নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে মেদিনীপুর শহরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডক্টর কাঞ্চন ধাড়ার দেখভালে মৃত্যু হয় বয়স ৫৪ এর দিপালী খামরুই নামে এক মহিলার। সেই ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং ডাক্তারের অন্তর্বর্তী জামিনের বিরোধিতায় আদালত চত্বরে প্লাকার্ড হাতে ধর্নায় বসেছিল দিপালীর মেয়ে এবং স্বামী। যদিও সেই অন্তর্বর্তী জামিনের ডাক্তার হাজিরা দিলে বিচারক সব শোনার পর ১৪ দিনের বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন।
ঘটনা ক্রমে জানা যায় কেশপুরের ধলহারার বাসিন্দা দিপালী খামরুই নামে এক বয়স্ক মহিলা পেটের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিল মেদিনীপুরের স্বনামধন্য ডাঃ কাঞ্চন ধারার আন্ডারে মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে।সেখানে দু দুটি অপারেশন করা হয় তার।এরপর মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে ওই মহিলা।এরপরই মাকে মেরে দিয়েছে ডক্টর কাঞ্চন ধাড়া এমনই অভিযোগ তুলে সোচ্চার হয় মৃতের মেয়ে কেয়া মাইতি।ডাক্তারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় এবং অভিযোগ হয় পুলিশে।সেই ঘটনা কেটে গেছে প্রায় তিন মাসের উপর। ইতিমধ্যে ডাক্তারের শাস্তি হওয়ার পরিবর্তে ডাক্তার গত বুধবার অন্তর্বর্তী জামিন পেয়ে যায়।শুধু জামিন পেয়েছে তা নয় জামিন পেয়েই মেয়ের বাড়িতে হুমকি দিচ্ছে কেস তুলে নেওয়ার জন্য এই অভিযোগে আতঙ্কিত হয়ে মৃতের মেয়ে কেয়া মাইতি মেয়ে দ্বারস্থ হল মেদিনীপুর আদালতে।
এদিন সকাল থেকে মেয়ে এবং মৃতের স্বামী দুজনেই প্লাকার্ড নিয়ে বসে পড়েন মেদিনীপুর আদালতের সামনে “দাবি বিচার চাই”।তারা সঠিক বিচারের আবেদনে অনড় থাকেন।তাদের এও অভিযোগ যে এই ডাক্তারকে বাঁচানোর জন্য পুলিশের একাংশ যুক্ত রয়েছে এবং তারা ছলে বলে কৌশলে টাকার বিনিময়ে কেস তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।তাই এই ডাক্তারের অবিলম্বে শাস্তি চাই, চাই ক্ষতিপূরণ।অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ফের শুনানির জন্য আদালতে হাজির করানো হয় অভিযুক্ত চিকিৎসককে।এরপর দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে সওয়াল জবাব।সেই শুনানি শেষে সন্ধ্যা নাগাদ চিকিৎসককে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে নির্দেশ দেন বিচারক আর তাতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় মৃতের পরিবার বলেন ওই চিকিৎসকের কঠিনতম শাস্তি হোক।যদিও অভিযুক্ত চিকিৎসকের দাবি,চক্রান্ত করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এভাবে চিকিৎসকের গ্রেফতারি রীতিমতো নজিরবিহীন ঘটনা বলে মানছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এ বিষয়ে মৃতের আইনজীবী অপূর্ব চক্রবর্তী বলেন এই কাঞ্চন ধাড়া ডাক্তার না তিনি ডাকাত। এনার নামে এর আগেও আটটি মামলা চলছে কিন্তু তারপরও তিনি অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন,চিকিৎসা করে বেড়াচ্ছেন যা অবৈধ।এই ডাক্তার অন্তর্বর্তীকালীন বেল নিয়েছিলেন আজকে হাজিরা ছিল এবং সিডি দেখে বিচারক ওনার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।এরই সঙ্গে এই আইনজীবী ইনভেস্টিগেশন অফিসারের কেও কটাক্ষ করেছেন,বলেছেন অপদার্থ পুলিশ প্রশাসন। তবে আমরা চাই ওই ডাক্তারের আরো কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি হোক।
অন্যদিকে সরকারি আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিব বলেন ওই ডাক্তার অন্তর্বর্তীকালীন বেল চেয়েছিলেন।এদিন শুনানি ছিল শুনানিতে আগের সিডি জমা না দেওয়ায় বিচারক কিছু জানতে পারেন নি এরপর তিনি সিডি দেখে মনে হয়েছে তাই ১৪ দিনের জেল হেফাজতে নির্দেশ দিয়েছেন।