Souradeep Chowdhury: র‍্যাগিংয়ের শিকারে মৃত সৌরদীপের স্মরণে প্রকাশিত হলো’ ছোটো-ছুটকির কেরা মতি’! মায়ের কলমে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে পড়ুয়া

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা:

র‍্যাগিং একদিন কেড়ে নিয়েছিল সদ্য বি.টেক-এ ভর্তি হওয়া সৌরদীপ চৌধুরীর প্রাণ।তাঁর মৃত্যুতে একসময় গর্জে উঠেছিল লেখিকা অর্পিতা সরকারের কলম।আর সেই অর্পিতার হাতেই উদ্বোধন হল সৌরদীপের মায়ের লেখা বই ‘ছোটো-ছুটকির কেরামতি’,যার মাধ্যমে ছেলের জীবন দীপ চির প্রজ্জলিত রাখতে চান একমাত্র সন্তানকে হারানো সুদীপা চৌধুরী।

‘ছোটো-ছুটকির কেরামতি’ প্রকাশ

মূলত কলকাতা বুক প্রেস থেকে প্রকাশিত হল সুদীপা চৌধুরীর লেখা বই ‘ছোটো-ছুটকির কেরামতি’।
পরে হাইকোর্টে তার নিজের চেম্বারে বইটি প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়।তবে উল্লেখ্য,সুদীপা চৌধুরীর লেখা দুটি বই ইতিমধ্যেই পাঠকদের মন জয় করেছে।এশিয়ান প্রেস প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত “আমার দীপের আলোয় মালায় গাঁথা/ কিছু কথা কিছু ব্যাথা”এবং বার্তা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত “একলা মা” বই দুটি জনপ্রিয় হয়েছে।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,গত ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই,বর্ষণমুখর এক বিকেলে একমাত্র সন্তান সৌরদীপকে হারিয়েছেন সুদীপা চৌধুরী।উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বিজয়ওয়াড়ায় পড়তে গিয়েছিল সৌরদীপ।তাকে হস্টেলে রেখে বাড়িতে ফেরার দু’দিনের মাথায় র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে সৌরদীপের মৃত্যুর খবর পৌঁছায় সৌরদীপের বাবা চিকিৎসক সুদীপ চৌধুরীর কাছে।তখন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এই খবর নিয়ে হইচই হলেও সময়ের সঙ্গে তা স্তিমিত হয়ে যায়।তবে এই ঘটনা নিয়ে বারে বারে গর্জে উঠেছে অর্পিতা সরকারের কলম।সেই অর্পিতাই প্রকাশ করলেন সুদীপার বই।

বিশেষত সুদীপার পক্ষে একমাত্র সন্তানকে হারানোর যন্ত্রণা কোনওদিনই ভোলা সম্ভব হবে না।আর সেই সন্তানের স্মৃতি বুকে নিয়ে আঁকড়েই তিনি কলম ধরেছেন। এ বিষয়ে উল্লেখ করা যায় লেখালেখিতে তাঁর অভ্যাস আগে থেকেই ছিল।সেই কলম ব্যবহার করেই ছেলেকে মানুষের মনে বাঁচিয়ে রাখতে চান সুদীপা।বই আকারে তাই প্রকাশ করলেন নিজের নানা লেখালিখি।

এই বিষয় নিয়ে সুদীপা বলেন,”তার ছেলের ডাকনাম ছিল “ছোটো”।তাই বইয়ের নাম দেওয়া হয়েছে ছোটো-ছুটকির কেরামতি”।আদতে ছোটদের নিয়ে লেখা কয়েকটি ছোটো বেলার অভিজ্ঞতা,শিক্ষামূলক ও আনন্দের গল্পের সংকলন।তবে অবশ্য শুধু ছোটরা নয় বড়দের মনের মধ্যেও যে ছোটবেলা বাস করে।এই বই তাঁদেরও ভালো লাগবে বলে আশা লেখিকার।তিনি এও বলেন,”আমি চাই আগের দুটি বইয়ের মতো এই বইও পাঠকদের ভালো লাগুক।আর চাই আমার কোল যেভাবে খালি হয়েছে, অন্য কোনও মায়ের কোল যেন সেইভাবে কখনও খালি না হয়।সকলের কাছে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেওয়াই আমার লক্ষ্য।”অন্যদিকে এই বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৌরদীপের বাবা সুদীপ চৌধুরীও।লেখিকা অর্পিতা সরকার বলেন,সন্তান হারিয়েও যেভাবে সন্তানকে নিজের লেখনীর মধ্যে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছেন সুদীপা,সেটি নিঃসন্দেহে একটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ।আমাদের সকলেরই উচিত সুদীপাকে অনুসরণ করে সমস্ত দুঃখ, যন্ত্রণা ভুলে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেঁচে থাকা।আর এই ধরনের রাগিংয়ে আর যাতে কোনো মায়ের কোল খালি না হয় তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি বাবা-মায়ের উচিত ছেলেমেয়েদের সঠিক শিক্ষা দেওয়া।


Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

dnews.in