নিজস্ব প্রতিনিধি,মুড়াকাটা:
এবার ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীর মৃত্যু ঘটলো স্কুলে বসেই এবং সেই মৃত্যুতে মর্মাহত স্কুল কর্তৃপক্ষসহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মানুষজন।কলেজ ছাত্রীর পর এবার স্কুলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু।মূলত প্রার্থনা করার পর ক্লাস চলাকালীনই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ছোট্ট পাপিয়া।
স্কুলে এসেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হলো ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীর।মৃত ছাত্রীর নাম পাপিয়া দে (১২) বাড়ি গুড়গুড়িপাল থানার মুড়াকাটা গ্রামে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার বাড়ি থেকে সাইকেলে করে নয়াগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের আসে পাপিয়া।বিদ্যালয়ে প্রার্থনার পর ক্লাসে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থতা বোধ করে এরপর ক্লাস রুমেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় ঐ ছাত্রী।তড়িঘড়ি বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা পরিবার পরিজনদের খবর দেন। ছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে বাড়ির সামনে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়।মেদিনীপুর মেডিক্যালের আনা হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষনা করে ঐ ছাত্রীকে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঐ ছাত্রীর কোনরকম রোগ ছিলনা।তবে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণীর ঐ ছাত্রীর।
শান্ত, ভদ্র, অনুগত পাপিয়াকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।নয়াগ্রামের কাছেই মুড়াকাটাতে বাড়ি পাপিয়াদের। মঙ্গলবার সাত সকালেই সেখানে সব হারানোর বেদনা।এলাকাতেও বিষন্নতার ছায়া।সূত্র অনুযায়ী জানা যায় পেশায় কৃষক উত্তম দে’র তিন মেয়ের মধ্যে সব থেকে ছোট পাপিয়া।পাপিয়া’র বড়দি উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলেজে পড়শোনা করছে। মেজদি নয়াগ্রাম হাই স্কুলেরই নবম শ্রেণির ছাত্রী।পাপিয়া পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে।দিদিদের মতোই পাপিয়াও শান্ত, ভদ্র ও অনুগত বলে জানান শিক্ষকরা।মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে দাঁড়িয়ে শিক্ষক প্রবীর পাল বলেন,”অত্যন্ত অনুগত ছাত্রী।পড়াশোনাতেও ভালো।কিছু বলার মতো ভাষা নাই।বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী থেকে পরিচালন সমিতির সভাপতি জানান, সুস্থভাবেই স্কুলে এসেছিল পাপিয়া।সাড়ে ছ’টা নাগাদ প্রার্থনা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই সে অসুস্থতা অনুভব করে।তারপরই একটু খিঁচুনির মতো হয়।হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।পরিচালন সমিতির সভাপতি অচিন্ত্য হ্যান্ডেল বলেন,”গরমের জন্যই সকালে স্কুল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।এই ঘটনায় আমরা শোকস্তব্ধ!চিকিৎসা করানোর কোন সুযোগই দিল না ও। সুস্থ, ফুটফুটে একটা মেয়ে। কি যে হল, কিছু বুঝতেই পারলাম না!”মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছুটা নিশ্চিত হওয়া যাবে।তবে, প্রাথমিক অনুমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে ছোট্ট পাপিয়ার।
এ বিষয়ে পাপিয়ার দাদুর কৃষ্ণপ্রসাদ দে বলেন,”পাপিয়া হল তিন বোনের থেকে সবচেয়ে ছোট মেয়ে।সকালবেলা ও যখন বেরোয় তখন ওকে রাগিয়ে ছিলাম যে এত সেজেগুজে কোথায় যাবি।এরপর ওই স্কুলে চলে আসে তারপর এই ঘটনা।বুঝতে পারছি না কোথা থেকে কি হলো। ওর বাবা লোকের জমিতে মজুরের কাজ করে।