নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
মেদিনীপুর শহরের হাঁসপুকুর এলাকায় রয়েছে হাঁসপুকুর শহীদ ক্ষুদিরাম প্রাথমিক বিদ্যাপীঠ।এই স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা কাগজ-কলমে আটজন আর শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা দুজন। যদি ওই স্কুলে উপস্থিতির সংখ্যা চার জন পড়ুয়া।এই অবস্থায় পড়ুয়াদের স্কুলে আনতে এবার দুয়ারে দুয়ারে ছুটলেন দিদি মনিরা।সেরকমই দৃশ্য দেখা গেল এই দিন।
মূলত মেদিনীপুর শহর ও জেলায় যত প্রাইমারি স্কুলগুলি রয়েছে সবচেয়ে করুণ দশা হলো এই হাঁস পুকুর শহীদ ক্ষুদিরাম প্রাথমিক বিদ্যাপীঠে।মূলত এক হচ্ছে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ার প্রবণতা আর দ্বিতীয় সমস্যা হল প্রাইমারি স্কুলে পড়লেই হাই স্কুলে পড়ার সুবিধা।এই দুই সুবিধার জন্যই এখন বর্তমানে পড়ুয়ার বাবা মা রা তাদের বাচ্চাদের হাই স্কুল রয়েছে এরকম স্কুলের প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করছে তাদের বাচ্চাদের।যেসব স্কুলে শুধু প্রাইমারি সেকশন রয়েছে সেইসব স্কুল ছাড়িয়ে তারা হাই স্কুলের ছোট স্কুল প্রাইমারিতে ভর্তি করা শুরু করেছে।আর তাতেই সমস্যা বেড়েছে এই ছোট ছোট প্রাইমারি স্কুলগুলিতে।দিনের পর দিন শূন্য হয়ে পড়েছে সেই স্কুলগুলি।এই করুণ পরিস্থিতিতে স্কুলের হাল ফেরাতে বাড়ি বাড়ি দৌড়াচ্ছেন দিদিমনিরা।খবর পেয়েছেন স্কুলে পড়ার জন্য পাঁচ বছরের নিচে কয়েকটি বাচ্চা রয়েছে।আর এই খবর পেতে প্রতিদিনই একবার করে বাড়ি যাচ্ছেন এবং আবেদন করেছেন তাদের স্কুলে যেন ভর্তি করে তার অভিভাবকেরা।যদিও অভিভাবকেরা সাফ উত্তর – ‘কোনভাবেই নয়’।কারণ এই প্রাইমারি স্কুলে পড়ালে তাদের বাচ্চারা হাইস্কুলে পড়ার সুযোগ পাবে না। তাই তারা এই প্রাইমারি স্কুলে তাদের বাচ্চাদের পাঠাবে না। আর তাতেই সমস্যায় পড়ছেন দিদিমনিরা।
এই বিষয়ে স্কুলের সহ প্রধান শিক্ষিকা দিদিমণি সারথি পাতর কর বলেন এক সময় স্কুলে প্রচুর পড়ুয়া ছিল। জমজমাট ছিল তাদের এই প্রাইমারি বিদ্যালয় কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র আটজন।এখন মন খারাপ হয়ে যায়।যদি ওই পড়ুয়াদের আনতে তাদের বাড়ি যেতে হয় প্রতিদিন।যদিও নতুন পড়ুয়ার সন্ধানে রোজই পাড়ায় পাড়ায় আবেদন করি।কিন্তু তাতে লাভ হয় না,বরং শুনতে হয় নানারকম কথাবাত্রা অবিভাবক কাছ থেকে।
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষিকা নাজিমা খাতুন বলেন এই পড়ুয়া কমার মূল কারণ বড় স্কুল গুলি।কারণ বড় স্কুল গুলিতে প্রাইমারি থাকার কারণে বাচ্চাদের একবার স্কুলে ভর্তি করলেই অভিভাবকদের আর চিন্তা করতে হয় না একদম উচ্চমাধ্যমিক দিয়ে বেরোই।আমাদের শুধু প্রাইমারি সেকশন থাকায় পড়ুয়াদের বাবা মা রা বাচ্চাদের পাঠাতে চাই না।তাই আমরা রোজ বেরোই বাচ্চা খুঁজতে।
পড়ুয়া রুবি দুলে বলে আগে তাদের সহপাঠীর সংখ্যা অনেক ছিল। কিন্তু এখন আর আসছে না তারা।অন্য স্কুলে ভর্তি হয়ে গেছে,তাই আমাদের মন খুব খারাপ। আমরা চাই তারা ফিরে আসুক আমাদের স্কুলে পুনরায়।