BGBS SUMMIT:বাংলা মানেই বাণিজ্য!BGBS সম্মেলনে প্রথম দিনেই 91 হাজার কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগ

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা:

বুধবার,কলকাতায় শুরু হলো দুই দিনব্যাপী বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটের অষ্টম সংস্করণ।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ‘বাংলা মানেই বাণিজ্য’-এর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত করে বাংলার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ। বিনিয়োগ করা হবে সালবনিতে নতুন প্রকল্পে।

এইদিন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন দেউচা পাঁচামি প্রকল্পের গঠিত হলো ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটি।রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ-এর চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি বলেন “বাংলা নবজাগরণের ভূমি, যা এখনও ব্যবসা ও অর্থনীতির নবজাগরণের সাক্ষী।মমতা দিদির নেতৃত্বে বাংলা মানেই বাণিজ্য,আর এই বাণিজ্য তিনি হৃদয় থেকে করেন।আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গোয়েঙ্কা বর্তমান ৪০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ-এর চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি বাংলায় এটাই বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় বলে অভিহিত করেছেন এবং ঘোষণা করেছেন যে এই দশকের শেষে রিলায়েন্স বাংলায় ৫০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে।জেএসডব্লিউ গ্রুপের চেয়ারম্যান সজ্জন জিন্দাল জানিয়েছেন যে দলটি শালবনিতে দুটি ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৬,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে।

পাশাপাশি দুর্গাপুর বিমানবন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়ন ও একটি শিল্প পার্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
অম্বুজা নেওটিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষ নেওটিয়া জানিয়েছেন যে, আগামী পাঁচ বছরে তারা প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে।তিনি এও বলেন বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট, যা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রধান ব্যবসায়িক উদ্যোগ,সেটির লক্ষ্য হল নীতি নির্ধারন,কর্পোরেট নেতৃবৃন্দ,ব্যবসায়িক প্রতিনিধি, উদ্যোক্তা,শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের একত্রিত করা।এই সম্মেলনের মাধ্যমে রাজ্যের শিল্প পরিকাঠামো ও ব্যবসা-বান্ধব নীতিগুলি উপস্থাপন করা হয় এবং কৌশলগত ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ৪০টি দেশের ২০০ জন বিদেশি প্রতিনিধি ও ২৫ জন রাষ্ট্রদূত এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন, যার মধ্যে রয়েছে ২০টি অংশগ্রহণকারী দেশ।

বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন আমি এই বিজনেস সামিট আয়োজন করি? আমি বলি, আমরা শুরু করেছিলাম, আর এখন প্রতিটি রাজ্য এটি করছে। তাহলে সমস্যাটা কোথায়।আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরও বেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উৎসাহিত করতে হবে।কর্মসংস্থান ছাড়া তরুণ সমাজের ভবিষ্যৎ নেই। তাদের কথা ভেবেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। বাংলা আজ ভারতের অন্যতম নিরাপদ ও স্মার্ট বিনিয়োগ গন্তব্য।”পাশাপাশি তিনি গত সামিট গুলিতে আসা বিনিয়োগ বিশদে উল্লেখ করে,বলেন,”গত সাতটি সংস্করণে,১৯.৫১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব আমরা পেয়েছি।

যারা রাজনীতি করতে চান, তাদের কাছে আমি কোনও ব্যাখ্যা দিতে চাই না, কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়া আমার দায়িত্ব, কারণ আমার সরকার তাদের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ১২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি মূল্যের প্রকল্প ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাকি প্রকল্পগুলি বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। আমি তথ্য-প্রমাণসহ কথা বলছি। কিন্তু ওদের কাছে কি কোনও প্রমাণ আছে? ”মুখ্যমন্ত্রী আরও ঘোষণা করেন, দেউচা পাঁচামি প্রকল্প, যা এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি, আগামীকাল ব্যাসল্ট খনন দিয়ে কাজ শুরু হবে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেউচা পাঁচামিতে কয়লা খনন শুরু করতে গেলে প্রথমে পুরু ব্যাসল্ট স্তর সরাতে হবে।তিনি বলেন,”বাংলার শ্রীবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি দেউচা পাঁচামি,যা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম কয়লা খনি, যেখানে ১,২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা ও ২,৬০০ মিলিয়ন টন ব্যাসল্ট মজুত রয়েছে।

কয়লা উত্তোলনের জন্য উপরের স্তর অপসারণের অংশ হিসেবে ব্যাসল্ট খনন আগামীকাল থেকে শুরু হবে।আগামী ১০০ বছরে আর বিদ্যুৎ সংকট হবে না।সেখানে জমি অধিগ্রহণ-সহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।স্থানীয় ও আদিবাসী মানুষদের সমস্ত পরিষেবা ও ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়েছে। আমি বীরভূমের মানুষদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এখানে এক লক্ষেরও বেশি মানুষ কাজ করবেন,পাশাপাশি গড়ে উঠবে অনুসারী শিল্পও।”

তিনি আরও জানান যে,বিনিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্য সরকার একটি নতুন “স্টেট-লেভেল ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটি” গঠন করবে। তিনি বলেন, “আমরা ‘Ease of Doing Business’-এ সর্বোচ্চ পুরস্কার পেয়েছি।এটিকে আরও উন্নত করতে আমি ঘোষণা করছি যে রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি নতুন স্টেট- লেভেল ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটি গঠিত হবে। এটি বিনিয়োগ প্রকল্পগুলির জন্য একটি একক, সময়সীমার মধ্যে অনুমোদন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবে।জমি, ফায়ার ব্রিগেড, অর্থনীতি, ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগ (MSME), বিদ্যুৎ, আবাসন, কৃষি, শিল্প সবকিছু দ্রুত সমাধান করা হবে। এটি শুধু ‘সিঙ্গল উইন্ডো’ ফর্মুলার বিষয় নয়, বরং প্রকৃতপক্ষে একটি সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিত করা হবে। তারা প্রতি পনেরো দিনে একবার বৈঠক করবে, যাতে কোনও প্রকল্প বিলম্বিত না হয়।”


Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

dnews.in