নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
এ যেন সর্ষের মধ্যেই ভুত।খোদ ডিআই অফিসের স্যালারি পোর্টালের ‘পাসওয়ার্ড’ চুরি।শুধু চুরি না সেই সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী ব্লকের ভীমপুরে অবস্থিত ভীমপুর এবিএম গার্লস হাই স্কুল এবং ভীমপুর সাঁওতাল উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট ৪ জন ‘ভুয়ো’ শিক্ষকও শিক্ষাকর্মীকে গত প্রায় ৬ মাস ধরে বেতন দেওয়ার অভিযোগ।এই অভিযোগকারী আবার স্বয়ং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) স্বপন কুমার সামন্ত।এই বিষয়ে তিনি শালবনী থানার দ্বারস্থও হয়েছেন।
সূত্রে জানা গেছে শালবনী থানাতে এই দুই স্কুলের বেআইনি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে গত প্রায় দু-তিন বছর ধরে তদন্ত চলছে। মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টেও। তার মধ্যেই ডিআই অফিসের তথা স্যালারি পোর্টালের পাসওয়ার্ড চুরি করে ৪ জন ভুয়ো বা অবৈধভাবে নিয়োগ হওয়া শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীকে বেতন দেওয়াও চলছে।এই দু’টি স্কুল পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে খ্রিস্টান সার্ভিস সোসাইটি।নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে এই সোসাইটি।অনুমোদন দেওয়া থেকে শুরু করে বেতন দেওয়া,এসব হয় জেলা শিক্ষা দপ্তর বা ডিআই অফিসের মাধ্যমে।অভিযোগ,এই সোসাইটির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী গত কয়েক বছর ধরেই অবৈধভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করেছে ভীমপুরের এই দু’টি স্কুলে।এর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সোসাইটির অধীন অন্য একটি গোষ্ঠী সহ এলাকাবাসী।অভিযোগ করেছেন খোদ এবিএম গার্লস হাই স্কুলের প্রাক্তন টিচার ইনচার্জও।তবে তাতে কাজ হয়নি।
প্রাক্তন ডিআই চাপেশ্বর সর্দার (বর্তমানে,পূর্ব মেদিনীপুরের একটি স্কুলের মামলায় জেলে আছেন) সহ জেলা শিক্ষা দপ্তরের একাংশ অসাধু কর্মীর সৌজন্যে সোসাইটির ক্ষমতাসীন ওই গোষ্ঠী তারপরেও ‘বেআইনিভাবে’ শিক্ষক-শিক্ষিকাও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ।তাঁদের মধ্যেই চার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী হলেন, মেদিনীপুর শহরের অনিন্দ্য দাস মহাপাত্র,মৌমিতা দাস,অনুরণন সেখ এবং সৌভিক দাশগুপ্ত।গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে প্রথম তিনজনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন ডিআই। কিন্তু,তারপরও ডিআই অফিসের একটি অসাধু চক্রের দ্বারা তাঁরা বাড়িতে বসেই বেতন পেয়ে চলেছেন বলে অভিযোগ।
অপরদিকে, জেলা শিক্ষা দপ্তর বা ডিআই অফিসের এক ক্লার্কের নিকটাত্মীয় সৌভিক দাশগুপ্তের নিয়োগ কিভাবে হয়েছে, তা নাকি স্বয়ং ডিআই-ও জানেন না! বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বা উপস্থিতির খাতাতেও সৌভিকের কোনো সই বা স্বাক্ষর নেই।তা সত্ত্বেও গত জুলাই থেকে তিনি বহাল তবিয়তে বেতন পেয়ে চলেছেন।বর্তমান ডিআই তাই শেষ পর্যন্ত পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।সেই সঙ্গে তিনি অনিন্দ্য দাস মহাপাত্র বাদে বাকি ৩ জনের বাড়ির ঠিকানা চেয়ে এবিএম গার্লস হাই স্কুলের বর্তমান টিচার ইনচার্জকে চিঠি পাঠিয়েছেন গত ২৮ মার্চ।
যদিও ডিআই স্বপন কুমার সামন্ত এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সমনে কিছু বলতে চাননি।শুধু জানিয়েছেন,পুলিশ তদন্ত করছে।অপর দিকে তদন্তকারীদের একটি সূত্রে জানা গেছে,তদন্ত চলছে। তবে,বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টেও বিচারাধীন।তা সত্ত্বেও বর্তমান ডিআই-র সাহায্য পেলে,তাঁর অফিসের অসাধু কর্মীদের চিহ্নিত করে, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।