নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
অবশেষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিল শিলদা EFR ক্যাম্প পোড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের।এদিন অভিযুক্তদের বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় মাওবাদী স্কোয়াডের দুই লিডার বিকাশ ও তারা বলেন তাদেরকে মিথ্যে শাসানো হয়েছে এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে সাক্ষী নিয়ে এসে সাক্ষী দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটা ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস।ঠিক সেইসময় অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রাম জেলার শিলদায় ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলসের(EFR) ক্যাম্পে মাওবাদী হানা নাড়িয়ে দেয় গোটা রাজ্যকে।তখন মাওবাদীদের রমরমা গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর সহ জঙ্গলমহল জুড়ে। রীতিমতো সেই মাওবাদী হানা রুখতে কেন্দ্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে।কিন্তু ১৫ ই ফেব্রুয়ারি রাত্রি ৯ টা নাগাদ এই শিলদা EFR ক্যাম্পে ঘটে গেল বীভৎস ঘটনা। সশস্ত্র অবস্থায় আক্রমণ চালায় মাওবাদীরা।সেই মাওবাদিদের আক্রমণে ২৪ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়,চুরি হয়ে যায় জওয়ানদের অস্ত্রশস্ত্র।যদিও সেই পাল্টা আক্রমণে পাঁচ মাওবাদীর মৃত্যু ঘটে ঘটনাস্থলে।সেই ঘটনায় ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয় মাওবাদীরা।সেই ঘটনা গোটা দেশ নাড়িয়ে দেয়।সেই ঘটনায় তৎকালীন পুলিশ প্রশাসন অর্ণব দাম-সহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ৷ কিন্তু ২০১৯ সালে অর্ণবকে জামিন দেয় আদালত৷মূলত জেলে তার আচরণ ভাল হওয়ার জন্যই জামিন দেওয়া হয়।জেল থেকেই নেট উত্তীর্ণ হয় মেধাবী এই মাওবাদী নেতা৷পরবর্তীকালে সুদীপ চংদার এক মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়।
বাকি ২৩ জন মাওবাদীর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।এই মামলায় প্রথম মাও নেতা রঞ্জন মুন্ডা গ্রেপ্তার হয় তার একের পর এক মাও নেতা নেত্রী গ্রেপ্তার হয়।যদিও অধরা ছিলো মাও নেত্রী সুচিত্রা মাহাত।পরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে সুচিত্রা।প্রথমে এই মামলা শুরু হয় ঝাড়গ্রাম আদালতে পরর্বতীতে সেই মামলা শুনানি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর আদালতে।গত মঙ্গলবার জেলবন্দী ১৪ জন মাওবাদীকে তোলা হল ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সেলিম শাহির এজলাসে।এই মামলার অভিযুক্ত ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এই দিন সকাল থেকে তাদের কড়া প্রহরায় নিয়ে আসা হয়।কয়েক ঘন্টা শোনার পর রায় দান করেন বিচারক।এদিন প্রথম দফায় ১৩ জনের শাস্তি ঘোষণা করে আদালত।এই ১৩ জন হলেন মনসারাম হেমরম ওরফে (বিকাশ)ঠাকুরমনি হেমরম ওরফে (তারা)ওরফে পাখি,কল্পনা মাইতি ওরফে অনু ওরফে রীনা,মানস মাহাতো,কাজল মাহাতো,মঙ্গল সরেন,সনাতন সরেন,শুকলাল সরেন,কানাই হাঁসদা,রাজেশ হাঁসদা ওরফে ভাঁটু,শ্যামচরন হাঁসদা,রাজেশ মুণ্ডা, ইন্দ্রজিৎ কর্মকার।
এই বিষয়ে মাওবাদী স্কোয়াড লিডার মনসারাম হেমরম ওরফে (বিকাশ)বলেন বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে সাক্ষী জোগাড় করেছে প্রশাসন এবং সেই সাক্ষী দিয়েই আমাদেরকে ফাঁসানো হয়েছে।আমরা এই বিচার মানি না।আর্মস,এক্সপ্লোসিভ সংসন নিয়ম মেনে করা হয় হয় নি।তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে শুরু বলেন সিপিএম এরেস্ট করল,দিদি সাজা দিল।আরেক মাওবাদী স্কোয়াড লিডার ঠাকুরমনি হেমরম ওরফে (তারা)বলেন এই ঘটনার সমস্ত সাক্ষী গুলো সাজানো হয়েছে।যদি রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা থেকে থাকে তাহলে সত্যিকারের বিচারের মতন বিচার হওয়া দরকার।আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবো বিচারের আশায়।