
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
রাতারাতি বদলি করা হলো মহিলা থানার ওসি সাথী বারিক সহ ৪২ পুলিশ অফিসার কে।যদিও পুলিশের দাবি এটা রুটিন বদলি।তবে ক্ষুব্ধ বাম ছাত্র সংগঠন গুলির দাবি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক ঐ অফিসারের।এটা আই ওয়াশ ছাড়া কিছু নয়।যদিও অন্যদিকে সাথী বারিক কে মহিলা থানার পরিবর্তে দেওয়া হলো গোয়েন্দা বিভাগে।

দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠেছিল এবং সেই ঘটনার জল গড়ালে অবশেষে ৪২ জন অফিসারের সঙ্গে বদলি করা হলো মহিলা থানার ওসি সাথী বারিক কে।যা নিয়ে জল্পনা জেলা শহরে। মূলত গত মঙ্গলবার মেদিনীপুর জেলা পুলিশের একটি নির্দেশিকায় মোট ৪২ জনের বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সেখানেই সাথী বারিকের বদলির নির্দেশ রয়েছে।যদিও এই বদলির নির্দেশ রুটিন মাফিক বলে দাবি পুলিশের।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি যাদবপুরে শিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে তৃণমূলপন্থী শিক্ষকদের সংগঠনের সম্মেলন ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়।সেই ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গা়ড়ির নীচে এক ছাত্র চাপা পড়ে বলে অভিযোগ ওঠে।তার প্রতিবাদে এসএফআই সহ বাম ছাত্রসংগঠনগুলি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। সেই ঘটনায় এ আই ডি এস ও এর পক্ষ থেকে যখন বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটিতে পিকেটিং চলছিল সেই সময় পুলিশ তাদের উপর তুলে নিয়ে গিয়ে থানায় জ্বলন্ত মোমবাতির ছেঁকা সহ মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ এই সংগঠনের।

এই নিয়ে তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। অন্যদিকে বাম ছাত্র সংগঠন SFI এর পক্ষ থেকেও মহিলা থানায় তাদের কর্মীদের হেনস্তার অভিযোগ করা হয়েছে কোর্টে।এরপরই মহিলা থানা খতিয়ে দেখতে দৌড়ে আসেন পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা।এই বিষয়ে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন পড়ুয়া।সেই আবেদন শুনে বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ ছিল যে,আগে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেওয়া হোক।সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় আইপিএস অফিসার মুরলীকে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল,”ছাত্রীর উপর নির্যাতন হয়েছে।তার পরেই সিট গঠনের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি ঘোষ।”এরপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর।তবে মঙ্গলবার রাতারাতি এই মহিলা থানার ওসি সাথী বারিক সহ বদলি করা হলো ৪২ পুলিশ আধিকারিককে।এই সাথী বারিক কে বদলি করে তার জায়গায় নিয়ে আসা হলো সায়ন্তনী মণ্ডল চট্টোপাধ্যায়কে।অন্যদিকে এই সাথী বাড়িকে বদলি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগে।

এ বিষয়ে AIDSO এর জেলা সম্পাদিকা তনুশ্রী বেজ বলেন,”আমাদের শান্তিপূর্ণ পিকেটিং চলছিল কিন্তু সেই ঘটনায় আমাদের কয়েকজনকে পুলিশ জোরজবস্তি তুলে নিয়ে যায় থানায়।সেখানে মারধোরের পাশাপাশি জলন্ত মোমবাতি দিয়ে ছ্যাকা দেন ওই মহিলা ওসি সাথী বারিক।যে ঘটনায় আমরা কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি।তবে আমাদের মামলা এবং আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ওই অফিসার কে বদলি করা হয়েছে বলে আমরা কিছুটা সন্তুষ্ট কিন্তু আমরা চাইবো এই ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির।

অন্যদিকে বাম ছাত্র সংগঠনের এসএফআই জেলা সভাপতি রণিত বেরা বলেন,”একটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আমাদের কর্মীদের তুলে নিয়ে গিয়ে যেভাবে মারধর করা হয়েছে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দেওয়া হয়েছে তাতে আমরা ওনার বড় ধরনের শাস্তি চেয়েছিলাম।কিন্তু উনাকে যেভাবে মহিলা থানা থেকে তুলে নিয়ে গোয়েন্দা দপ্তরে বদলি করা হলো এটা আই ওয়াশ ছাড়া কিছু নাই।