
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
দীর্ঘ ২৫ বছর ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেছেন অফিসের কর্মজীবন আর তাতেই খুশি হয়ে লং সার্ভিস আওয়ার্ডে পুরস্কৃত করা হলো মেদিনীপুরের আনন্দবাজারের সাংবাদিক সৌমেশ্বর মন্ডল কে।মাওবাদী ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে চোখ নষ্ট হলেও অদম্য সাহসে এগিয়ে যাওয়ায় খুশি অফিস।শুভেচ্ছা জানালো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আপামর মানুষজন।

এক সময় এই সৌমেশ্বর মন্ডল যাকে সবাই সোমেশ নামে চেনে তার ১৯৯৯ সালে শুরু হয়েছিল খবরের কাজ সংগ্রহের মাধ্যমে পথ চলা।তখন আজকের মত এত ডিজিটাল মিডিয়ার দাপাদাপি ছিল না গোটা দেশ ও বিদেশ জুড়ে।জেলায় গুটি কয়েক পেপার হাতে গোনা আর গুটি কয়েক টিভি চ্যানেল। কারণ সেই সময় সেভাবে টিভিরও বিকাশ ঘটেনি এই গ্রাম বাংলায়।প্রথমে ই টিভির ট্রায়াল রান’দিয়ে শুরু হয়েছিল হাতে খড়ি।এরপর এবিপি আনন্দে দীর্ঘ ২২ বছর কর্মজীবন।মাঝখানে ঘাত প্রতিঘাত এবং এই সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হারিয়েছে নিজের শরীরের মূল্যবান সম্পদ চোখ।তবু দমাতে পারেনি,এই বছর ৫১ র সোমেশ বাবুকে।এখনো তিনি বাইকে করেই জেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত দৌড়ে বেড়ান শুধু খবর সংগ্রহের নেশায়।তার তোলা ছবি দেখে উপভোগ করে করে জেলার আমজনতা।

দীর্ঘ মাওবাদী পিরিয়ডে ছবি তুলতে কুণ্ঠা বোধ করেননি তিনি।অদম্য সাহস সেইসঙ্গে কর্মজীবনের সঙ্গী সাথীদের সহযোগিতায় এগিয়ে গেছেন ধীরে ধীরে।দীর্ঘ ১২ বছরের কাজের প্রাপ্তি অবশেষে মিলল অফিসের বসেদের কাছ থেকে। সম্মানিত হলেন তিনি লং সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড এর জন্য।পুরস্কৃত করা হলো তাকে। তাতেই খুশিতে ডগমগ মেদিনীপুরের সোমেশ। এই পুরস্কারে খুশির মেদিনীপুর জেলার মানুষজন।অনেকেই তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আগামী দিনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।

এদিন এ বিষয়ে সৌমেশ্বর মন্ডল তার অভিজ্ঞতায় বলেন,”আজ’কে জীবনের একটা পরম আনন্দের দিন।আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে ‘লং সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’ পেলাম।দেখতে দেখতে সংবাদ মাধ্যম জগতে ২৫’টা বছর কাটিয়ে দিলাম।যা শুরু হয়েছিল ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে।প্রথমে ই-টিভি বাংলা চ্যানেলের ‘ট্রায়াল রান’ দিয়ে।২০০১ এর অক্টোবরে খাসখবরে।শেষে ২০০৩ সালে আনন্দবাজার পত্রিকায় যোগ।কাজ করেছি বেলপাহাড়ি থেকে হলদিয়া- দীঘা অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা জুড়ে।দীর্ঘ সময় কাজ করার সুবাদে জমে উঠেছে অভিজ্ঞতার ঝুলিও।তাতে যেমন রয়েছে,ছোট আঙরিয়া, কেশপুর-গড়বেতা নেতাই সিপিএম তৃণমূলের বোমা গুলি বন্দুকের লড়াই অন্যদিকে আমলাশোল,বাৎসরিক বন্যা যন্ত্রণা, জঙ্গলের হাতি,বাঘ,মাওবাদীদের কার্যকাহিনী,সরকার বদল।

সম্প্রতি করোনা,লকডাউন, তৃণমূল-বিজেপির লড়াই তেমনই রয়েছে ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করার অভিজ্ঞতা।আমার জীবনের মোড় ঘুরে গিয়েছিল একটি ঘটনায়। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে কাজ করতে গিয়ে লালগড়ে ঝিটকার জঙ্গলে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হওয়া।স্বয়ং মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে আনন্দবাজার।চোখের মতো মূল্যবান সম্পদ খোয়ানোর পরেও চিত্র সাংবাদিক হিসেবে নিরন্তর কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছে আনন্দবাজার।

জেলায় খেলার খবর লেখার সুযোগ দিয়েছে। আজ ‘লং সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’ পেলাম।আমি কৃতজ্ঞ………