নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
২০১০ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি শিলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চত্বরে থাকা EFR ক্যাম্পে মাওবাদীরা হামলা চালিয়ে গুলি করে।এরপর ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে ২৪ জন EFR জওয়ানকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে।জওয়ানের পাল্টা প্রতিরোধে ৫ জন মাওবাদী মারা গিয়েছিল।সেই ঘটনায় ২৩ জন মাওবাদীকে দোষী সাব্যস্ত করল মেদিনীপুর আদালত। রায় ঘোষণা হবে আগামীকাল।
সালটা ২০১০ ফেব্রুয়ারি মাস।ঠিক সেইসময় অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রাম জেলার শিলদায় ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলসের(EFR) ক্যাম্পে মাওবাদী হানা নাড়িয়ে দেয় গোটা রাজ্যকে।তখন মাওবাদীদের রমরমা গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর সহ জঙ্গলমহল জুড়ে। রীতিমতো সেই মাওবাদী হানা রুখতে কেন্দ্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে।কিন্তু ১৫ ই ফেব্রুয়ারি রাত্রি ৯ টা নাগাদ এই শিলদা EFR ক্যাম্পে ঘটে গেল বীভৎস ঘটনা। সশস্ত্র অবস্থায় আক্রমণ চালায় মাওবাদীরা।সেই মাওবাদিদের আক্রমণে ২৪ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়,চুরি হয়ে যায় জওয়ানদের অস্ত্রশস্ত্র।যদিও সেই পাল্টা আক্রমণে পাঁচ মাওবাদীর মৃত্যু ঘটে ঘটনাস্থলে। সেই ঘটনায় ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয় মাওবাদীরা।সেই ঘটনা গোটা দেশ নাড়িয়ে দেয়।সেই ঘটনায় তৎকালীন পুলিশ প্রশাসন অর্ণব দাম-সহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ৷ কিন্তু ২০১৯ সালে অর্ণবকে জামিন দেয় আদালত৷মূলত জেলে তার আচরণ ভাল হওয়ার জন্যই জামিন দেওয়া হয়।জেল থেকেই নেট উত্তীর্ণ হয় মেধাবী এই মাওবাদী নেতা৷পরবর্তীকালে সুদীপ চংদার এক মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়।বাকি ২৩ জন মাওবাদীর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।
অবশেষে এই দিন মেদিনীপুর আদালতে অতিরিক্ত দায়রা আদালতে অভিযুক্তদের তোলা হয়।এই মামলায় প্রথম মাও নেতা রঞ্জন মুন্ডা গ্রেপ্তার হয় তার একের পর এক মাও নেতা নেত্রী গ্রেপ্তার হয়।যদিও অধরা ছিলো মাও নেত্রী সুচিত্রা মাহাত।পরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে সুচিত্রা।প্রথমে এই মামলা শুরু হয় ঝাড়গ্রাম আদালতে পরর্বতীতে সেই মামলা শুনানি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর আদালতে।মঙ্গলবার জেলবন্দী ১৪ জন মাওবাদীকে তোলা হল ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সেলিম শাহির এজলাসে।এছাড়াও বাকি যারা জামিনে মুক্ত রয়েছেন,তাদেরও মঙ্গলবার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার এই মামলার অভিযুক্ত ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত।বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই ধাপে দোষী সাব্যস্তদের সাজা ঘোষণা করা হবে।
এদিন সরকারি আইনজীবী দেবাশীষ মাইতি বলেন দীর্ঘদিন ধরে চলা এই ঘটনার অবশেষে দোষী সাব্যস্ত করল মেদিনীপুর আদালত।তাতে স্বস্তি ছায়া মেদিনীপুর জুড়ে। এই ঘটনায় একজন জুভেনাইল আছে আরেকজন মারা গেছে। বাকি ২৪ জন কেই দোষী সাব্যস্ত।
অন্যদিকে মাওবাদীদের হয়ে লড়া আইনজীবী অজয় কুমার ঘোষ বলেন বিচারক মনে করেছে তাই দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেছে।এ বিষয়ে মন্তব্য আমাদের কিছু নেই।তবে আমার আসামি পক্ষ যদি উচ্চ আদালতে যায় তাহলে তিনি যেতে পারেন।উচ্চ আদালত তখন ঠিক করবে এই নির্দেশ বহাল রাখবে, না বাতিল করবে।