
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
দু,দুটি বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েও সুস্থ করছে মেদিনীপুর।মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারদের চিকিৎসার ফলে সুস্থ হচ্ছে অটোইমিউন ডিজ়অর্ডার,জেনেটিক রোগ ও স্নায়ুর জটিল অসুখে আক্রান্ত হওয়া বছর একুশের সন্তোষ হেমব্রম।এই ঘটনায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কে ধন্যবাদ জানালো পরিবার।

একটি বিরল রোগ নয়,দু দু’টি রোগে আক্রান্ত ঝাড় গ্রামের যুবক, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে শরীর।বিরল রোগের সংখ্যা দেশে কম নয়। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে অন্তত ৭ কোটি মানুষ কোনও না কোনও বিরল রোগে আক্রান্ত। সেই তালিকায় রয়েছে নানা ধরনের অটোইমিউন ডিজ়অর্ডার,জেনেটিক রোগ ও স্নায়ুর জটিল অসুখ। এইসব রোগের চিহ্ন শনাক্ত করা যেমন কঠিন, চিকিৎসাও ততটাই জটিল।তবে একসঙ্গে দুটি বিরল রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে কী হতে পারে তা বোঝা যায় ঝাড়গ্রামের ২১ বছরের যুবক সন্তোষ হেমব্রমের কাহিনিতে।মুলতবিসন্তোষ গত তিন বছর ধরে কোমরের ব্যথা,শরীরের জয়েন্টে ফোলাভাব,হাঁটাচলায় কষ্ট এবং শুকনো কাশি ও জ্বরের মতো উপসর্গে ভুগছিলেন। স্থানীয় চিকিৎসা চললেও কোনও স্থায়ী সাড়া মেলেনি। পরে তিনি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হলে দেখা যায়,রোগটি আসলে সাধারণ নয়।

চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানতে পারেন,সন্তোষ আক্রান্ত হয়েছেন অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস ও অ্যান্টি-সিন্থেটেজ সিনড্রোম দুটি বিরল অটোইমিউন রোগে।প্রথমটি মূলত মেরুদণ্ড ও জয়েন্টকে শক্ত করে দেয়,দ্বিতীয়টি পেশি দুর্বল করে ও ফুসফুসে প্রদাহ ঘটায়।একই সাথে দুটি রোগই একজন মানুষের শরীরে ঘটেছে,বিশ্বে এ ধরনের মাত্র দুইটি কেস আগে নথিভুক্ত হয়েছে যদিও।তবে সন্তোষের ঘটনা তৃতীয়।বর্তমানে সন্তোষের চিকিৎসায় স্টেরয়েড ও ইনফ্লিক্সিম্যাব ব্যবহার করা হয়েছে। ফিজিওথেরাপি ও শ্বাস প্রশমনের প্রশিক্ষণও চলছে। উপসর্গের উন্নতি দেখা যাচ্ছে। যদিও বর্তমানে সন্তোষের চিকিৎসায় স্টেরয়েড ও ইনফ্লিক্সিম্যাব ব্যবহার করা হয়েছে। ফিজিওথেরাপি ও শ্বাস প্রশমনের প্রশিক্ষণও চলছে।উপসর্গের উন্নতি দেখা যাচ্ছে।বর্তমানে মেদিনীপুর হাসপাতালের জেনারেল মেডিসিন বিভাগের হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট,ড: যুগল কিশোর কর এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, বিকাশ চন্দ্র শেঠ অধীনে রোগী চিকিৎসাধীন আছে।

এই বিষয়ে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার স্পন্দন চৌধুরী বলেন,এই রোগ সাধারণত পৃথিবীতে তৃতীয় বিরল।শরীরের তুলনায় পা গুলো সরু সরু।এর সমস্যা আছে পা গুলো একসাথে জুড়ে যাওয়ার।এ প্রায় ৪০ দিন আগে এসেছিল এবং আমরা পুরো বিষয়টা দেখে আমাদের সিনিয়র ডাক্তারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন এই রোগীকে ট্রিটমেন্ট করার।যদিও আস্তে আস্তে সুস্থ হচ্ছে সন্তোষ।আশা করবো খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে সে।

রোগী সন্তোষ হেমব্রম এর বক্তব্য অনেক জায়গায় দেখিয়েছি কিন্তু কোন সূরাহা হয়নি।অবশেষে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে এলে চিকিৎসকেরা ট্রিটমেন্ট করেন এবং এখন আমি পা গুলো খুলতে পেরেছি।

অন্যদিকে সন্তোষের মা ফুলমনি হেমব্রম বলেন,”ও যখন উচ্চ মাধ্যমিকে পড়তো তখন থেকেই সমস্যাটা শুরু হয়।আমরা বহু জায়গায় ওকে নিয়ে দৌড়েছি চিকিৎসা করানোর জন্য কিন্তু কোন লাভ হয়নি।তবে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের এই ডাক্তার বাবুরা চিকিৎসা করে ওকে সুস্থ করে তুলছেন আস্তে আস্তে।ওনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ।