তমানে জল দূষণ এক মারাত্মক সমস্যা।দূষিত জল থেকে প্রথম নানান রোগ ব্যাধির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।টাইফয়েড, কলেরা, হেপাটাইটিস- এ, হেপাটাইটিস- ই ইত্যাদি জল বাহিত রোগ।দূষিত জল পান এতটাই মারাত্মক যে,প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটছে।তাই বিশুদ্ধ পানীয় জল পান করা প্রয়োজন।জল বিশুদ্ধ না দূষিত তা জানার একমাত্র উপায় হলো জল পরীক্ষা বা পর্যবেক্ষণ।আর এই উদ্দেশ্যে এইদিন মেদিনীপুর সদরের অন্তর্গত এলাহিয়া হাই মাদ্রাসা (উঃ মাঃ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পানীয় জল পরীক্ষা করার জন্য উদ্যোগ নেয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ,পশ্চিম মেদিনীপুর।
মূলত সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ ভ্রাম্যমান জল পরীক্ষাগারের একটি বাস মাদ্রাসায় নিয়ে আসেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের এক আধিকারিক।নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মোট ২৫ জন পড়ুয়াদের নিয়ে তিনি জল পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে হাতেনাতে পর্যবেক্ষণ করেন।মাদ্রাসায় ব্যবহৃত পানীয় জল সংগ্রহ করে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে ঐ জলের কাঠিন্যতা, আয়রনের উপস্থিতি, পিএইচ ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা দ্বারা প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মাদ্রাসার পানীয় জলের কাঠিন্যতার মাত্রা ১১৯, আয়রনের মান- ০.০২, ম্যাঙ্গানিজের মান ০-০.১, টিডিএসের মাত্রা ১৫৭, স্বচ্ছতার মাত্রা- ২.৪৭ এবং পিএইচ এর মান ৬.৭৫. বর্তমানে রাজ্যের কোন কোন স্থানে ভূগর্ভস্থ জলে আয়রনের মাত্রা, কাঠিন্যতা ও ঘোলাটে জলের পরিমাণ বেশি ও কম রয়েছে সেই সকল স্থান সম্পর্কে পড়ুয়াদের ধারণা প্রদান করেন। উল্লেখ্য গত সপ্তাহে উক্ত বিভাগ আয়োজিত একটি পানীয় জলের অপচয় ও অপব্যয় সম্পর্কে মাদ্রাসায় সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল।এইদিন হাতেনাতে জলের পরীক্ষা দেখে অত্যন্ত খুশি পড়ুয়ারা। মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী সেখ সাইনাজ এর মতে- ‘বইতে আমরা জলের পিএইচ ও আয়রন সম্পর্কে পড়েছি।
ওটার আজকে দেখলাম ও জানলাম জলের পিএইচ কিভাবে মাপা হয়। এই কর্মসূচিতে মাদ্রাসার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সেখ নুর আলম সহ শিক্ষক ইয়াকুব আলি,নরসিংহ দাস,চন্ডীচরণ রাউৎ প্রমুখ। উল্লেখ্য প্রধান শিক্ষক নূর আলম বলেন- ‘মাদ্রাসার পানির জল পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ কে জানিয়ে ছিলাম।এইদিন তারা এসে জল পরীক্ষা করলেন এবং পড়ুয়াদের জল পরীক্ষার বিষয়টি হাতেনাতে দেখলাম।আমরাও জানলাম মাদ্রাসায় ব্যবহৃত পানীয় জল বিশুদ্ধ ও নিরাপদ।’ভূগোল বিষয়ের সহ শিক্ষক নরসিংহ দাস বলেন – ‘শ্রেণিকক্ষে আমরা জল দূষণ ও প্রতিকার বিষয়ক পাঠদান করে থাকি।আজ জলের কাঠিন্যতা, জলের পিএইচ,জলে আয়রনের মাত্রা ইত্যাদি বিষয়ের মান নির্ধারণ সম্পর্কে পড়ুয়ারা চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণ করলো।এমন উদ্যোগ পড়ুয়াদের উৎসাহিত করবে।’প্রায় দু’ ঘন্টা ধরে চলে এদিনের এই পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত কর্মসূচি।