Silda judgement:”এই বিচারক পুরোপুরি সরকারের লোক”এর কাছ থেকে এর বেশি আশা করা যায় না!ক্ষোভ রঞ্জন মুন্ডার

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:

দুদিন ধরে চলা শিলদা কাণ্ডের রায় ঘোষনা অবশেষে শেষ হলো বৃহস্পতিবার। মোট ২৩ জন অভিযুক্তর মধ্যে প্রথম দিন ১৩ জন এবং দ্বিতীয় দিন ১০ মাও নেতার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ষষ্ঠ অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক সেলিম শাহী।এদিন অভিযুক্ত দশ জনেরই যাবজ্জীবন শাস্তি ঘোষণা করে সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা।যদিও এ রায় ঘোষণার পর ভ্যানে ওঠার আগে মাও নেতা রঞ্জন মুন্ডা এবং অর্ণব দাম বলেন এটা সঠিক বিচার নয়,তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।এই বিচারক west bengal auqaf tribal এর চেয়ারম্যান ছিলেন,আসলে তিনি সরকারেরই লোক।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ২০১০ ফেব্রুয়ারি মাসে অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রাম জেলার শিলদায় ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলসের(EFR) ক্যাম্পে মাওবাদী হানা হয়।তখন মাওবাদীদের রমরমা গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর সহ জঙ্গলমহল জুড়ে। রীতিমতো সেই মাওবাদী হানা রুখতে কেন্দ্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে।কিন্তু ১৫ ই ফেব্রুয়ারি রাত্রি ৯ টা নাগাদ এই শিলদা EFR ক্যাম্পে ঘটে গেল বীভৎস ঘটনা। সশস্ত্র অবস্থায় আক্রমণ চালায় মাওবাদীরা।সেই মাওবাদিদের আক্রমণে ২৪ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়,চুরি হয়ে যায় জওয়ানদের অস্ত্রশস্ত্র।যদিও সেই পাল্টা আক্রমণে পাঁচ মাওবাদীর মৃত্যু ঘটে ঘটনাস্থলে।সেই ঘটনায় ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয় মাওবাদীরা।সেই ঘটনা গোটা দেশ নাড়িয়ে দেয়। সেই ঘটনায় তদন্তে ২৬ জনের নামে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ প্রশাসন।পরবর্তীকালে সুদীপ চংদার নামে এক মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়।

বাকি ২৩ জন মাওবাদীর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।এই মামলায় প্রথম মাও নেতা রঞ্জন মুন্ডা গ্রেপ্তার হয় তার একের পর এক মাও নেতা নেত্রী গ্রেপ্তার হয়।যদিও অধরা ছিলো মাও নেত্রী সুচিত্রা মাহাত।পরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে সুচিত্রা মাহাত।প্রথমে এই মামলা শুরু হয় ঝাড়গ্রাম আদালতে পরর্বতীতে সেই মামলা শুনানি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর আদালতে। দীর্ঘ আদালতের প্রক্রিয়া চলার পর গত মঙ্গলবার জেলবন্দী ১৪ জন মাওবাদীকে তোলা হয় মেদিনীপুর ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সেলিম শাহির এজলাসে।এই মামলার অভিযুক্ত ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। গতকাল সেই ঘটনায় প্রথম পর্বে ১৩ জনের যাবজ্জীবনের রায় ঘোষণা করে বিচারক সেলিম শাহী। আজকে ছিল তার দ্বিতীয়ার্ধ।এই দিনও বাকি ১০ জন অভিযুক্ত মাওবাদীকে তোলা হয় আদালতে।এরা হলেন লোচন সিং সর্দার,চুনারাম বাস্কে,আশিষ মাহাতো, ধৃতিরঞ্জন মাহাতো,বিষ্ণুপদ সরেন,অর্ণব দাম,রামসাই হাঁসদা,প্রশান্ত পাত্র,বুদ্ধেশ্বর মাহাতো ওরফে বুদ্ধদেব, রঞ্জন মুণ্ডা ওরফে মধু ওরফে পুটুরাম।এদিন মেদিনীপুর জেলা ষষ্ঠ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সবারই যাবজ্জীবন শাস্তি ঘোষণা করে সঙ্গে দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাস কারাবাস।

এদিন কোর্ট থেকে তাদের কারাবাসে নিয়ে যাওয়ার সময় মাও নেতা রঞ্জন মুন্ডা বলেন,”এই বিচারক সেলিম শাহ west bengal auqaf tribal এর চেয়ারম্যান ছিলেন। তার কাছে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না। কারণ আদিবাসীরা যখনই জল জঙ্গল জমির অধিকার নিয়ে আন্দোলন করেছি তখনই আমাদের গ্রেপ্তার করেছে এবং শাস্তির ব্যবস্থা করেছে”।জল জঙ্গল জমির হয়ে আন্দোলন করলেই এই হাল হতে হয়।অন্যদিকে মাও নেতা অর্ণব দাম বলেন,”এই বিচারে আমরা সন্তুষ্ট নয়,আমরা উচ্চ আদালতে যাব”এই টুকুই বলতে পারি।


Share

dnews.in