
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদ বলে আখ্যা দেওয়া প্রশ্নকে ঘিরে চাঞ্চল্য পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে।যদিও তড়িঘড়ি দুই মেম্বারকে অপসারিত করে ক্ষোভ প্রশমিত করল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়।এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কুমার কর।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,গত বুধবার ছিল বিদ্যাসাগর নামাঙ্কিত জেলা শহর এবং রাজ্যের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টার।আর সেই সেমিস্টারের পরীক্ষা নিতে গিয়েই চক্ষু ছানাবড়া পরীক্ষার্থীদের।দেখা যায় সেই ইতিহাসের প্রশ্নে লেখা রয়েছে”মেদিনীপুরের তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নাম করো যারা সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা নিহত হন?”এই প্রশ্ন ঘিরেই উঠতে শুরু করে প্রশ্ন।এই নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটিতে এই প্রশ্ন নিয়েই এবং বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটির গাফিলতি নিয়ে অভিযোগ জমা দেয়।”শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ”এর অভিযোগ এই ধরনের ঘটনা লজ্জা জনক,অগ্রহণযোগ্য দূরভিসন্ধীমূলক।কেন মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের অসম্মান করা হলো এবং এই ধরনের সন্ত্রাসবাদি আখ্যা দেওয়া হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

যদিও এই প্রশ্ন এরপর সোশ্যাল মাধ্যম ফেসবুক, ইনস্টা গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদের ঝড় উঠে গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে।দলমত নির্বিশেষে সকলে এর প্রতিবাদ করেন,প্রতিবাদ করেন মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের বংশধরেরা।যদিও এই নিয়ে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।এইদিন সাংবাদিক বৈঠক করে উপাচার্য দীপক কুমার কর বলেন,”গতকাল সেমিস্টারের প্রশ্নে যে ভুল ধরা পড়েছে তা আমাদের অনিচ্ছাকৃত জন্য ঘটেছে। যার জন্য আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। পাশাপাশি তিনি এও বলেন এই ঘটনার জন্য আমরা তড়িঘড়ি বৈঠক দেখেছি বৈঠক করেছি সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে থাকা শিক্ষক ও ব্যক্তিদের সঙ্গে। আমরা পুরো ঘটনার তদন্ত করেও দেখেছি। তা দেখে মনে হয়েছে এই ঘটনা প্রিন্ট মিসটেক হয়ে গিয়েছে।সেই সঙ্গে সঙ্গে এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের মধ্যে ইউজি বোর্ড অফ স্টাডিজের চেয়ারম্যান এবং মডারেশন বোর্ডের মেম্বার কে তাদের কাজ থেকে অব্যাহতি দিলাম।এটা সর্ব সিদ্ধান্ত মতে গৃহীত হয়েছে।সেই সঙ্গে আগামী দিনে যাতে এই ধরনের কোন ভুল না ঘটে, তার জন্যও আমরা সদা সতর্ক সচেতন থাকবো।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতীয় স্বাধীনতার সংগ্রামে সবচেয়ে বেশি বিপ্লবীদের জন্মস্থান হল অখন্ড মেদিনীপুর জেলা। সে সময় তিন কুখ্যাত ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট পেডি, বার্জ ও ডগলাস কে তাদের কাজকর্মের জন্য হত্যা করেছিল মেদিনীপুরের বিপ্লবীরা।মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে, জেলা পরিষদে এবং জেলা পুলিশ লাইনে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে ভয় ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ইংরেজদের বুকে।শুধু ক্ষুদিরাম বসু তা নন বিমল দাশগুপ্ত সহ অনাথ বন্ধু পাঁজা মৃগেন দত্ত একাধিক বিপ্লবীদের নাম জড়িয়েছিল তৎকালীন সময়ে।যে ক্ষেত্রে হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে প্রাণ দিয়েছিলেন তৎকালীন বিপ্লবীরা।আর সেসব বিপ্লবীদের স্মরণ করার পরিবর্তে তাদেরকে সন্ত্রাস বলে আখ্যা দেওয়াতে উঠেছে জেলা জুড়ে প্রতিবাদ।