
মেদিনীপুর 21 ই অক্টোবর:
তখন ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য কুখ্যাত ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেটরা একছত্র একনায়কতন্ত্র চালাতেন গোটা দেশের সঙ্গেই বাংলায়। তাই তারা সে সময় বিপ্লবীদের কর্মকান্ড বন্ধ করতে পুজো বন্ধ করেছিলেন।কড়া নির্দেশিকাও দিয়েছিলেন।যদিও তাদের নির্দেশ অগ্রাহ্য করেই সাহস দেখিয়ে শুরু হয়েছিল নায়েক বাড়ির কালী পুজো, যা প্রায় ১৫১ বছরের পদার্পণ করল।এই পুজোর বিশেষত্ব হলো মা খুশি হয়ে ভোরবেলায় ফুল ছুঁড়ে দেন তার ভক্তদের।

তখন ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য,কুখ্যাত ইংরেজ সরকার একছত্র একনায়কতন্ত্র চালিয়েছিল গোটা দেশের সঙ্গে বাংলায়।বিশেষ করে বিপ্লবীরা যাতে কোনরকম তাদের কর্মকান্ড করতে না পারে তারা যাতে এক জোট হতে না পারে তাই সকল রকম পুজো বাতিল করেছিল এ ব্রিটিশ সরকার।এই সন্ধিক্ষণে ব্রিটিশদের এই লালচক্ষুকে উপেক্ষা করে কালীপুজোর আয়োজন করেছিল এই নায়েক পরিবারে।সেরকমই এক বছর উদাহরণ হল মেদিনীপুর শহরের নায়েক বাড়ির ঐতিহ্যপূর্ণ কালীপুজো।মেদিনীপুর পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অর্পিতা রায় নায়েক।তার বাড়ির পুজো এ বছরে প্রায় ১৫১ বছরে পদার্পণ করল।সেই সময় এই নায়েক পরিবারে প্রমিলা বালা নায়েক এই পুজোর সূচনা করেন।কোন পুরোহিত মশাই ব্রিটিশদের ভয়ে বাড়িতে পুজো করতে না আসায় তিনি নিজেও হাতে কালী মূর্তি গড়ে এই দক্ষিণা কালী পুজোর শুরু করেছিলেন।

সেই পুজো দেখতে দেখতে তার ছেলে,তার ছেলে এভাবেই প্রায় চার পুরুষ ধরে চলে আসছে।যদিও বর্তমানে সেই পুজো করেন পুরোহিতরা।প্রায় চার পুরুষ ধরে চলে আসা এই পুজোর বিশেষত্ব শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক আসনে বসে পূজো করা।যা দেখতে রীতিমতো ভিড় জমান পরিবারের সদস্য,সদস্যা ছাড়াও এলাকার মানুষজন।এই পুজোতে পশু বলি না হলেও চাল কুমড়া বলি হয়,হয় সন্ধি পুজো। ১০৮ টা প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো চলে গোটা রাত ধরে। এইদিন গভীর রাতে নতুন কাপড় ঢাকা দিয়ে মায়ের চক্ষুদান করা হয়।এরপর সারারাত ধরে ঢাক ঢোল বাদ্যি সহকারে চলে সেই পুজো একদম সকাল পর্যন্ত।এই পূজোয় অংশগ্রহণে বিশ্বেশ্বর নায়েক,অর্পিতা রায় নায়েক তার দুই মেয়ে ও বাড়ির আত্মীয় স্বজন সহ স্থানীয়রা।কথিত আছে ব্রিটিশদের সময় যাতে বাংলার বিপ্লবী এবং মানুষজন এক জায়গায় জড়ো না হতে না পারে তার জন্য কালীপুজো নিষিদ্ধ করেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ কুখ্যাত নেতৃত্ব এবং সরকার।

এই বিষয়ে প্রাক্তন কাউন্সিলার বিশ্বেশ্বর নায়েক ও তার স্ত্রী কাউন্সিলার অর্পিতা নায়েক বলেন,”যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই পুজো বিশেষত্ব রয়েছে।তখন যাতে মানুষ পুজো করতে না পারে তার জন্য ব্রিটিশরা একচ্ছত্র নানা ব্যবস্থা নিয়েছিল।শুনেছি সেই সময় আমাদের পরিবারের পূর্বপুরুষরা সেই ভয় উপেক্ষা করে এই পুজো সূত্রপাত করে।তার যাবতীয় রীতিনীতি এখনো আমরা বজায় রেখেছি।

আমাদের সারা রাত ধরে পুজো চলে ভোরবেলায় মা খুশি হয়ে ফুল ছুঁড়ে দেন আশীর্বাদ স্বরূপ। এরপর দুপুরবেলায় আমাদের অন্নকূটের ব্যবস্থা করা হয় ভক্তদের জন্য।