
রবীন্দ্রনগর 24 সেপ্টেম্বর:
আর নয় এবার ভাবতে হবে? কেনই বা ভাবতে হবে বা কি নিয়ে ভাবতে হবে তার জন্যই রবীন্দ্রনগর পুজো কমিটির ছাপান্ন তম বর্ষের থিম এবার ভাবতে হবে। মূলত জলকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কি কি করণীয় বা এই জলের পরিবেশে থাকা জীবজন্তু প্রাণীরা কি অবস্থায় রয়েছে সেই দৃশ্য তুলে ধরতেই রবীন্দ্রনগরের থিম এবারে। ৫৬ তম বর্ষের ২৩ লক্ষ টাকা বাজেটের থিম এবার ভাবতে হবে।

এবার ভাবতে হবে এই ধরনের থিম নিয়ে এলো রবীন্দ্রনগর পুজো দুর্গোৎসব কমিটি।মূলত গোটা মানবজগৎ তৈরি হয়েছে জলকে কেন্দ্র করে জল ছাড়া কখনোই জীবন সম্ভব নয় এবং ধীরে ধীরে এই জলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে জনবসতি,শহর,অঞ্চল মানুষের জীবনযাত্রা।কিন্তু পরবর্তীকালে ক্রমাগত মানুষের অসচেতনতার কারণ সে সঙ্গে অসতর্কতার ফলে নষ্ট হচ্ছে জলের পরিবেশ।এই মন্ডপকর্তাদের মতে শুধু নদী নালা নয় সেইসঙ্গে খাল বিল এবং সমুদ্রেও প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য পদার্থ সে সঙ্গে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। যা একদিকে সমুদ্রে বা নদীতে থাকা সমস্ত জলজ প্রাণী আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে তাদের জীবনযাত্রা।অন্যদিকে সেগুলো গিয়ে বাস্তু তন্ত্রে গিয়ে জমা হচ্ছে এবং যার ফলে নষ্ট হচ্ছে সেই জীবন দায়ী জল।এছাড়াও বিভিন্ন জলাশয়,জলাভূমি ভূমি বন্ধ করে রাতারাতি অট্টালিকা গড়ে তোলা হচ্ছে ফলে যার ফলে ব্যাপক পরিমাণে অপচয় হচ্ছে পানীয় জলের।

তাই জলকে আর নষ্ট করা নয় বরং সতর্কতা সচেতনতা নিয়ে জলকে সংরক্ষণ করা এবং তার জন্য ভাবতে হবে গোটা মানবজাতিকে।এই ধরনের চিন্তাভাবনা নেই এই পুজো কমিটির ৫৬ তম বর্ষে এবারের ২৩ লক্ষ টাকা খরচা করে “এবার ভাবতে হবে” থিম। এই থিমের মন্ডপে প্রথমে ঢুকলেই দেখানো হয়েছে বেনারসের আদলে সন্ধ্যা আরতি। তার মাধ্যমে এই বার্তায় তুলে দেখা হয়েছে যে প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ নদী জলকে সম্মান করেছে। জল কে পবিত্রতা মনে করে পূজো করে এসেছে। যার জন্য টিকে আছে এই আদিম মানব জাতি।এরপরেই মণ্ডপে প্রবেশ করার পরেই দেখা যাবে অসংখ্য মাছ জলজ প্রাণী জেলেফিশ অক্টোপাস সহ সমস্ত রকম সামুদ্রিক জীব রয়েছে যারা জলের মধ্যে কিভাবে জীবন কাটাচ্ছে সেগুলি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।এর সঙ্গে কথা কাহিনীর জলপরীর তুলে ধরা হয়েছে এই মন্ডপে।সেই সঙ্গে মা দুর্গা তৈরি করা হয়েছে,তৈরি করা হয়েছে সাউন্ড সিস্টেম।এই মণ্ডপ টি মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হয়।

এ বিষয়ে ক্লাব কর্তা শুভজিৎ মন্ডল বলেন,”মানব জাতির গঠন হওয়ার পেছনে জলের ভূমিকা অনস্বীকার্য এবং জলকে কেন্দ্র করেই সমস্ত রকম জনবসতি গড়ে উঠেছে আদিম যুগ থেকে। কিন্তু মানুষ তার অসচেতনতা এবং জ্ঞানের অভাবে সেই জলকে নষ্ট করে যাচ্ছে।নদী নালা খাল বিল সেই সঙ্গে সমুদ্রে নোংরা ফেলে ফেলে নষ্ট করছে বাস্তুতন্ত্র সেইসঙ্গে সে বর্জ্য পদার্থ বাস্তুতন্ত্রে গিয়ে আটকে পানীয় জল সংকট দেখা দিয়েছে। এরই সঙ্গে এই জলে থাকা জলজ জীব গুলি কিভাবে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে কোনক্রমে তাও আমরা ফুটিয়ে তুলেছি মন্ডপে।তাই আমরা মানুষকে সময় দিয়েছি এবার ভাবতে হবে থিমের মধ্য দিয়ে।”

অন্যদিকে আরেক ক্লাব কর্তা পার্থ মন্ডল বলেন,”আমরা তাই মন্ডপে ঢোকার মুখে বেনারসের আদলে সন্ধ্যারতি দেখিয়েছি এই বার্তা দিতে যে প্রাচীন কাল থেকে কিভাবে জলকে পুজো করে এসেছে মানুষ এবং এর পরে আমরা ভেতরে প্রতিমা সহ পুরো মণ্ডপের কারুকার্যই গড়ে তোলা হয়েছে জলের ভেতরের পরিবেশ নিয়ে।আমরা আশা করছি এবারের মন্ডপ নজর কাড়বে জেলার মানুষের।