Mass Marriage: সন্দেশখালীর অশান্ত পরিবেশের মধ্যেই রাজ্যে গণবিবাহ!উদ্যোক্তা কয়েকজন উদ্যমী যুবকের আম্মা সোসাইটি

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:

লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে গত মাস দুয়েক ধরেই উত্তপ্ত পরিবেশ রয়েছে রাজ্যের অন্যতম সন্দেশখালি। প্রতিদিনই অশান্তির খবর আসছে।এরই মধ্যে অন্যদিকে জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের পিড়াকাটা থানার সাতপাটি এলাকায় গণবিবাহের আসর বসালো,আম্মা সোসাইটি।মূলত কয়েকজন উদ্যমী শিক্ষিত যুবক “আম্মাজনসেবা পরিষদীয় ওয়েলফেয়ার সোসাইটি”নাম দিয়ে একটি সোসাইটি খুলে ফেলেন।যেখানে মূল উদ্দেশ্য হলো বিনা পয়সায় স্কুলছুট পড়ুয়াদের পড়াশোনা,দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো সেইসঙ্গে দুস্থ পরিবারের যারা বিবাহ দিতে পারছেন না তাদের আর্থিক সাহায্য এবং দেনা পাওনা যৌতুক দিয়ে একসঙ্গে গণবিবাহের আসর বসানো।

এই দিন এই জঙ্গলমহলের সাতপাটি এলাকায় এই গণবিবাহের আসর বসলো।যেখানে প্রায় সাত জোড়া পাত্র পাত্রী চার হাত হল একসাথে।এই গণবিবাহে পাত্র-পাত্রীদের উৎসাহ এবং আশীর্বাদ করতে উপস্থিত হয়েছিলেন মেদিনীপুরের বিধায়িকা জুন মালিয়া সহ বিশিষ্ট নেতৃত্ব।মূলত কয়েক হাজার গ্রামবাসীর মধ্য দিয়েই এই গণবিবাহ অনুষ্ঠিত হয় সাতপাটির মাঠে। আর তাতেই বিয়ে হওয়ার পরেই যৌতুক পেয়ে খুশি পাত্র-পাত্রীরা।অন্যদিকে বিবাহ অনুষ্ঠানের পর পাত পেড়ে খেলেও প্রায় বিশ হাজার মানুষজন।মেনুতে ছিল ভাত,ডাল,মুরগি মাংস,চাটনি ও মিষ্টি।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত কয়েকদিন ধরেই এই “আম্মা সোসাইটির ও সাতপাটি নেতাজি স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে এখানে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছিল।যার মধ্যে ছিল এখানকার বিভিন্ন শিল্পীদের দিয়ে আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান,মেলা,রাম্প শোএবং শেষে গণবিবাহের আসর। কয়েকটি গ্রামের মানুষজন এসে এতে যোগদান করেন এবং উৎসাহ প্রদান করেন।এই গণবিবাহের উদ্বোধক ছিলেন IIMC ডিরেক্টর ডঃ সুজিত কুমার ব্রহ্মচারী, উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর শৈবাল দত্ত,চিপ এডভাইজার এ ডি বর্মন,শাশ্বতী শাসমল সভাপতি দিলীপ কুমার পান,সম্পাদক নবীন কুমার ঘোষ, আহ্বায়ক রাকেশ দাস,মানস মাইতি,অর্ণব দাস, সুমন জানা সহ বিশিষ্ট জনেরা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই এলাকা একসময় বারুদের গন্ধে ভরে উঠেছিল,ছিল মাওবাদীদের আনাগোনা।দফায় দফায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল।উৎপাত ছিল এই মাও নামক নকশাল বাদীদের।এরপর তাদের দমন করতে তখন ছিল খালি কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভারী বুটের আওয়াজ আর গুলির শব্দ।সবসময় বারুদের গন্ধে ভরপুর হয়ে উঠেছিল জঙ্গলমহল।ভয়ে গ্রামের যুবকরা থাকতই না বাড়িতে পাড়ি দিয়েছিল ভিন রাজ্যে।অন্যদিকে বয়স্ক বা ছোট মহিলা,শিশুরা যারা থাকতো তারা সকাল সন্ধ্যাই দরজা লাগিয়ে ভিতরে বসে থাকতো।স্কুল কলেজ সব বন্ধ ছিল, পড়াশোনা উঠেছিল লাটে।ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল একপ্রকার বন্ধের ই মুখে।এইসব কাটিয়ে পরিবর্তন ঘটে এবং এরপর আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এলাকার। হাট-বাজার খুলে,স্কুল কলেজ খুলে মানুষের মধ্যে আনন্দ ফিরে আসে।আর তারপরেই আয়োজন করা হলো এই গণবিবাহের আসর।

এ বিষয়ে আয়োজক মানস মাইতি ও এডি বর্মন বলেন এই অনগ্রসর সম্প্রদায় ভুক্ত মেদিনীপুর সাতপাটি এলাকায় যাদের বিবাহ দেওয়ার সামর্থ্য নেই বা যে বাবা-মায়ের সামর্থ্য কুলোয় না তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এই আমাদের “আম্মা জনসেবা পরিষদীয় ওয়েলফেয়ার সোসাইটি”।আমরা শুধু তাদের বিয়ে দিয়েছি তা নয় বিয়ে দেওয়ার পর তাদের যাবতীয় যৌতুক তাদের দেওয়া হয়েছে।এরই সঙ্গে আগামী দিনে তাদের কোনরকম সমস্যার দেখভালের ক্ষেত্রেও আমাদের সোসাইটি সর্বদা চেষ্টা করবে।আম্মা সোসাইটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় দুস্থ মানুষের পরিবারে পাশে দাঁড়িয়েছে,বিনা পয়সায় পড়াশোনা দিচ্ছে,চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে এবং মানুষের সেবায় নিয়োজিত।


Share

dnews.in