নিজস্ব প্রতিনিধি,মহিষাদল:
মহিষাদল রাজ কলেজের এবারের থিম ‘বইয়ের দেশ’।মূলত পড়ুয়ারা প্রাচীনকালে ব্যবহৃত বেশকিছু বই,কলম দিয়ে গড়ে তুলেছে সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ।বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে মোবাইল ফোন এখন ধ্যান-জ্ঞান।পরিস্থিতি এমন তৈরি হয়েছে যেন এক মুহুর্ত মোবাইল ফোন ছাড়া থাকা সম্ভব নয়।এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের বইকে সঙ্গী করতে অভিনব উদ্যোগ পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া মহকুমার মহিষাদল ব্লকের স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের।
এক সময় ছিল যখন বই না পড়লে ঘুম আসতো না সেই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের।এছাড়াও জন্মদিন,বিয়ে বাড়ি সহ বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠানে বই গিফট দেওয়ার চল ছিল এবং সেই গিফট পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যেত আয়োজনকারী অনুষ্ঠানের লোকজন। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম মোবাইলে অভ্যস্ত হওয়ায় হারিয়েছে বই পড়ার নেশা,হারিয়েছে বই পড়ার আসক্তি।এখন আর সেভাবে জন্মদিন অনুষ্ঠান বিয়ে বাড়িতে বই গিফট দেওয়ারও প্রচলন প্রায়-ই উঠে গিয়েছে।এবার সেই শ্রোতাদের আবার বইমুখো করতে এবারের সরস্বতী পুজোর থিম বইয়ের দেশ।পুরনো দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা বই কলম সহ পড়াশোনার আসবাবপত্র দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই ইউনিক মন্ডপ।যা দেখতে ইতিমধ্যেই ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয়রা
এই বিষয়ে অধ্যক্ষ গৌতম মাইতি বলেন, ‘বইয়ের বিকল্প আর কিছু হতে পারে না।বই সারা জীবনের সঙ্গী।তবে বর্তমানে ডিজিটাল দুনিয়ার যুগে বই যেন ব্রাত্য হয়ে উঠেছে।বই পড়ার আগ্রহ কমেছে।সেই আগ্রহ বাড়াতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সেই বার্তা তুলে ধরতে এই থিম।’পাশাপাশি, মহিষাদল গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রীরা বই ও ডিজিটাল পরিষেবার গুরুত্ব ফুটিয়ে তুলেছে তাদের পুজোর থিমে।স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পারমিতা গিরি বাগ বলেন, ‘বর্তমান সময়ে ডিজিটালের প্রয়োজন থাকলেও বই ব্রাত্য হতে পারে না। তাই ডিজিটালের পাশাপাশি ছাত্রীদের সামনে বইয়ের গুরুত্ব তুলে ধরতেই আমাদের এই পরিকল্পনা। ছাত্রী ও স্কুলের শিক্ষিকারাই নিজেরাই ঠিক করেছেন এই থিম।
মহিষাদল গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী দেবাঞ্জনা, শ্রাবন্তীদের কথায়, সরস্বতী পুজোয় মণ্ডপ সজ্জা থেকে শুরু করে স্কুল সাজানোর মজাটাই আলাদা। নিজেদের হাতে তা করতে পেরে তারা বেজায় খুশি।পাশাপাশি, মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের আদলে সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ তৈরি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের পাটনা বাজারের ‘স্টুডেন্টস ক্লাব’-এর ৫৭তম বর্ষের পুজোয়।
প্রায় ৮ লক্ষ টাকা খরচ করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মহাভারতের যুদ্ধ। সেখানে দেখানো হয়েছে কৌরব-পাণ্ডবদের লড়াই।