নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
স্কুল এবং কলেজের সামনে ফের নতুন করে হকারের জায়গা দখল নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মেদিনীপুর শহর।যে ঘটনার প্রতিবাদে এবার রাস্তা অবরুদ্ধ করলেন মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃন্দ।হাতে হাত রেখে তারা এদিন অবরোধের সামিল হন এবং এই জবর দখলের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
রাস্তার ধারে ফুটপাত ও জবর দখল সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এর কারণ হিসেবে তিনি যানজট এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়েছিলেন সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে এই মেদিনীপুর ঐতিহ্যশালী বিপ্লবীদের শহর এই কলেজ এবং কলিজিয়েট স্কুলের সামনে ফুটপাত সরানোর উদ্যোগ নিয়েছিল মেদিনীপুর পৌরসভা।তবে উচ্ছেদ নয় দোকান ঘরগুলো কলেজের সামনে থেকে সরিয়ে পাসের গলিতে বসিয়ে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছিল মেদিনীপুর পৌরসভা ও সদর মহকুমা শাসকের পক্ষ থেকে।বেশ কিছুদিন ভালোই চলছিল।ইতিমধ্যে কলেজের এবং স্কুলের সামনের দিকটা রং করে গাছপালা লাগিয়ে ফ্রেন্সিং করে সৌন্দর্য্যয়ন করার কাজ শুরু করেছিল মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) এবং কলিজিয়েট স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ব্যাঘাত ঘটলো এক মাসের মধ্যে।এদিন সকাল থেকে ফের নতুন করে গলি থেকে বের হয়ে হকার দোকানগুলো পুনরায় কলেজে স্কুলের সামনে বসা শুরু করে দেয়।যা নিয়ে নতুন করে গন্ডগোলের সূত্রপাত।হকারদের অভিযোগ এই গলিতে তাদের ব্যবসা চলছে না বসে বসে মার খেতে হচ্ছে তাই বাধ্য হয়ে আমরা এই শহরের রাস্তার ধারে বেরিয়ে এসেছি।
আমরা এখানেই দোকান করবো। যদিও এই ঘটনায় মানতে নারাজ স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।তাদের বক্তব্য কলেজ স্কুলের সামনের সৌন্দর্যায়ন কিছুতেই নষ্ট হতে দেব না।তারই সঙ্গে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা পরীক্ষা এবং প্রতিদিন ঢোকা বেরোনোর মুখে ব্যাপক যানজটে সমস্যায় পড়েন।আর দ্বিতীয়বার আর এই ফুটপাতে দোকানঘর হতে আমরা দেব না।তাই তারা এদিন এরই দাবিতে রাস্তা ঘিরে দাঁড়িয়ে অবরোধে শুরু করেন।যে অবরোধে নেতৃত্ব দেয় মেদিনীপুর (অটোনোমাস)কলেজের প্রিন্সিপাল সত্য রঞ্জন ঘোষ সহ সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ।অন্যদিকে কলিজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হিমানী পড়িয়া সহ স্কুলের ২০-২৫ জন শিক্ষক শিক্ষিকা এসেই অবরোধে সামিল হন।যা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় মেদিনীপুর শহরে।যদিও এদিন এই স্কুল-কলেজের অবরোধের সামিল হন মেদিনীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর এবং খোদ চেয়ারম্যান।তাদেরও বক্তব্য আর নতুন করে কোনোভাবেই হকার বসানো হবে না এই যানজট পূর্ণ এলাকায়।
এই নিয়ে মেদিনীপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সত্য রঞ্জন ঘোষ বলেন,”এই কলেজ বিপ্লবীদের কলেজ। স্বাধীনতার আগেকার সময়ের এই কলেজ ঐতিহ্যশালী অথচ তার সামনে যেভাবে প্রতিদিন দোকান করে হাড় মাংস ফেলে নোংরা করে তারই প্রতিবাদ আমরা জানিয়েছিলাম প্রশাসনে।আমরা কোনভাবে উচ্ছেদ চাইনি বরং তাদের সঙ্গে বসে সমঝোতা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও কথা বলেছিলাম।সেই মতো তারা দোকান ঘর গুলি তুলে নিয়েছিল কিন্তু আজকে সকাল থেকে হঠাৎ তারা আবার নতুন করে দোকান লাগাতে শুরু করে। যার প্রবল আপত্তি রয়েছে আমাদের।আমরা চাই আর কোনভাবে নতুন করে দোকানগুলো বসতে দেওয়া হবে না এই কলেজ চত্বরে।
অন্যদিকে বিপ্লবীদের স্কুল মেদিনীপুর কলেজিয়েট (বালকের) প্রধান শিক্ষিকা হিমানী পড়িয়া বলেন, “আজকে যখন শুনলাম নতুন করে দোকান ঘর গুলি বসছে তখন আমরা দৌড়ে এসেছি কলেজের কাছে, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।আমরা শিক্ষক শিক্ষিকা হয়ে অবরোধে সামিল হতে পারি না কিন্তু এর প্রতিবাদ জানাতেও আমরা পিছুপা হবো না। আমরা চাই নতুন করে এই জবর দখল যাতে না হোক।