Lost Rabindra Book: মোবাইলও সোশ্যাল মিডিয়ার দাপটে হারাচ্ছে কবিগুরুর গান ও বই পড়ার নেশা!আক্ষেপ অনুরাগী সহ ব্যবসায়ীদের

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:

মোবাইল এবং ডিজিটাল যুগে হারাচ্ছে বই পড়ার নেশা,সেই সঙ্গে হারাচ্ছে রবীন্দ্রনাথের গান শোনার প্রবণতা।যদি ওই বিষয়ে দায়ী করা হয়েছে সোশ্যাল মাধ্যম,মোবাইল এবং মানুষের চাহিদাকে।একসময় রবীন্দ্র প্রেমী হওয়া মানুষজন আজ আর বই কিনতে আসছে না,আক্ষেপ বই ব্যবসায়ী সহ অনুরাগীদের।

পেরিয়েছে ২৫ শে বৈশাখ আর এই ২৫ শে বৈশাখ মহা ধুমধাম করে গোটা রাজ্যজুড়ে পালিত হয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তী।প্রভাতভেরী,শোভাযাত্রা, মূর্তিতে পরিষ্কার করে মাল্যদান এবং তাকে শ্রদ্ধা জানানো এর সঙ্গে বিভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্ন ধরনের কচিকাঁচা সহ বড়দের অনুষ্ঠান।মূলত রবীন্দ্রজয়ন্তীর প্রধান অনুষ্ঠানগুলি আয়োজিত হয় কলকাতায়  অবস্থিত কবির জন্মস্থান জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি রবীন্দ্রসদন ও শান্তিনিকেতনে। তারই সঙ্গে জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর ও মহাধুমধামে পালিত হয় এই রবীন্দ্রজয়ন্তী।ব্যাস এর পরই বাকি দিন আর মনে পড়ে না কবিগুরুকে।এখন আর আগের মত দেদার ভাবে বিক্রি হয় না কবিগুরুর রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি, গল্পগুচ্ছ,শেষের কবিতা,ডাকঘর,ঘরে বাইরে, সঞ্চয়িতা, চোখের বালি,গোরার মত বই।তারই সঙ্গে হারিয়েছে তার লেখা গান।অবসরে কেউ আর পড়েনা রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত গ্রন্থ,গল্প এবং প্রবন্ধ,শোনে না আর ” ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে”।যদিও এক সময় বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও এই রবীন্দ্র প্রেমী হয়ে উঠেছিল।অবসরে তো বটেই,বিবাহ অনুষ্ঠানেও বই উপহার দেওয়া প্রচলন ছিল ব্যাপকভাবে।জীবনে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হিসেবে বইকেই মনে করত তাও আবার যদি কবিগুরুর হয়ে থাকে।কিন্তু দিন বদলেছে, সময় বদলেছে,আজ ডিজিটাল যুগে রয়েছে গোটা ভারত বর্ষ। মানুষ বই ছেড়ে এখন মোবাইল মুখি হয়ে পড়েছে।

২৪ ঘন্টাই প্রয়োজনে,অপ্রয়োজনে মোবাইলেই মুখ দিয়ে বসে থাকে আট থেকে আশির মানুষজন।শুধু প্রয়োজনও কাজকর্মে যেমন মোবাইল ব্যাবহৃত হয়।তারই সঙ্গে অবসর পেলেই বই পড়ার বদলে মোবাইল দেখে কার্টুন,সিনেমা ওয়েব সিরিজ এবং বেশ কিছু রিল বানিয়ে কোনক্রমে দিন যাপন এই গোটা রাজ্যের সঙ্গে জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের মানুষজনের।যেখানে এক সময় রবীন্দ্রনাথ রাত কাটিয়েছিলেন সেই কলেজ অনুষ্ঠান করেই দায় সেরে ফেলেন কবিগুরুর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।কি হবে এই রবীন্দ্র বিমুখ হয়ে শ্রোতাদের!কোন দিকে যাচ্ছে সমাজ!কোন দিকে বদলাচ্ছে সমাজের গতিপথ?তা নিয়েই চিন্তায় রবীন্দ্রশিষ্যও বই বিক্রেতারা।অনুরাগীসহ বিক্রেতাদের বক্তব্য আগের তুলনায় আর রবীন্দ্রনাথের বই বিক্রি হয় না,আসেনা কবি গুরুর বিখ্যাত সঞ্চয়িতা সংগ্রহের জন্য পড়ুয়ারা।যে কয়েক জন বই সংরক্ষণে আসেন তাও মুষ্টিমেয় এবং অল্প সংখ্যক।যদিও এর জন্য দায়ী করেছেন তারা বর্তমান সমাজ ব্যাবস্থা এবং মোবাইল ও ডিজিটাল মাধ্যমকে।তবে এটা সমাজের জন্য ভালো নয় বলেও ব্যাখ্যা করেছেন এই রবীন্দ্র অনুরাগী থেকে বিক্রেতারা।

এই বিষয়ে বই বিক্রেতা গৌতম সরকার বলেন কবি গুরুর বই কেনার ক্ষেত্রে সেমিস্টার ভিত্তিক কিছু ছাত্র-ছাত্রীরা কেনে কিন্তু বাকিদের চাহিদা কমেছে।এর জন্য দায়ী গোটা সমাজ ব্যবস্থা সোশ্যাল মিডিয়া এবং মানুষের চিন্তা-ভাবনা।অনেকে সোশ্যাল সাইটে কবি গুরুর গান কবিতা নিয়ে ভুলভাল পোস্ট করছে না জেনে বুঝে।

অপরদিকে রবীন্দ্র শিল্পী জয়ন্ত সাহা কবি গুরুর চাহিদা কমার কারণ হিসাবে বলেন,”মূলত সমাজের দ্রুততার পরিবর্তন সঙ্গে এখনকার ছাত্র-ছাত্রীদের ইংলিশ মিডিয়ামের পড়াকে দায়ী করেছেন তিনি।এরই সঙ্গে তিনি বলেন এখনকার পড়াশোনাতে শুধু রবীন্দ্রনাথের বাবা মায়ের নাম লিখেই দায়িত্ব এড়িয়েছে কিন্তু রবীন্দ্রনাথ কি এবং কেন কি তার পরিচয় সেই নিয়ে পড়ানো হচ্ছে না।জানার জায়গা এখন ফাঁকা রয়ে গেছে।

এরই সঙ্গে রবীন্দ্র অনুরাগী অরূপ পাল বলেন,”এক সময় গোটা বিশ্বের সঙ্গে জঙ্গলমহলে এক সময় দাপিয়ে বেড়িয়েছে কবিগুরুর কবিতা লেখা বই এবং গান কিন্তু বর্তমানে প্রজন্ম এড়িয়েছেন সেই কবিগুরু কে।ডিজিটাল যুগের সোশ্যাল মাধ্যমে যেখানে বেশি প্রচারের জায়গা ছিল সেখানে ব্যাক্তিগত ইন্টারেস্ট না থাকায় থিতিয়ে গিয়েছে।শুধু ছাত্র ছাত্রীদের দোষ দেব না l,যারা এর ধারক ও বাহক তারাই এটাকে ঠিক ভাবে বহন করে নিয়ে যাচ্ছে না।


Share

dnews.in