নিজস্ব প্রতিনিধি,সবং :
এ ঠিক যেন গল্পের কাহিনী।তবে কাহিনী গল্প হলেও সত্যি ঘটনা।পুজো শুরু হয়ে গেছে কিন্তু পুজোয় ষষ্ঠী থেকে মেতে উঠবে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের মানুষজন।বর্তমানে মানুষে মানুষে স্বার্থপর হিংসা ভেদাভেদ।যেখানে একশ্রেণীর মানুষের হাতে কোটি কোটি টাকা আর শ্রেণীর মানুষের টাকা নেই যে দুবেলা ভালো ভাবে পেটে খেয়ে দিন যাপন করবে। তাদের কাছে এই পুজোর দিনগুলোতে নতুন জামা প্যান্ট মানে বিলাসিতা,আর তাতে জোগাতে অক্ষম তার পরিবার। ফলে প্যান্ডেলের বাইরে এখন এ দাঁড়িয়ে থেকেই পুজোর দিনগুলো কেটে যায় এই স্কুলের বাচ্চাদের। কিন্তু এবার মানবতা এবং সহমর্মিতার পরিচয় সবং দশগ্রাম গিরিশচন্দ্র নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের।
গল্পটা মূলত শুরু হয়েছিল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কথোপকথনে।পড়ার ফাঁকে ক্লাসের শিক্ষকরা জিজ্ঞেস করেছিল এবারের পূজোই কার কটা জামা কাপড় হয়েছে।পড়তে আসায় বিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীরা যাদের অবস্থা সম্পূর্ণ পরিবার তাদের পড়ুয়ারা জানিয়েছিল,পূজোয় কারো তিনটে,কারও চারটা কারো,আবার একের বেশি নতুন জামা হয়েছে।অন্যদিকে কম অবস্থা সম্পন্ন বা দুস্থ পরিবারের পড়তে আসা এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা জানায় তাদের এবারে নতুন জামা হয়নি।বাবা মা কিনতে পারেনি।এই কথোপকথনের মধ্যেই শিক্ষকরা জিজ্ঞেস করে তোমরা কি তোমাদের নতুন জামা কাপড় না পাওয়া বন্ধুদের তাদের এক সেট জামা কাপড় বন্ধুকে দিতে পারবে।আর তাতেই রাজি হয়ে যায় সঙ্গী অন্য পড়ুয়ারা।শুরু হয় একে অপরকে নতুন জামা দেওয়া নেওয়ার পর্ব।এই দিনও দেখা গেল সেই চিত্র।
এ বিষয়ে ভার প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুপম সাঁতরা জানান যেখানে গোটা সমাজ স্বার্থপর সেখানে এই খুদে পড়ুয়াদের মধ্যেই মানবিকতা সত্যিই আমাদের চোখে জল এনে দেয়। গত বছর থেকেই এই অনুষ্ঠানের সূত্রপাত।পড়ুয়ারা নিজেদের ইচ্ছেই তাদের নতুন জামা কাপড় তার বন্ধুদেরকে দিয়ে এই পুজোয় উৎসবে আনন্দে মেতে উঠবে।এটা এক অন্য দৃষ্টান্ত।
এ বিষয়ে অভিভাবকদের বক্তব্য এভাবে যে পড়ুয়াদের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটতে পারে তা আমাদের জানা ছিল না। তবে এই মেলবন্ধন সতীর দৃষ্টান্ত এই জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং এর। এই পড়ুয়ারা বড় হলে আরো মানবিকতার পরিচয় দেবে,এটাই আমাদের কাছে কাম্য এবং স্কুল পুরোটাই সহযোগিতা করেছে।