নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
ব্রিটিশ আমলে অস্ত্রোপচার হত কিন্তু বর্তমানে তার জায়গায় ডট পেনের দখলদারি!নস্টালজিয়ার কিছু গ্রাহক নিয়ে এখনও অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে জঙ্গল মহলের একমাত্র পেন হাসপাতাল।হিরো,লিলি,উইলিয়ান সন,white feather এর সঙ্গে দেশী কোম্পানি শক্তি, বিনা,কমান্ডার,রাইটার সহ একাধিক কলমের অস্ত্রোপচার বছর ৬০ র মেহতাবউদ্দিনের।
সময়টা ব্রিটিশ আমল,সাল ১৯৩২-৩৩ সেই সময় আজকের মত ডটপেন ব্যাবহৃত হত না সবাই ব্যবহার করতো ফাউন্টেন পেনের বা নিবপেনের।আর এই পেনের কালি ভরা থেকে নিব পাল্টানো ছিল বিরাট ঝক্কির কাজ।তবে সবাই তাই করতো।অবিভক্ত মেদিনীপুরের সেই সময় এই পেনের অপারেশন বা সারানোর জন্য এক মাত্র দোকান ছিল শহরে স্কুল বাজারে পেন হাসপাতাল।যেই হাসপাতালে অধ্যাপক থেকে ছাত্র উকিল থেকে ব্যবসায়ীরা তাদের শখের নিব পেন গুলো সারাতে আসতো।পেনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হত বলে এই দোকানের নাম দেওয়া হয়েছিল পেন হাসপাতাল।
দোকানি মেহেতাউদ্দিন তার দাদুর আমল থেকে এই ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।দাদুর পর বাবা রফিকউদ্দিন ব্যবসা চালিয়েছেন।এখন সেই পেন হাসপাতালের দায়িত্ব বছর ৬০ এর মেহতাবউদ্দিন এর হাতে।তৎকালীন সময়ে বিদেশি হিরো,লিলি, উইলিয়ান সন,white feather এর সঙ্গে দেশী শক্তি, বিনা, কমান্ডার, রাইটার সহ একাধিক কলমের অস্ত্রোপচার,বিরল থেকে বিরল পেনের অপারেশন করেছেন তিনি।যদিও বর্তমানে সেই হাসপাতালে আর নিব পেনের রমরমা নেই। কালের গর্ভে হারিয়েছে সেই লেখার কলম। এখন তার জায়গায় চলে এসেছে ইউজ অ্যান্ড থ্রো পেন এবং নামিদামি ডট পেন।তবে এখনও তিনি মনে মনে তৃপ্তি পান যখন জেলার সহ ভিন জেলায় অভিজ্ঞ বয়স্ক মানুষেরা তাদের নিব পেন নিয়ে হাসপাতালে আসেন এবং ট্রিটমেন্ট করে নিয়ে যান তার কাছ থেকে।
দোকানি মেহতাবউদ্দিন বলেন বাপ ঠাকুরদার আমলের এই দোকান,তখন ব্রিটিশ আমল।তখন এত কলমের রমরমা ছিল না। যারা ফাউন্টেন বা এই নিব পেন ব্যবহার করত তারা একটু নিজেদের স্ট্যাটাস মেন্টেন করতেন।তখনকার থেকেই পেন সারিয়ে আসছি আমরা।কালির দোয়াত পাল্টানো থেকে বিভিন্ন ধরনের রিফিল পাল্টানো পর্যন্ত। তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখনও এই ফাউন্টেন পেনের সামান্য চাহিদা রয়েছে,কিছু পুরানো কাস্টমারদের কাছে।