Medinipur Hospital: চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেদিনীপুর হাসপাতালে 121 জন রোগী!তড়িঘড়ি গঠিত হল কমিটি,যদিও বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি মেডিকেল কলেজ সুপারের

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:

মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে পরিষেবার পাশাপাশি এবার রোগী উধাও এর ঘটনার অভিযোগ।মূলত পরিষেবা না পেয়ে রাতারাতি রোগী ডিসচার্জ না করে পালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।এক সপ্তাহে রোগী পালানোর ঘটনা প্রায় ১২১ জন। যদিও বিষয়টি নিয়ে চাপানউতোর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে। ফ্যাসিলিটি ম্যানেজারের দাবি এই নিয়ে চারজনের একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তার জন্যই রোগী পালানোর ঘটনা কমছে বলে দাবি করেন তিনি।

ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবার

হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নেই এই ধরনের প্রশ্ন এবং অভিযোগ ওঠা স্বাভাবিক কিন্তু রোগী উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় কিছুটা প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেও মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে।এ রকমই এক ঘটনার মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।তথ্য বলছে গত সাত দিনে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে ১২১ জন রোগী।এর মধ্যে গত সোমবারই নিখোঁজ হয়েছে কুড়ি জন রোগী।এরই সঙ্গে গত সাত দিনে এই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে মোট ১২১ জন। তবে কেন এবং কি কারনে চলে যাচ্ছে রোগী এবং রোগীর আত্মীয়-স্বজনেরা তা জানতেই পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।যার জন্য প্রশ্ন চিহ্ন উঠছে এবার এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে।যদিও হাসপাতাল সূত্রে খবর এই রোগীদের বেশিরভাগটাই ডিসচার্জ হয়ে গিয়েছিল।এছাড়াও বাকি রোগী গুলো ডিসচার্জের মুখে ছিল তাই তারা চলে গিয়ে থাকতে পারে। যদিও এই ওয়ার্ড পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় এই রোগীদের বেশির ভাগই ভর্তি ছিল মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেল মেডিসিন এমার্জেন্সি বিভাগে।

যদিও এই ওয়ার্ড নিয়ে বরাবর বিস্তর অভিযোগ রোগী ও রোগীর পরিজনদের।ওয়ার্ডের যে ছবি আমাদের ক্যামেরায় ধরা পড়ল তা দেখলে শিউরে উঠতে বাধ্য হবেন আপনিও। বেড না পেয়ে মাটিতেই থাকতে হচ্ছে রোগীদের।এই বর্ষার সময়েও খোলা জানালার পাশেই শুয়ে থাকতে হচ্ছে মুমূর্ষ রোগীদের।তাছাড়া যত্রতত্র পড়ে রয়েছে নোংরা আবর্জনার ডাই। হাসপাতালের চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে পোকামাকড় থেকে শুরু করে বিড়ালছানা।আর এইসব নিয়েই থাকতে হচ্ছে রোগীদের।এখানেই কি শেষ? না গতকালের এক ঘটনা সম্পর্কে জানা যায় গতকাল রাত ৯ টা নাগাদ কোনোভাবে হাতে লাগানো চ্যানেল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এক রোগীর।ফলে শরীরে যাচ্ছিল না স্যালাইন।রোগীর অভিযোগ বারবার কর্তব্যরত নার্সের দ্বারস্থ হলেও চ্যানেল ঠিক করে দেওয়া হয়নি তার।ফলে বন্ধ স্যালাইন নিয়ে রাত ৯ টা থেকে আশায় প্রহর গুনছেন রোগী।একই ঘটনা কেশপুরের এক রোগীর সাথেও।রাতে ডায়ালিসিস করে মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে শিফট করা হয় তাকে।ঘুমন্ত অবস্থাতেই খুলে যায় হাতের চ্যানেল।রোগীর স্ত্রী তড়িঘড়ি নার্সের কাছে ছুটে গেলেও কোন সাড়া দেননি কর্তব্যরত নার্সরা।তাই একের পর এই ছবিগুলোই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে।শুধু পরিষেবা নয় রোগী নিখোঁজের যে সংখ্যা সামনে আসছে তাতে প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও।

এ বিষয়ে ফেসিলিটি ম্যানেজার দিলীপ কুমার পলমল বলেন ঘটনাটা সত্যি।রোগী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা এটা মিথ্যে নয় কিন্তু যে রোগী গুলো চলে গিয়েছে তার বেশির ভাগটাই ডিসচার্জের মুখে ছিল।তারা ধৈর্য ধরতে পারেনি তাই চলে গিয়ে যেতে পারে আর তার জন্যই আমাদের স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভিন্ন আধিকারিক নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে করা হয়েছে।যে কমিটিতে এমএসভিপি, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার আমি এবং আরো কিছু জন রয়েছে। তবে হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে আমাদের কোনো প্রশ্ন নেই,পরিষেবা আমাদের যথেষ্ট উন্নত।

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের সুপার জয়ন্ত কুমার রাউত। তিনি বলেন এই ধরনের ঘটনা কোন ঘটেই নি। বরং হাসপাতালের বিভিন্ন নতুন কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে তার পরেও আমরা রোগী ভর্তি করছি,আমরা কাউকে রেফার করে বা ফিরিয়ে দিচ্ছি না।এই ধরনের ঘটনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

যদিও এই নিয়েই কটাক্ষের ছুঁড়েছে বিজেপি।বিজেপি জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোন ট্রিটমেন্ট হয় না।এখানে ছাগল কুকুর ঘুরে বেড়ায়।রোগীরা ভর্তি হয় কিন্তু ট্রিটমেন্ট না পেয়ে অবশেষে রোগীকে নিয়ে রাতারাতি পালিয়ে যায় হাসপাতাল থেকে।এই হাসপাতালে কোন চিকিৎসা হয় না দালালরা ভর্তি হয়ে গিয়েছে।

যদিও অভিযোগের নিয়ে মুখ খুলেছেন শাসকদল।মেদিনীপুর সাংগঠনিক তৃণমূল জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে রুগী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে হাসপাতালের আধিকারিকদের দেখা উচিত অবিলম্বে।পাশাপাশি তিনি হাসপাতালের পাশে থেকে বলেন দিন দিন যেভাবে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে চাপ বাড়ছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।তবে এই ঘটনা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।


Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

dnews.in