ICDS Center:”দুয়ারে ICDS”মাথার ছাদ না থাকায় লোকের বাড়িতে রান্না করে খাবার বিলি করেন ICDS কেন্দ্রের কর্মী

Share

চন্দ্রকোনা 21 সে নভেম্বর:

আজব এক ICDS কেন্দ্র।খাতা-কলমে ICDS কেন্দ্র উল্লেখ থাকলেও কোথাও নেই ICDS কেন্দ্রের নিজস্ব ঘর,কেন্দ্রে আসেনা ছোট্ট ছোট্ট শিশুরা। গ্রামের প্রতিটি প্রান্তে ঘুরে সকালে রান্নাটুকু হয়,সেই রান্নায় টিফিন ভর্তি করে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।এই ICDS কেন্দ্রের একমাত্র কর্মী অসুস্থতার জন্য আসেন না,পরিবর্তে তার স্বামী কেন্দ্র পরিচালনা করছেন।

দুয়ারে সরকার হয়েছে,যেখানে সমস্ত সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া গিয়েছে ক্যাম্পের মাধ্যমে।দুয়ারে মেডিকেল সুবিধেতে ভ্রাম্যমান অ্যাম্বুলেন্স এর মধ্য দিয়ে সরকারি সুযোগ সুবিধা এবং চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া গিয়েছে।এবার দুয়ারে আইসিডিএস অর্থাৎ ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া বললেও বলা চলে এমনই ঘটনা
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের শোলা দুই গ্রামের শোলা ৩ নম্বর ২১১ ICDS কেন্দ্রর। যদিও এই কেন্দ্রে রাঁধুনি নেই, এ কেন্দ্রটি চালান তার স্বামী।এই কেন্দ্র থেকেই প্রতিনিয়ত ৫৭ জন শিশু ও প্রসূতি মহিলার পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। সূত্র অনুযায়ী কেন্দ্রের একমাত্র শিক্ষিকা দিপালী করন শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনিও বেশ কিছুদিন ধরে আসেন না কেন্দ্রে।তার পরিবর্তে স্বামী যুধিষ্ঠিরকরণ কেন্দ্রটি চালান। ছমাস গ্রামের একটি বাড়িতে,আবার ছ মাস অন্য একটি বাড়িতে,কোন কোন বাড়িতে আবার দু’মাস অস্থায়ীভাবে রান্না করে বেড়ান যুধিষ্ঠির করন।

আর সেই খাবারই তুলে দেওয়া হয় এই ছোট ছোট শিশু এবং তাদের মায়েদের।এমন পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ।সকলেই বলছেন বারে বারে প্রশাসনকে জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।গ্রামের শাসক দলের নেতাকর্মীরা বলছেন,ICDS কেন্দ্রের এমন পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত গ্রামবাসীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।তবে ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর দীর্ঘদিন ধরে অর্থের টান থাকায় কেন্দ্রটির বাড়ি নির্মাণ করা হয়নি।তবে এবার ওই কেন্দ্রটির নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হবে। এই ঘটনায় ক্ষোভ জমেছে অভিভাবক থেকে স্থানীয় মানুষ এবং খোদ শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের মধ্যে। যদিও এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি।চন্দ্রকোনা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সূর্যকান্ত দোলই বলেন,ওই ICDS কেন্দ্রটির ভবন নির্মাণের জন্য অনুমোদন চলে এসেছে, দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু হবে।ভবন নির্মাণ হলে স্থায়ী ঠিকানা হবে।

এই বিষয়ে অভিভাবক মাম্পী খাতুন,আতাউল খাঁন’রা বলেন,”আমরা খাবার নিতে আসি ঠিকই কিন্তু এখানে কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই।আইসিডিএস কর্মী নিজে সাইকেলে করে খাবার দিতে আসেন ভিন্ন জায়গা থেকে। যদিও এই খাবার আমরা ভয়ে ভয়ে বাচ্চাকে অনেক সময় খাওয়ায় না বড়রা খায় বা খাবারটা নিয়ে গিয়ে ফেলে দিই।কারণ খোলা আকাশের নিচেও এই আইসিডিএস রান্না হয়,তাই আমাদের ভয় লাগে এই খাওয়ার খাওয়াতে।

অন্যদিকে ICDS কর্মীর স্বামী যুধিষ্ঠির করণ বলেন, “আমার স্ত্রী আইসিডিএস কর্মী কিন্তু তার অসুস্থতার জন্য আমি পুরোটা দেখভাল করি। আমাদের রান্না করার জায়গা নেই দীর্ঘ আট বছর ধরে।আমি এই বাড়িতে দুমাস,ওই বাড়িতে দু’মাস এভাবে বাইরে বাইরে রান্না করে এই বাচ্চাদের জন্য খাবার মুখে তুলে দিই। বহুবার আবেদন নিবেদন করেছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি শুধু আশ্বাস মিলেছে,হয়ে যাবে হয়ে যাবে।”

তবে এই বিষয়ে পাল্টা চন্দ্রকোনা-১ পঞ্চায়েত সমিতি সহ সভাপতি সূর্যকান্ত দোলই বলেন,”বিষয়টা আমরা জানি ঘটনাটা সত্যি।এই নিয়ে আমরা বহুবার টেন্ডার ডেকেছি কিন্তু হয়েও হয়েও ওঠেনি আইসিএস কেন্দ্র।এরকম ঘটনা এলাকায় রয়েছে,তবে আমরা চাইছি খুব দ্রুত টেন্ডার ডেকে আইসিডিএস কেন্দ্র তৈরি করে এই সমস্যার সমাধান করতে।

এই বিষয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক নন্দ নিয়োগ বলেন তৃণমূল এখন এসব আইসিডিএস সেন্টার বানায় না,তারা খেলা মেলা নিয়ে মত্ত।এই ব্যাপারটা বর্তমানে মানুষজন বুঝেছে। ২০২৬ এ তারা এগুলি ভালো করে বুঝে সঠিক জায়গায় ভোট দিয়ে উৎখাত করবে তৃণমূলকে।

উল্লেখ্য,কেন্দ্র পরিচালনা থেকে শিশু ও প্রসূতি মহিলাদের পুষ্টিকর খাবার তুলে দেওয়ার দায়িত্ব এভাবেই একজন মহিলা কর্মীর স্বামীর উপর থাকবে?


Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

dnews.in