
ঝাড়গ্রাম 1 লা সেপ্টেম্বর:
ধান জমির আলে আটকে বাচ্চা হাতি!পেছন ফিরে দেখতে পেয়ে থমকে দাঁড়ালো মা হাতি,শুঁড়ে করে ঠেলে পার, ক্যামেরাবন্দি করল গ্রামবাসীরা। এই ঘটনার পরেই হাতিরা জঙ্গলে ঢুকে পড়ে।আর তাই স্বস্তির ছায়া জঙ্গলমহলে।

হাতির দলে রয়েছে শাবক।ধান জমি মাড়িয়ে অন্যত্র যাওয়ার পথে হাতির দল থমকে যায় হস্তি শাবকের কান্ড দেখে। সব হাতি পেরিয়ে গেলেও ধান জমি উঁচু আলে আটকে পড়ে একটি হস্তি শাবক।শাবকটিকে ধান জমির আল পার করানোর জন্য পিছন থেকে শুঁড় দিয়ে ঠেলতে শুরু করে মা হাতি। তা দেখে হাতির দল থেকে ফিরে আসে একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি। মা হাতি পেছনের দিক থেকে হস্তি শাবককে ঠেলতে থাকে এবং পূর্ণবয়স্ক হাতিটি শুঁড়ে ধরে হস্তি শাবককে ওপর তোলার চেষ্টা করে। পিছন থেকে মাদি হাতি জোরপূর্বক ধাক্কা দিয়ে হস্তি শাবকটিকে ধান জমির পাশে থাকা পিচ রাস্তায় তোলে। তারপর রাস্তা পেরিয়ে হস্তি শাবককে শুঁড়ে করে আগলে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায় মা হাতি। ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেন গ্রামবাসীরা। সোমবার সকালে ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের হাঁড়িভাঙ্গা এলাকার ডিগারবাঁধের ঘটনা।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়গপুর বন বিভাগের অন্তর্গত কলাইকুন্ডা রেঞ্জের সাঁকরাইল বিট এলাকায় ১৩ থেকে ১৪ টি হাতি ছিল। হাতির দলটিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি শাবক। এদিন সকালে ডিগার বাঁধের দিক থেকে হাতির দলটি ধানের জমির মাড়িয়ে পিচ রাস্তা পারাপার করে হাঁড়িভাঙার জঙ্গলে চলে যায়।

জঙ্গলে যাওয়ার পথেই ধান জমি থেকে পিচ রাস্তায় ওঠার সময় ধান জমি অনেকটা নিচে থাকায় রাস্তা ও ধান জমির মাঝে জমির বড় আলে আটকে পড়েছিল হস্তি শাবকটি।হাতি তাদের দলে থাকা হস্তি শাবকদের সবসময়ই আগলে রাখেন। বিশেষ করে মা হাতি হস্তি শাবকদের সঙ্গ হারা হতে দেয় না। সব সময় মা হাতি আগলে রাখে শাবকদের। দলে থাকা সমস্ত হাতি এগিয়ে গেলেও মা হাতি হস্তি শাবকের গতি অনুযায়ী চলাচল করে। এর আগেও দেখা গিয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় থানার অন্তর্গত লালগড় এলাকায় ৫০ থেকে ৬০টি হাতির একটি দল কংসাবতী নদীর তীরে আলু চাষের জমিতে হানা দিয়ে সকাল বেলায় জঙ্গলে ফেরার সময় লালগড়-রামগড় পিচ রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে কংক্রিটের ড্রেনে আটকে পড়ে একটি হস্তি শাবক। মাদি হাতি উদ্ধারের চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয়।

জঙ্গলের দিকে এগিয়ে যাওয়া দুটি হাতি ফিরে এসে মা হাতিকে সাহায্য করে এবং তিনটি হাতি মিলে শুঁড়ে ধরে হস্তি শাবকটিকে কংক্রিট ড্রেন থেকে উদ্ধার করে। তারপর তারা জঙ্গলে ফিরে যান। ঝাড়গ্রামের হস্তি বিশেষজ্ঞ সমীর মজুমদার বলেন,’হাতি বুদ্ধিমান প্রাণী। এরা দলবদ্ধভাবে থাকতেই ভালোবাসে। মানুষের মতোই এদের আবেগ রয়েছে। সন্তানকে তারা সবসময়ই আগলে রাখে। যে সমস্ত হাতির দলে শাবক রয়েছে সেই হাতির দলের থেকে মানুষের দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।

মা হাতি যদি সন্তানের বিপদ বুঝতে করতে পারে তাহলে আক্রমণের সম্ভাবনা থাকে’।