নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
সিপিএমের জেলা সম্পাদক পদ থেকে সরানো হলো রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ কে।রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন জেলা সম্পাদক পদে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন সিপিআইএমের জেলা কমিটির সহ-সম্পাদক বিজয় পাল। সূত্রের খবর বেশ কিছুদিন ধরেই সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ জমা পড়েছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে।শুক্রবারই রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত এসে পৌঁছায় জেলায়।যদিও সুশান্ত ঘোষের দাবি,স্ত্রীর অসুস্থতার কারণ জানিয়ে আপাতত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন তিনি।সব মিলিয়ে জেলা সম্মেলনের আগেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এবার জেলা সম্পাদকের পদ থেকে বাদ দেওয়া হলো একসময় সিপিএমের দাপুটে নেতা তথা কঙ্কাল কান্ডের নায়ক সুশান্ত ঘোষ কে। যা নিয়ে শোরগোল জেলা জুড়ে। ঘটনা ক্রমে জানা যায় এক সময় সুশান্ত ঘোষ ছিলেন পশ্চিমবাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের দোদণ্ড প্রতাপ সিপিএম নেতা।কিন্তু ২০১১ সালে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর বেনাচাপড়ার কঙ্কাল কান্ডে তার নাম জড়িয়ে যায়।এরপর দীর্ঘদিন তিনি জেলেও ছিলেন।তারপর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবার পুনরায় দল তাকে রাজনীতিতে সুযোগ দেয়।দল তাকে জেলা সম্পাদক করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আসনে আসীন করে।সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সিপিআইএম পার্টিকে তুলে ধরার জন্য।সূত্র অনুযায়ী জানা যায় সম্প্রতি একটি ভিডিও লিক হয়ে যায়।তাতে দেখা যায় ওই মহিলার সঙ্গে অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে।এই মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।যে ঘটনায় মুখ পুড়েছে পার্টির।ওই মহিলা পার্টিতে যেমন অভিযোগ করে সেই সঙ্গে সুশান্ত ঘোষের শাস্তির দাবি করে।যদিও সেই ঘটনায় সিপিআইএম রাজ্য কমিটি থেকে একটি কমিশন গঠন করা হয়।যেই কমিশন তদন্ত করে সুশান্ত ঘোষ কে দোষী সাব্যস্ত করে।এরপরই সেই ঘটনায় এই দিন এক বৈঠকে সুশান্ত ঘোষ কে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আর তার জায়গায় দায়িত্ব পান পশ্চিম মেদিনীপুরের দীর্ঘদিনের সিপিআইএম নেতা বিজয় পাল।যদিও এই নিয়ে মুখে কুলুপ সিপিএম নেতা ও নেতৃত্বদের।এ বিষয়ে সুশান্ত ঘোষের দাবি বর্তমানে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি বিষয়টা জানেন এবং তিনিই বলবেন তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করবেন না।যদিও অন্যদিকে নতুন দায়িত্ব পাওয়া জেলা সম্পাদক বিজয় পাল এর বক্তব্য রাজ্য কমিটি চেয়েছে তাই তাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।তাছাড়াও তিনি দল থেকে অব্যাহতি জন্য আবেদন করেছিলেন তা গৃহীত হয়েছে।
এ বিষয়ে বর্তমান জেলা সম্পাদক বিজয় পাল বলেন রাজ্য কমিটিতে অভিযোগ জমা পড়েছিল যা নিয়ে খতিয়ে দেখেছিল খোদ রাজ্য কমিটি।আর তাদের সিদ্ধান্তেই বাদ দেওয়া হয়েছে সুশান্ত ঘোষ কে।তবে ভিডিও নিয়ে তিনি বলেন শুনেছি কিন্তু দেখিনি।অন্যদিকে অভিযুক্ত সুশান্ত ঘোষের দাবি তিনি বিষয়টা সম্পর্কে কিছুই বলবেন না।যা বলবে বর্তমান দায়িত্ব প্রাপ্ত জেলা সম্পাদকই বলবে।
যদিও এ বিষয়ে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল।তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার বক্তব্য এটা সম্পূর্ণ ভাবে পার্সোনাল বিষয় কিন্তু তবু বলব উনার আদ্যোপান্ত রক্ত লেগে রয়েছে।উনি একজন খুনি নেতা।সিপিএম যে এরকম খুনি নেতাকেও পার্টির জেলা সম্পাদক করতে পারে তার থেকে বোঝা যায় যে সিপিএমের এখন কি অবস্থা।