
কোলকাতা 14 ই সেপ্টেম্ব:
গ্রামীণ উন্নয়নকে এবার ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী নিয়েছে রাজ্য সরকার এরকম খবর নবান্ন সূত্রে। মূলত সংবাদপত্রে জানা গিয়েছে আগামী অর্থবর্ষে গ্রামীন পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রায় 1400 কোটি টাকা বরাদ্দ স্থির করা হয়েছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে একাধিক প্রকল্পগুলি।

মূলত পুজোর পরে ভোটের দামামা বেজে যাবে। ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইতে হবে টক্করে টক্করে। তবে তার আগেই গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়নে কল্পতরু হতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সংবাদ সূত্রে খবর,সরকারি নথি অনুযায়ী, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে আসন্ন 2025-26 অর্থবর্ষে বরাদ্দ ধরা হয়েছে 15 হাজার 486 কোটি টাকা। এর ফলে গ্রামীণ পরিবার গুলিকে পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। একইভাবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে বরাদ্দ হয়েছে 26 হাজার 200 কোটি টাকা।রাজ্যের দাবি, গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এই প্রকল্প ইতিমধ্যেই সাফল্য পেয়েছে। এবার বরাদ্দ বাড়ায় আরও বেশি মহিলা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। কৃষক বন্ধু (নতুন) প্রকল্পে বাজেট ধরা হয়েছে 4 হাজার 781 কোটি টাকা। রাজ্যের কৃষক সমাজকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করতে এবং কৃষিকাজে স্থায়িত্ব আনতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

পাশাপশি কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে 2 হাজার কোটি টাকা, যা কন্যাশ্রীর আওতায় থাকা ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার সুযোগ আরও প্রসারিত করবে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে প্রায় 3 হাজার 850 কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে, যা গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা পেতে সহায়তা করবে।সরকারের দাবি, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার মাঝেও মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,এই পদক্ষেপ তার স্পষ্ট প্রমাণ।রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই বাজেট বরাদ্দের ফলে শুধু আর্থিক সাহায্য নয়, গ্রামীণ মানুষের সামাজিক সুরক্ষাও আরও জোরদার হবে। বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে বহু পরিবার পাকা বাড়ির সুবিধা পাবে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলবে, কৃষক বন্ধু প্রকল্প কৃষকদের আয় বাড়াবে, কন্যাশ্রী প্রকল্প শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে এবং স্বাস্থ্যসাথীর সম্প্রসারণের ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও চিকিৎসা সুরক্ষা সহজলভ্য হবে।

সংবাদ সূত্রে “কেন্দ্রীয় সরকার বহু ক্ষেত্রেই রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ আটকে রেখেছে। বিশেষত গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল পর্যাপ্ত পরিমাণে না পাওয়ায় একাধিক প্রকল্প সমস্যায় পড়েছে। তবুও মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, কেন্দ্রের সহযোগিতা না পেলেও গ্রামীণ মানুষের জন্য কাজ চলবে। 1400 কোটি টাকার এই বিনিয়োগের লক্ষ্যই প্রমাণ করে যে রাজ্য সরকার পিছপা নয়।”রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বাজেটকে রাজনৈতিক বার্তা হিসেবেও ব্যবহার করতে চাইছেন। রাজ্যের দাবি, গ্রামীণ এলাকায় মানুষ যাতে শহরের সমান সুযোগ পান, সেই লক্ষ্যেই এত বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। রাস্তা, বাড়ি, আলো, পানীয় জল এবং চিকিৎসার মতো মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত হলে গ্রামীণ জীবনযাত্রার মানও অনেক উন্নত হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বরাদ্দ বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান বাড়বে, তেমনই গ্রামীণ অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। বাংলার গ্রামীণ মানুষ সরাসরি এই প্রকল্পগুলির সুফল ভোগ করবেন। শুধু তাই নয়, কৃষি, পরিষেবা এবং ক্ষুদ্র শিল্প খাতেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।সব মিলিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগের মাঝেও রাজ্য সরকার যে উন্নয়নের পথে অটল, তা স্পষ্ট করছে এই উদ্যোগ। নবান্নের আশা, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হলে বাংলার গ্রামীণ চেহারায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে।