নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝাড়গ্রাম:
ঘটনা ক্রমে জানা যায় ঝাড়গ্রাম ব্লকের অন্তর্গত জিতুশোল গ্রামে বাড়ি সুরেখা মাহাতোর।তাঁর স্বামী বিশ্বজিৎ মাহাতোর জিতুশোলে একটি খাবারের হোটেল ছিল।বিগত ২০১০ সালে মাওবাদীরা তাঁর স্বামীকে তুলে নিয়ে গিয়ে কলাবনির রাস্তায় খুন করে ফেলে দেয়।এরপর তিনকন্যাকে নিয়ে অথৈ জলে পড়ে যায় সুরেখা।শ্বশুর ও দেওরের পরিবারের সঙ্গে থেকে কোনরকমে সংসার চালাচ্ছিল সে। এমনকি শ্বশুরবাড়িতে নানা অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে সুরেখাকে বলে অভিযোগ।
এরপর গত ২০১৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর শ্বশুর উপেন্দ্রনাথ মাহাতো মারা যান।শ্বশুরের নামে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা ও জমি-জায়গা রয়েছে।অবশেষে ২০১৮ সালে মাওবাদী হানায় স্বামীর মৃত্যুর জেরে পুলিশের চাকরি পায় বিধবা স্ত্রী সুরেখা।তারপর তিনকন্যাকে সঙ্গে ঝাড়গ্রামের ভাড়াবাড়িতে উঠে সে।শ্বশুর মারা যাওয়ার পর তাঁর দেওর পরিবারের ওয়ারিশ সার্টিফিকেট থেকেও তাঁর স্বামীর নাম বাদ দিয়ে দেয়।পরে বিষয়টি জানতে পেরে সুরেখা শালবনি গ্রাম পঞ্চায়েতে আবেদন করতে তাঁর স্বামীর নাম যুক্ত করে কর্তৃপক্ষ।এদিকে, শ্বশুরের নামে গচ্ছিত টাকা ও জমি-জায়গার ভাগ যাতে না পেতে পারে সে জন্য শ্বশুরের ডেথ সার্টিফিকেট হাতে দেয়নি দেওর এবং ননদ।এহেন সমস্যার কথা তিনি লিখিত ভাবে পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে শুরু নানা জায়গায় জানিয়েও কোন সুরাহা পাননি।
অবশেষে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুক্তি সরকারের কাছে সমস্যার কথা লিখিত ভাবে আবেদন করেন বিধবা বৌমা সুরেখা মাহাতো।সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক একটি প্রি-লিটিগেশন মামলা রুজু করেন।তারপর শালবনি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লীলাবতী সিং কে এবং সুরেখা মাহাতোকে নোটিশ পাঠিয়ে ডেকে পাঠানো হয় আদালতে।এই আইনি সমাধানের কথা বিচারক প্রধানকে জানান। গত কাল সোমবার প্রধান লীলাবতী সিং ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুক্তি সরকারের উপস্থিতিতে সুরেখা মাহাতোকে তাঁর শ্বশুরের ডেথ সার্টিফিকেটের ডুপ্লিকেট কপি তুলে দেন।আর তাতেই সমস্যার সমাধান হয়।
এইদিন সুরেখা মাহাতো বলে,‘শ্বশুরের ডেথ সার্টিফিকেট দিচ্ছিলেন না দেওর।বহু বছর অপেক্ষা করেছি।অবশেষে আদালতের বিচারকের হস্তক্ষেপে ওই ডেথ সার্টিফিকেট এদিন হাতে পেয়েছি। ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুক্তি সরকার বলেন,‘উভয় পক্ষকে নোটিশ দিয়ে ডেকে পাঠানোর পর প্রধানকে আইনি সমস্যা এবং তার সমাধানের কথা জানানোর পর এদিন প্রধান সুরেখা মাহাতোর হাতে তাঁর শ্বশুরের ডেথ সার্টিফিকেটের ডুপ্লিকেট কপি তুলে দেওয়া হয়েছে।এই ভাবে জয়ী হলেন সুরেখা মাহাতো যিনি ছ বছর ঘুরছিলেন।