নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝাড়গ্রাম:
অবশেষে আশঙ্কা বাস্তবের রূপ নিল!ভরা পর্যটকের মরশুমে অরণ্য সুন্দরী ঝাড়গ্রামে প্রবেশ করল সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভের বাঘিনী জিনাত।তবে জিনাতকে বাগে আনতে সুন্দরবন থেকে আনা হয়েছে বাঘ ধরার স্পেশাল টিম।সারাদিন ধরে জিনাথের খোঁজে বন কর্মীরা।
উল্লেখ্য,গত শুক্রবার সকালে ঝাড়খণ্ড ছেড়ে বাংলায় ঢুকে পড়েছে তিন বছরের বাঘিনী জিনাত।শুক্রবার ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি ব্লকের কটুচুয়া-মাজগেড়িয়ার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে জিনাত।জিপিএস ট্র্যাকারে এমনই চিত্র দেখতে পেয়েছে বনদপ্তর।তারপর থেকেই বাংলা-ওডিশা-ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বনদপ্তরের আধিকারিক থেকে শুরু করে বনকর্মীরা বেলপাহাড়িতে তৎপরতা চালিয়েও জিনাতকে বাগে আনতে পারেনি।কটুচুয়া গ্রামে সকাল থেকেই উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম, ওডিশার সিমলিপাল ফরেস্ট রিজার্ভের কর্মী, ঝাড়খণ্ডের বনদপ্তরের কর্মীরা।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে,এদিন সকাল থেকে কটুচুয়া, মাজগেড়িয়া গ্রামে বনদপ্তর ও পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করে জনসাধারণকে সচেতন থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে।একা কেউ জঙ্গল রাস্তা দিয়ে যাতে চলাফেরা না করে সে কথাও বার বার মাইকিং করে গ্রামে বলা হচ্ছে বনদপ্তর এর পক্ষ থেকে।এদিন সারাদিন কটুচুয়ার জঙ্গলেই জিনাত ছিল বলে জানা গিয়েছে।তারপর বিকেল হতেই সেখান থেকে সরে গিয়ে চিড়াকুটির দিকে এগিয়ে এসেছে বাঘিনী।
যদিও এই বিষয়ে কটুচুয়ার বাসিন্দা নরেন মাণ্ডি বলেন,”বনদপ্তর থেকে মাইকিং করে বলা হচ্ছে জঙ্গলে ছাগল-গোরু নিয়ে চরাতে যাওয়া যাবে না।বাঘ ঢুকে পড়েছে কটুচুয়ার জঙ্গলে।খুবই ভয় লাগছে”।অন্যদিকে ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, “জঙ্গলে যেহেতু বাঘ রয়েছে তাই সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করব আপনারা এই মুহূর্তে কেউ জঙ্গলে যাবেন না।অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে সকল গ্রামবাসীকে। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে এলাকায় ২৪ ঘন্টা গাড়ি রাখা হচ্ছে।যদি গ্রাম থেকে কোথাও মানুষজনকে যেতে হয় তাহলে অবশ্যই বিট অফিসার,রেঞ্জ অফিসারদের জানিয়ে যেতে হবে।অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে আমরা সমন্বয় রেখে কাজ করছি”।
এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন,”ওই এলাকায় বাঘ ধরার জন্য বনদপ্তরের বিশেষজ্ঞ টিমকে পাঠানো হয়েছে।কলকাতার অরণ্য ভবন থেকেও নজরদারি রাখা হচ্ছে।সুন্দরবন থেকে একটি স্পেশাল টিমকে বেলপাহাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।বাঘিনী খুব তাড়াতাড়ি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে।যার ফলে সহজেই ধরা পড়ছে না। পুরো ব্যাপারটাকেই বনদপ্তর নজরদারির চালিয়ে যাচ্ছে”।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন মানচিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হল অরণ্য সুন্দরী ঝাড়গ্রাম।প্রতি বছর এই শীতের সময় প্রচুর পর্যটকের ঢল নামে ঝাড়গ্রামে। সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ থেকে জিনাত ঝাড়গ্রাম জেলার বর্ডার সংলগ্ন ঝাড়খন্ড রাজ্যের চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গলে পৌঁছাতে জিনাতের ভয়ে বহু পর্যটক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল অরণ্য সুন্দরীর দিক থেকে।এবার ঝাড়গ্রামে ঢুকে পড়েছে বাঘিনী।ফলে পর্যটন শিল্পে চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছে ঝাড়গ্রামের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।