নিজস্ব প্রতিনিধি,দুর্গাপুর:
যন্ত্রনাহীন ক্যান্সারের নতুন ট্রিটমেন্ট আবিষ্কার ডাক্তার অর্ণব চক্রবর্তীর।তিন ঘন্টার অপারেশনে যুবতীর স্তন ক্যান্সার নির্মূল করলেন। যন্ত্রনাহীন ইন্দো- সায়ানাইন গ্রিন (ICG) ডাই ও ইরলিক মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে সফল সেন্টিনেল লিম্ফ নোড বায়োপসি (SLNB ) সফল অপারেশন।মাত্র দুদিনে রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়ে ধন্যবাদ জানালেন ডাক্তার বাবুকে।[ বিশিষ্ট সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিষ্ট এন্ড রোবোটিক্স সার্জন ডাক্তার অর্ণব চক্রবর্তী প্রতি মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সোমবার আসছেন পুরুলিয়াতে।যোগাযোগ +91 8116381942 ]
এই রাজ্যে প্রথমবার দুর্গাপুরে মিশন হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত এক যুবতীর ইন্দো- সায়ানাইন গ্রিন (ICG) ডাই ও ইরলিক মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে সফল সেন্টিনেল লিম্ফ নোড বায়োপসি ( SLNB ) সফল অপারেশন।ঘটনা ক্রমে জানা যায় আসানসোলের এক ত্রিশ বছরের এক যুবতী তাঁর ডানদিকের স্তনে একটি ছোট দেড় সেন্টিমিটার ক্যান্সারযুক্ত পিন্ড নিয়ে সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিষ্ট ডাক্তার অর্ণব চক্রবর্তীর কাছে দেখাতে আসেন।আতঙ্কগ্রস্ত রোগি ও রোগির পরিবার পরিজন কে আশ্বস্ত করেন ডাক্তার অর্ণব চক্রবর্তী।এরপর চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু করা হয়।সেন্টিনেল নোড বায়োপসি পরীক্ষার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হয় মূল টিউমারের বাইরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে কি না!মূলত সেন্টিনেল নোড হল প্রথম কয়েকটি লিম্ফ নোড যেখান থেকে ক্যান্সার শুরু হয়।পরবর্তী সময়ে,আমাদের সারা শরীর জুড়ে যে লিম্ফ নোড গুলি রয়েছে সেগুলো ও আক্রান্ত হতে শুরু করে।
লিম্ফ নোড গুলি আমাদের শরীরের রোগ জীবাণু প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম।ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর ক্যান্সার কোষ গুলি লিম্ফ নোড গুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য সেন্টিনেল নোড বায়োপসি পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।চিকিৎসক সেন্টিনেল নোড গুলি খুঁজে সেগুলো সরিয়ে ল্যাবরেটরিটে পরীক্ষা করার জন্য পাঠায়।পরীক্ষায় দেখা যায় সেন্টিনেল নোড গুলি ক্যান্সার মুক্ত।এর মানে হল যে শরীরের অতিরিক্ত লিম্ফ নোড গুলি অপসারণ করার প্রয়োজন নেই।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,শরীরের এক স্থান থেকে অনেক গুলো লিম্ফ নোড সরানো হলে লিম্ফেডেমা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এরপর বিশিষ্ট সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিষ্ট এন্ড রোবোটিক্স সার্জন ডাক্তার অর্ণব চক্রবর্তী সঙ্গে হাসপাতালের সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিষ্ট চিকিৎসক দল ওই যুবতীর সাথে সেন্টিনেল নোড বায়োপসি পরীক্ষা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং তাকে সাহস জোগান।এরপর প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর ঐ রোগীর অস্ত্রোপচার করা হয় নির্দিষ্ট স্থানে।অস্ত্রোপচারের মাত্র 2 দিন পরই ওই যুবতী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।এই অপারেশনের পর ডাক্তার বাবুকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন রোগীর পরিবার-পরিজন।
এই বিষয়ে বিশিষ্ট সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিষ্ট কনসালটেন্ট ডাক্তার অর্ণব চক্রবর্তী বলেন,”ইন্ডোসায়ানাইন গ্রীণ( ICG) ডায় ব্যবহার করে শরীরের মধ্যে সবচেয়ে নির্ভুল ভাবে সেন্টিনেল নোড সনাক্তকরণ করা যায়।তাছাড়া এই পদ্ধতি ব্যবহার করে শারীরিক ব্যাথা, লিম্ফোডেমা, ফ্রোজেন শোল্ডার এর মতো একাধিক সমস্যা এড়ানো সম্ভব।এই অপারেশনে রোগীকে হাসপাতালে খুব কম সময় ভর্তি থাকতে হয়।তাছাড়া অস্ত্রোপচার করার একদিন পরই রোগীকে হাসপাতালে থেকে ছুটি দেওয়া যেতে পারে”। তিনি এও বলেন রোগীকে কম সময়ের মধ্যে সারিয়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ভবিষ্যতে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রযুক্তির রোবট ব্যবহার করে অত্যাধুনিক চিকিৎসা সম্ভব বলে জানিয়েছেন ডাক্তার অর্ণব চক্রবর্তী।