
নিজস্ব প্রতিনিধি,নারায়ণগড়:
বিজেপি করার অপরাধ এবং সেই অপরাধেই শাস্তি পেতে হলে এক মহিলার।এরকমই ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় থানায় এলাকায়। মহিলার অভিযোগ তিনি বিজেপিকে সমর্থন করতেন এবং এলাকার প্রভাবশালী ব্লক সভাপতি তাকে বারবার চাপ দিতে থাকায় তিনি বিজেপি ছেড়েও দেন। তাতেও সন্তুষ্ট না হয়ে তাকে লিখিত দিতে পার্টি অফিসে ডেকে তৃণমূল নেতারা যৌন নির্যাতন চালান,তাকে রেপ ও করেন বলে অভিযোগ।যা নিয়ে ফের উত্তেজনা ছড়ালো মেদিনীপুরে। যদিও পুলিশের দাবি দু’পক্ষের অভিযোগ পড়েছে থানায়, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এবার তৃণমূল ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে রেপের এবং যৌনাঙ্গে চিপস,গুটি ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হলো মেদিনীপুর।ওই দম্পতির অভিযোগ মত জানা যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শেষ প্রান্ত নারায়ণগড় থানার ডাওকা এলাকায় ওই দম্পতি তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন।তাদের একটি ওষুধ দোকান রয়েছে।এদিন সেই ব্যক্তি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তার স্ত্রী একসময় বিজেপিকে সমর্থন করতেন।যা নিয়ে বারবার চাপ দিতে থাকে এলাকার শাসক দলের নেতারা।বিশেষ করে এলাকার ব্লক সভাপতি লক্ষীকান্ত সিট চাপ দিতে থাকেন।এরপর স্ত্রী বিজেপি ছেড়ে দেন।কিন্তু এই ঘটনায় মানতে নারাজ তৃণমূল নেতারা।তিনি যে বিজেপি ছেড়েছেন তার জন্য লিখিত দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।এইদিন সকাল দশটা নাগাদ স্ত্রী কে এলাকার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি লক্ষীকান্ত সিট আর কয়েকজন তৃণমূল নেতা মিলে পার্টি অফিসে ডেকে পাঠান।

তাকে লিখিত নিয়েও যেতে বলা হয়।তার সমস্যা সমাধান সমাধান করবে বলে ডেকে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন সেইসঙ্গে যৌনাঙ্গে চিপস,গুটি, ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ খোদ পার্টি অফিসে।এই ঘটনার পর তার স্ত্রী ওখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মাটিতে পড়ে যান।এরপর অসুস্থ স্ত্রী কে এলাকারই বেশ কিছু তৃণমূল নেতাদের দ্বারাই প্রথমে মকরামপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পরবর্তীকালে অবস্থার অবনতি হলে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসা হয়।এরপরই এই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় থানায়। যা ঘিরে উত্তেজনা মেদিনীপুর জুড়ে। যদিও এর পরেই মেদিনীপুর শহরে পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়ে বিজেপি।ওই তৃণমূল নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।যদিও এই ঘটনায় পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছে দুপক্ষের অভিযোগ এসেছে,পুলিশ খতিয়ে দেখছে।

এই ঘটনায় এ নির্যাতিতা মহিলার স্বামী বলেন,”আগে আমার স্ত্রী বিজেপি করত। কিন্তু তারপর বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে তৃণমূল সহ সহ শাসক দলের নেতারা। আমার স্ত্রী কেবলমাত্র বিজেপি সমর্থন করতেন।তিনি তা ছেড়েও দিয়েছেন কিন্তু এখানকার ব্লক সভাপতির বক্তব্য তাকে লিখিতভাবে পার্টি অফিসে জানাতে হবে,তিনি বিজেপি ছেড়েছেন।এই লিখিত করেই তিনি পার্টি অফিসে গিয়েছিলেন তার জমা দিতে আর সেখানেই তার উপর অত্যাচার হয়। সেইসঙ্গে আমার স্ত্রী আমাকে জানিয়েছে কোনভাবেই যেন শাসকদলের এ নেতাকে ছাড়া না হয়।

যদিও এই নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন,”এরকম একটি ঘটনার খবর শুনেছি কিন্তু থানায় অভিযোগ হোক ওই মহিলার মেডিকেল হোক এরপর যদি ঘটনা সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে আমরা দল থেকে কাউকে রেয়াত করব না।এই ঘটনার সঙ্গে যদি তৃণমূল ব্লক সভাপতি জড়িয়ে থাকেন তবে তার আমরা ব্যবস্থা নেব দলগতভাবে।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিজেপি। বিজেপি জেলা সহ সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন,”এই মহিলা অনেকদিন আগেই বিজেপি ছেড়ে দিয়েছে। তার কারণ ছিল ওখানকার শাসকদলের নেতাদের চাপ।আজ যে কারণে তাকে আক্রান্ত হতে হলো।এলাকার ব্লক সভাপতি উনাকে চাপ দিয়ে লিখিত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।যা তিনি লিখিতভাবে দিতে গিয়েই উনার উপর যৌন হয়রানি এবং যৌন নির্যাতন করা হয়।আমরা পুলিশকে বলেই ওই মহিলাকে উদ্ধার করতে পেরেছি।এরই সঙ্গে শাসকদলের এই নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।