নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে পাহারা দেওয়া মাজারের হিন্দু দারোয়ান বৃদ্ধ চমত সেতুয়া রাষ্ট্রপতি পুরস্কার হাকদার,বলে দাবি অনুরাগীদের। সম্প্রীতির মেলবন্ধনকারী এই চমত সেতুয়া দেশের কাছে বিরল।সেই সঙ্গে ভগ্ন মাজার সারিয়ে দিক প্রশাসন,মন্ত্রী এবং বিধায়কেরা, দায়িত্ব নিক সরকার বলে আবেদন এই মাজারের ভক্তদের।
সম্প্রীতির এক মেলবন্ধন হল ‘সুফি চাঁদসা বাবা’যেখানে এক মুসলিম ধর্ম প্রচারকের দেহ আগলে রেখেছেন ৮৪ বছরের বৃদ্ধ আর ছড়িয়ে দিচ্ছেন সম্প্রীতির বার্তা।এরকমই ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেড বল্লভপুর এলাকায়। ঘটনা সূত্রে বলা যায় মেদিনীপুর শহরের বেড়বল্লভপুর এলাকায় রয়েছে মুসলিমদের একটি ধর্মীয় মাজার।যার নাম ‘সুফি চাঁদসা বাবার মাজার’।যদিও মুসলিমদের এই মাজার তবুও এই মাজারকে সেই ১৯৮০ সাল থেকে পাহারা দিচ্ছেন এক হিন্দু বৃদ্ধ।চমত সেতুয়া নামে এই হিন্দু বৃদ্ধ সেই ৮০ সাল থেকে পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন ২০২৪ সাল পর্যন্ত।৪৪ বছর ধরে তিনি তার ক্ষয়িষ্ণু শরীর নিয়ে পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন একনাগাড়ে,ভক্ত দেশ সেবা করে।বছরে এক বিশেষ দিনে যেমন বিরাট অনুষ্ঠান হয় সেই সঙ্গে প্রতি বৃহস্পতিবার হয় ভক্তদের সমাগম।কথিত আছে এই মাজারে বাবার কাছে চাওয়া আবেদন কখনো ফেরত যায় না।বহু দূরান্তের মানুষ আসে তাদের মনস্কামনা নিয়ে। চাকরি-বাকরি,বিবাহ,সন্তান লাভের সঙ্গে আবার কেউ কেউ চাকরির পদোন্নতি নিয়ে ছুটে আসেন বাবার মাজারে।সম্প্রতি এক ভক্ত দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির কাজে টার্গেট ফিলাপ করতে পারছিলেন না এবং যেতে পারছিলেন না বিদেশ ভ্রমণ।
এরপর তিনি বাবার মাজারে উপস্থিত হন।আবেদন করেন বাবার কাছে। বিস্ময়কর ব্যাপার,অল্প দিনের মধ্যে সেই মনস্কামনা পূরণ হয়।সেই খুশিতে ভক্ত দৌড়ে আসেন বাবার মাজারে সিন্নী চড়াতে। ঠিক এভাবেই এই সম্প্রীতির বার্তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়াতে সম্প্রতি ২৪ ঘন্টা নিউজ চ্যানেল থেকে সম্বর্ধিত ও পুরস্কৃত করা হয় এই বৃদ্ধ চমত সেতুয়া কে।এতদিন পর পুরস্কৃত হওয়ায় কিছুটা উল্লাসিত তার আপনজনেরা ও ভক্তজনেরা।যদিও এই মাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত দারোয়ান বা পাহারা দার চমত সেতুয়াকে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের দাবী জানিয়েছেন এখানকার অগণিত ভক্ত জনেরা।তাদের বক্তব্য এই বৃদ্ধ তার সারা জীবন ধরে যেভাবে সম্প্রীতির বার্তা গোটা বাংলা সহ বিদেশ দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তা এক অন্যান্য নজীর।তাই শুধু রাজ্যের বা রাজ্যপালের নয়,সেই সঙ্গে কেন্দ্র থেকে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাওয়া উচিত এই বৃদ্ধের,আমরা এর জন্য আবেদন জানাবো।
যদিও এ বিষয়ে পাহারাদার চমত সেতুয়া বলেন,”এই বাবাকে পাহারা দেওয়া আমার প্রধান কাজ এবং সেইসঙ্গে অগণিত ভক্ত জনের মধ্যে মেলবন্ধন এবং সম্প্রীতি ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এতদিন দায়িত্ব পালন করেছি।বাকি জীবনও করে যাব।তবে আবেদন রইল এই মাজার ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে।সেইদিকে একটু নজর দিক সরকার মন্ত্রী এবং বিধায়কেরা।
অন্যদিকে বলাই নায়েক,মানব দে এবং বাকি ভক্তজনের দাবি এই বৃদ্ধ চমত সেতুয়ার দাবিকে মান্যতা দেওয়া হোক।সেই সঙ্গে তাকে পুরস্কৃত করা হোক রাষ্ট্রপতি দ্বারা।কারণ এই ধরনের বিরল দৃষ্টান্ত দেশের অন্য কোথাও আছে বলে আমাদের মনে হয় না।আমাদের বাংলা সম্প্রীতির বাংলা,যা গোটা দেশ-বিদেশের না কাছে উজ্জ্বল করেছে।