Online Shoping : অনলাইনের কেনাকাটায় বাজার হারাচ্ছে বড়বাজারে কাপড় ব্যবসায়ীরা! অভিযোগ সরকারি উদ্যোগ না নিলে আগামীদিনে দুমুঠো খাবার জুটবে না

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :

একসময় লোন ও বাড়ির সোনা দানা বন্ধক রেখে কিছু মুনাফা লাভের আশায় ব্যাবসা শুরু করেছিলেন বড় বাজারের ব্যবসায়ীরা।কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল লেনদেন অনলাইনে দাপটে হারাচ্ছে তাদের মূলধনের পুঁজি। এরকম যদি ক্রমাগত চলতে থাকে তাহলে হয়তো একদিন হারিয়ে যাবে বড়বাজারের ব্যবসায়ীরা। এ রকমই আশঙ্কার কথা শোনালেন ব্যবসায়ী মহল। যদিও এ বিষয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার কে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলেই দাবি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ফেডারেশনের।

বড়বাজার

অনলাইনের যুগে অনলাইনে জিনিস কেনাবেচার রমরমা।যেখানে কাপড় জামা,ওষুধ আসবাস পত্র,জুতা পারফিউম থেকে ভুসিমাল দ্রব্য এমনকি গোবরের ঘুঁটে পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে এখন ডিজিটাল যুগের অনলাইনের।শুধু পাওয়া যাচ্ছে তা নয়, এখন বাড়ির দরজা খুললেই হাতে হাতে পৌঁছে দিয়ে যাচ্ছে ডেলিভারি বয়রা।এভাবেই দিল্লি মুম্বাই সহ দেশ-বিদেশের কাপড় এখন অতি সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে এই জঙ্গলমহলের ঘরে ঘরে।আর তাতেই বিপত্তি এবং সিঁদুরে মেঘ দেখছে মেদিনীপুর শহরের বড়বাজারের কাপড় ব্যবসায়ীরা।মুলতবএকসময় এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন ব্যবসায়ীরা লোন নিয়ে।এছাড়াও ঘরের যাবতীয় জিনিসপত্র গয়নাগাটি বিক্রি করে দিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করেছিলেন।লাভ ও যথেষ্ট পেয়েছিলেন কারণ শুধু মেদিনীপুর জেলা নয় শহর মফসল গ্রামগঞ্জ থেকে বহু মানুষ অনুষ্ঠানে বিয়ে বাড়ির জন্য কাপড় জামা কিনতে আসত এই বড় বাজারে।আর সেই খদ্দের কে জিনিসপত্র দিতে গিয়ে রীতিমত কর্মী রেখেও হিমশিম খেতে হতো মালিকদের।কিন্তু সেই যুগ এখন অতীত।

অনলাইনের দাপটে এবং অনলাইনের কেনাকাটায় কাপড় জামা এখন মানুষ ঘরে থেকেই পেয়ে যাচ্ছে অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট সহ ডিজিটাল মাধ্যমে। যার ফলে এই লোকাল ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় পড়েছে ভাটা।যারা লেবার পেমেন্ট করে ইলেকট্রিক বিল দিয়ে পৌরসভা এবং সরকারের ট্যাক্স সঙ্গে জিএসটি দিয়ে এই ব্যবসা করছেন তারা তাদের ব্যবসা উঠেছে লাটে। দিন দিন যত যাচ্ছে অনলাইনে ব্যবসার দাপট ততো বাড়ছে।আর আস্তে আস্তে ঝিমিয়ে পড়ছে এই কাপড় ব্যবসায়ীরা।তাদের ক্ষোভ অবিলম্বে সরকার থেকে কিছু একটা ব্যবস্থা নেওয়া হোক যাতে অনলাইনের পাশাপাশি তাদেরও কাপড় জামা যেন অতি সহজেই বিক্রি বাটা করে লাভের লভ্যাংশ পেতে পারে।

এই নিয়ে কাপড় ব্যবসায়ী বালকৃষণ ও সুশীল কুমার জি বলেন এক সময় ছিল যখন খদ্দেরদের জিনিস দিতে খাওয়া দাওয়া ভুলে যেতাম আর মানুষ ভিড় জমাতো দোকানে দোকানে। শুধু শহর না জেলার ভিন্ন ভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসতো আর এই কাপড় জামা নিয়ে যেত।কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে দাপটে তা কমে গেছে।এখন মানুষ অনলাইন থেকে কিনছে কিন্তু তার সঠিক কাপড় জামা নয়। শুধু চাকচিক্য দেখে অর্ডার করে আর পাই অন্যরকম জিনিস। কিছুটা সুবিধার খাতিরেই মানুষ লোভে পড়ে এই অনলাইনে জামা কাপড় কিনছে তাতে তারা ঠকছে কিন্তু কেনা ছাড়ছে না। ফলে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।এইভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আগামী দিনে আমাদের ব্যবসা হয়তো বন্ধ করে দিতে হবে।

আর এই অনলাইনে ব্যবসা কেনাকাটায় ব্যবসায়ীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে কনফেডারেশন অফ পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট চেম্বারঅফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি।এই ডিস্ট্রিক্ট চেম্বারসের কমার্সের সিনিয়র সহ সভাপতি অসীম কুমার কাইতি বলেন এই ডিজিটাল যুগে অনলাইনে কেনা কাটা যেমন ব্যবসার ক্ষেত্রে ভাটা পড়েছে তেমনি এর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এই যে লোকাল ব্যবসা বা বন্ধ হতে যেতে বসেছে।দিল্লী মুম্বাই থেকে বেশিরভাগ মানুষ জিনিসপত্র অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করছে কোনরকম ট্যাক্স জিএসটি না দিয়েই।তারা এই রাজ্য জেলা সহ লোকাল মার্কেটের অর্থনীতিটাকে নষ্ট করছে।তারা বিভিন্ন সময়ের লোন ফাঁকি দিয়ে বিদেশেও পালাচ্ছে।যার ক্ষেত্রে ভারতের অর্থনীতি যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি লোকাল মার্কেট এবং ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতি হচ্ছে।


Share

dnews.in