
মেদিনীপুর 8 ই ডিসেম্বর:
মেদিনীপুরে পূর্বপুরুষের শ্রী শ্রী রাধাকান্ত জিউ ঠাকুরের দেবত্ব সম্পত্তি অথচ সেই সম্পত্তির পুকুরের উপর রাতারাতি কংক্রিট কনস্ট্রাকশন ফাস্টফুড মালিকের,যা নিয়ে ফের শোরগোল মেদিনীপুরে।মল্লিক বাড়ির দাবী তাদের এই জলাশয় যেন জলাশয় হিসেবে ফিরিয়ে দেয় প্রশাসন।অন্যদিকে পৌরসভার সুর উল্টো।দেবত্ব সম্পত্তি যদি তার উত্তরাধিকারীরা দখলে না রাখতে পারে তার দায়িত্ব পৌরসভার নয় বলেই দায়িত্ব এড়িয়েছেন চেয়ারম্যান। যদিও হায়দ্রাবাদি ফাস্টফুড দোকানের মালিকের দাবি তারা এটা কিনেছেন

পুকুর,জলাশয় ভরাট,আদিবাসীদের জমি দখল এরকম তো অভিযোগ প্রায় সময় দেখা যায় জেলা শহরে এবার অভিযোগ উঠল দেবত্ব সম্পত্তি দখলের।যে অভিযোগ ঘিরে শোরগোল জেলায়।মেদিনীপুরের মল্লিক বাড়ির কর পরিবারের অভিযোগ,বহু যুগ থেকে এই জেলা শহরে তাদের দেবত্ব সম্পত্তি রয়েছে।একসময় এই মল্লিক বাড়ি ছিল রাজা রাজড়া-জমিদারি এবং তাদের সম্পত্তি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মেদিনীপুরে। কোথাও রয়েছে পুকুর তো কোথাও মন্দির আবার কোথাও বা বাস্তু জায়গা।এইসব জায়গা আস্তে আস্তে করে বেশ কিছু মানুষ দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন তারা।সেই অভিযোগ নিয়ে রীতিমত পৌরসভা প্রশাসনের পাশাপাশি কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।যদিও তাতে কোন সদুত্তর মেলেনি, ফিরে পাননি দখল হওয়া জমি।

এই পরিবারের অভিযোগ মত মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলা সুইমিং ক্লাবের বিপরীতে গড়ে ওঠা হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি তার দ্বিতল নির্মাণের সময় তাদের দেবত্ব সম্পত্তি শ্রী শ্রী রাধাকান্ত জীউ ঠাকুরের পুকুরের।যেপুকুরের চার ডেসিমেল জায়গা তারা দখল করে নিয়েছে রাতারাতি। সেই জায়গায় রাতারাতি গড়ে তোলা হয়েছে পাকাপোক্ত কংক্রিটের কনস্ট্রাকশন।যদি ওই বিষয়ে বাধা দিলে বা পরবর্তীকালে তারা তাদের দখল হওয়া জায়গা ছেড়ে দেয়নি।উল্টে তারা দেবত্বর জায়গাটা রেকর্ড করে নিয়েছে বলে দাবি করে।ফলে সমস্যায় পড়েছেন এই মল্লিক বাড়ি।মল্লিক বাড়ির কর দের এও অভিযোগ দেবত্ব সম্পত্তি রাতারাতি যেমন বিক্রি হয়েছে তার সঙ্গে নাম পরিবর্তন হয়েছে। ফলে তারা প্রশ্ন তুলেছেন এই দেবত্ব সম্পর্কে কিভাবে বিক্রি হতে পারে? তারই পাশাপাশি তারা অভিযোগ তুলেছেন পুকুর আস্তে আস্তে করে ভরাট হয়ে চলছে সেদিকে নজর নেই প্রশাসন, ফিসারি ডিপার্টমেন্ট বা পৌরসভার।এর দায়িত্ব কার তার প্রশ্ন তাদের?

এ বিষয়ে মল্লিক বাড়ির সদস্য হিমাদ্রি কর বলেন, “কেরাণীতোলা সুইমিং ক্লাবের বিপরীতে আমাদের 190 ডেসিমেল পুকুর রয়েছে।যে পুকুরের জল এলাকার মানুষ ব্যবহার করেন দীর্ঘদিন ধরে।কিন্তু আমরা দেখলাম সম্প্রতি ওই পুকুরের ওপরে পাকাপোক্ত ঢালাই করে দোতালা বানিয়ে নিয়েছে হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি নামক একটি ফাস্টফুডের দোকানের মালিক।পরে জানতে পারলাম আমাদের পূর্ব পুরুষের দেবত্ব সম্পত্তি উনি নাকি উনার নামে করে নিয়েছেন।যা সম্পূর্ণ অবৈধ অসাংবিধানিক।এই পরিপেক্ষিতে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি ভূমি দপ্তর,পৌরসভা সেইসঙ্গে ফিসারি দপ্তরে।পাশাপাশি আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি এই জলাশয় কে জলাশয় হিসাবে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।”

অন্যদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানির মালিক মোবারক খান বলেন,”মল্লিক বাড়ি মিথ্যা কথা বলছে।ওনাদের পরিবারের লোকজন আমাদেরকে বিক্রি করেছে যা আমরা রেকর্ড করে বাস্তু করতে দিয়েছি।এই জায়গাটা পুরোপুরি আমাদের নামে। এরপর দেবত্ব সম্পত্তি রেকর্ড হয় কি ভাবে নিয়ে প্রশ্ন করালে তিনি বলেন দেবত্ব বলে কোন সম্পত্তি হয় না।উনাদের বলুন কোর্টে যেতে।এটা আমার আমরা পুরোপুরি কিনে নিয়েছি।”

যদিও উল্টো সুর মেদিনীপুর পৌরসভার।মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন,” শুধু অভিযোগ করলেই হবে না,যে বা যার দেবত্ব সম্পত্তি আগলে রাখার দায়িত্বও তার।যদি সে তার সম্পত্তিকে দখলে না রাখতে পারে তাহলে কেউ ঘিরে নিলে তার দায়িত্ব পৌরসভা বা প্রশাসনের নয়।”