
নিজস্ব প্রতিনিধি:
কখনও শুনেছেন সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ২৮ বা ৩০ বার? হ্যাঁ,সেই অসম্ভব বিষয়কে বাস্তবে সম্ভব করে দেখাল মধ্যপ্রদেশের একটি জেলা প্রশাসন।আর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে।প্রশ্ন উঠছে,এটা কী করে সম্ভব হল!সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছে সিওনি জেলা।তবে সরকারি খাতায় কলমে।আর তথ্যের ভিত্তিতে কোটি কোটি টাকা নয়ছয়েরও অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনা ক্রমে জানা গিয়েছে,রানি বাই নামে এক মহিলাকে সাপের কামড়ে ২৯ বার মৃত হিসাবে দেখানো হয়েছে। আর প্রতি মৃত্যুতে আবার ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে।জানা গিয়েছে,রানি বাই নামে এক মহিলাকে সাপের কামড়ে ২৯ বার মৃত হিসাবে দেখানো হয়েছে।আর প্রতি মৃত্যুতে আবার ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে।এ তো গেল রানি বাইয়ের বিষয়। দ্বারকা বাই নামে আরও এক মহিলাকে বেশ কয়েক বার মৃত হিসাবে সরকারি খাতায় দেখানো হয়। আর তাঁর নামে ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে।আবার রাজু নামে জেলারই আর এক যুবককে সাপের কামড়ে ২৮ বার মৃত দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে তুলে নেওয়া হয়।শুধু তা-ই নয়, স্থানীয় বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি,এ রকম মোট ৪৭ জনকে ২৮০ বার মৃত দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

প্রতি বার মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে বলেও সূত্রের খবর।মোট ১১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।সিওনি জেলার কেওলারি তহসিলের কিছু সরকারি হিসাবের খতিয়ান নিতে গিয়েই বিষয়টি নজরে পড়ে অর্থ দফতরের।অর্থ দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা রোহিত কৌশল বলেন,‘‘তদন্তে ১১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা নয়ছয়ের বিষয়টি ধরা পড়েছে।৪৭ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই টাকা পাঠানো হয়েছে।’’তবে এই আর্থিক দুর্নীতিতে সচিন দহায়ক নামে এক সরকারি কর্মীকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। অভিযোগ,ওই কর্মী মৃত্যুর ক্ষতিপূরণের টাকা নিজের পরিবার, বন্ধু এবং আত্মীয়স্বজনের অ্যাকাউন্টে জমা করেছেন।২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই দুর্নীতি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই দহায়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনিই এই দুর্নীতির মূল চক্রী বলে পুলিশ সূত্রে খবর। দহায়ক একা নন, এক জন মহকুমাশাসক, চার তহসিলদার এবং এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট গ্রেড থ্রি কর্মীর নামও উঠে এসেছে। সিওনির জেলাশাসক সংস্কৃতি জৈন জানিয়েছেন, সচিন দহায়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও ছয় সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।ভুয়ো নথি বানিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করতেন দহায়করা। আর সে ক্ষেত্রে সরকারি কর্তাদের (তহসিলদার,মহকুমাশাসক) আইডি ব্যবহার করা হত, যাতে সহজেই ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া যায়।