
নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝাড়গ্রাম:
ঝাড়গ্রামে ১৫ ই আগস্ট লোকালয়ে ঢুকে পড়া হাতির দলকে জঙ্গলে ফেরাতে গিয়ে হুলা পার্টির জ্বলন্ত শলাকায় বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল একটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী হাতির।সেই ঘটনার শিক্ষা নিয়ে লোকালে ঢুকে পড়া হাতিকে জঙ্গলে ফেরানোর জন্য পদ্ধতিগত বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা গেল বনদপ্তরের মধ্যে।সারাদিন ধরে জঙ্গলের মধ্যে ঘিরে রাখার পর রাত হতেই হাতিকে ড্রাইভ করে জঙ্গলে ফেরানোর কাজ শুরু করে বনদপ্তরের কর্মীরা।

মূলত ২০২৪ সালের ১৫ ই আগস্ট ঝাড়গ্রাম শহরের বুকে হাতি ঢুকে যাওয়ার ফলে অতি সক্রিয় হয়ে উঠে বনদপ্তর।ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ সংলগ্ন পাঁচিল ঘেরা ছোট্ট একটি জঙ্গলে চারটি হাতি আশ্রয় নিলে দিনের বেলায় হাতির দলটিকে ড্রাইভ করা শুরু করে বনদপ্তর। যার ফলেই ঘটে চরম বিপত্তি। কিন্তু এবার দেখা গেছে একেবারে অন্য চিত্র।বৃহস্পতিবার ভোরে লালগড় রেঞ্জ থেকে তিনটি হাতি কংসাবতী নদী পেরিয়ে ঢুকে পড়ে ঝাড়গ্রামের দিকে।দুটি হাতি অবশ্য পরে কংসাবতী নদী পেরিয়ে ফিরে যাই লালগড় রেঞ্জে।একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ হাতি সোজা ঢুকে পড়ে রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কন্যাডুবা গ্রামে।অভিযোগ,কন্যাডুবায় হাতির হানায় বামাপদ পাল নামের এক যুবক আহত হয়।বর্তমানে সে ঝাড়গ্রাম গভমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।হাতির খবর চাউর হতেই ভিড় জমে যায় এলাকায়।

হাতিটি কন্যাডুবা গ্রাম হয়,বেতকুন্দ্রি পেরিয়ে ঢুকে পড়ে ঝাড়গ্রাম শহর লাগুয়া চার নাম্বার ওয়ার্ড সংলগ্ন পচাখালী গ্রামে।পচাখালী গ্রামে থাকা ছোট্ট একটি জঙ্গলে হাতিটি ঢুকে পড়তেই জঙ্গলটিকে চারদিক থেকে বনদপ্তর ও পুলিশ ভালো করে ঘিরে ফেলে।হাতি দেখার জন্য কাতারে কাতারে মানুষের ভিড় হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৬৩ ধারা (১৪৪ IPC)জারি করা হয়।হাতিটি মাঝে মধ্যে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ধান জমিতে তাণ্ডব চালায়।উত্তেজিত হয়ে শুঁড়ে করে চারিদিকে জল ও কাদা ছিটাতে থাকে। হাতিকে ড্রাইভ করার জন্য ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের বিভিন্ন রেঞ্জ থেকে নিয়ে আসা হয় ৪৮ জন হুলা পার্টির সদস্যকে।সূর্যের আলো নামতেই হুলাতে আগুন জ্বালিয়ে জঙ্গলের ভিতরে হানা দেয় হুলা পার্টির সদস্যরা।অপারেশনের নেতৃত্বে ছিলেন ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের এনডিএফও থেকে শুরু করে রেঞ্জে অফিসাররা।


জানা গিয়েছে, হাতিরকে ড্রাইভ করে কংসাবতী নদী পার করে লালগড় রেঞ্জে পাঠানো হবে।ঝাড়গামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন,”দিনের বেলায় মানুষের জমায়েত চারদিকে থাকার জন্য হাতিকে ড্রাইভ করা হয়নি। হাতিটিকে ড্রাইভ করে সুস্থ ভাবে কংসাবতী নদী পার করে দেওয়া হচ্ছে”।