নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝাড়গ্রাম:
নির্যাতন এবং পণের দাবিতে বধু কে মেরে দেওয়ার ঘটনায় শ্বশুর শাশুড়িকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল ঝাড়গ্রামের জেলা আদালত।মঙ্গলবার দুপুরে এইরকম ই সাজা ঘোষণা করে ঝাড়গ্রাম জেলা আদালতের জেলা বিচারক কল্লোল চট্টোপাধ্যায়।সাজাপ্রাপ্তরা হলেন হরি সরেন (৫২),পার্বতী সরেন (৪৭)।তাদের বাড়ি গোপীবল্লভপুর থানার অন্তর্গত ভালুকাশোল গ্রামে।
ঘটনার সুত্রপাত গত ২০২২ সালের জুন মাসে গোপী বল্লভপুর থানার অন্তর্গত ভাতভাঙ্গা গ্রামের সংলগ্ন একটি গাছের শাড়িতে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ছিতা সরেন মান্ডি নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দেহ উদ্ধারের দিনই গৃহবধুর দাদা শোভারাম মান্ডি গোপী বল্লভপুর থানায় গৃহবধুর শ্বশুর শাশুড়ির নামে লিখিত অভিযোগ জানায়।লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরের দিন সন্ধ্যাবেলায় বাড়ি থেকেই গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করে গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ। তাদের নামে ৪৯৮,৩০৪ বি এবং ৩৪ আইপিসি ধারা দিয়ে গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ ঝাড়গ্রাম আদালতে পেশ করলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।জানা গিয়েছে, ছিতা সরেন (মান্ডির)বাপের বাড়ি ভালুকাশোল গ্রামেই।২০২১ সালের বিশ্বকর্মা পুজোর সময় গ্রামেরই ছেলে সামু সরেনের সঙ্গে প্রেম করে তার বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সামুর বাবা-মা বিয়ের যৌতুকের জন্য নানাভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে গৃহবধুর উপর অত্যাচার চালাতে থাকে।এই ঘটনা ঘটার প্রায় চার-পাঁচ মাস আগে সামু ব্যাঙ্গালোরে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে চলে যায়।এই অবস্থায় ঘটনার আগের দিন ওই গৃহবধূকে মারধর করে এবং বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয় তার শশুর-শাশুড়ি।
তারপরে ওই গৃহবধূর দেহ উদ্ধার হয়।ঘটনার তদন্তকারী অফিসার কৃষ্ণা কুমার দাস আদালতে ২০২২ সালের সেপটেম্বর মাসের ৬ তারিখ চার্জসিট জমা দেয়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ৩১ তারিখ চার্জফ্রেম গঠিত হয়। ৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের ভিত্তিতে সোমবার হরি সরেন ও পার্বতী সরেনকে দোষী সাব্যস্ত করে ঝাড়গ্রামের জেলা জর্জ কল্লোল চট্টোপাধ্যায়।
এই বিষয়ে ঝাড়গ্রাম আদালতের সরকারি আইনজীবী সত্যজিৎ সিনহা বলেন,”বধূ নির্যাতনের ধারায় দু’জনকেই এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।অনাদায়ে আরো ৩ মাস জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।পণের দাবিতে বধূ কে মেরে।দেওয়ায় ধারায় দু’জনকেই সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুটি সাজা একসঙ্গেই চলবে”।