
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
দুদিনের জেলা সফরে পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চারিদিকে চলছে এখন জোর প্রস্তুতি ও তৎপরতা তবে আগাম ঝড় জলে কিছুটা পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটালেও দ্রুত পরিস্থিতি সারিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রশাসন।জিন্দালদের ওখানে ১৬০০ মেগা ওয়াটের পাওয়ার প্লান্টের পাশাপাশি প্রশাসনিক সরকারী সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।

আবার জেলা সফরে পশ্চিম মেদিনীপুরে দৌড়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।মূলত দুদিনের সফরে ইতিমধ্যে সাজো সাজো রব মেদিনীপুরে। উল্লেখ্য, এবছরের প্রথমের দিকে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীতে দু’টি ৮০০ মেগাওয়াটের পাওয়ার প্ল্যান্ট গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন সজ্জন জিন্দল।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, “শালবনীতে ১৬ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে দু’টি ৮০০ মেগা ওয়াটের পাওয়ার প্ল্যান্ট করা হবে।শালবনীতে জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানা হওয়ার পরও যে বিপুল পরিমাণ জমি পড়ে আছে,সেখানেই এই পাওয়ার প্ল্যান্ট গড়ে উঠবে বলে প্রশাসন এবং JSW কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়।এবার সেই পাওয়ার প্ল্যান্টেরই শিলান্যাস করতে আসছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত,২০০৮ সালের ২ নভেম্বর জিন্দালদের প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।তবে,ওই দিনই ফেরার পথে তাঁর কনভয়ে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ হয়। এরপর শুরু জঙ্গলমহলে মাওবাদী আন্দোলন। জিন্দালরা ইস্পাত কারখানার পরিকল্পনা বাতিল করে। তার পর দেড় দশক অতিক্রান্ত।ইস্পাত কারখানার বদলে সিমেন্ট কারখানা গড়ার প্রস্তুতি নেয় জিন্দালেরা। ২০১৮ সালে সেই কারখানার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিকে, ইস্পাত কারখানা তৈরি করতে ৪ হাজারের বেশি একর জমি জিন্দালদের দেওয়া হয়েছিল।তার মধ্যে মাত্র ৮৪৯ একর জায়গায় সিমেন্ট কারখানা তৈরি হয়েছে।বাকি জমি খালি পড়ে রয়েছে। শালবনি ব্লকের কুলফেনি, জামবেদিয়া, আসনাশুলি, নতুনডিহি, কাশিজোড়া, বর্জু-সহ প্রায় ৩০টি গ্রামের কয়েকশো জমিদাতা রয়েছেন।

তাই এবার তারই উপর গড়ে উঠতে চলছে এই পাওয়ার প্লান্ট।জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর এই কর্মসূচির তারিখের বিষয়ে এখনও সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।তবে JSW সিমেন্ট কারখানার HR আধিকারিক দিব্যেন্দু মুখার্জি বলেন মূলত এই দিন মুখ্যমন্ত্রী ভিত্তিপ্রস্থ স্থাপন করবেন আর তাতে এই ১৬০০ মেগা ওয়াট পাওয়ার প্লান্টে এলাকার প্রায় পাঁচ সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ কাজ পাবেন এবং কর্মসংস্থান হতে পারে। যদিও আগের দিনের ঝড় জলে মঞ্চ ভাঙ্গা নিয়ে তিনি বলেন মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি হওয়া মঞ্চ কোন ভাঙেনি বরং তার পার্শ্বস্থ খাবারের জন্য তৈরি করা একটি সামিয়ানা ভেঙে পড়েছে সেটা আমরা সারিয়ে দিয়েছি।যদিও এই বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন “এখনও বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি।”একই কথা জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারও।

যদিও এই বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন,”মুখ্যমন্ত্রীর আসা প্রসঙ্গে আমাদের কাছে তেমন কোন ডেটা বা ডিটেলস নেই।তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলের মানুষকে ভালোবাসেন, রাজ্যের মানুষকে ভালবাসেন।তাই উন্নয়নের কাজে বারবার দৌড়ে আসেন শুনেছি। তিনি জিন্দালদের একটি অনুষ্ঠানে আসছেন এরই সঙ্গে তিনি প্রশাসনের একটি বৈঠক করবে বলে জানা গেছে।


সূত্র অনুযায়ী জানা যায় আগামী ২১ এপ্রিল জিন্দালদের কারখানার শিলান্যাসের পর সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে রাত্রিযাপন করবেন।এরপর পরের দিন ২২ এপ্রিল মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে প্রশাসনিক রিভিউ মিটিং এবং সাধারণ মানুষের হাতে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা তুলে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।