
যমুনাবালি 8 ই সেপ্টেম্বর:
অবৈধ বালি পাচার মামলায় মেদিনীপুরে ইডির তল্লাশি।এইদিন সকাল প্রায় ৭ টা নাগাদ তিনটি গাড়িতে করে মেদিনীপুর শহরের যমুনাবালী এলাকায় বালি ব্যবসায়ী সৌরভ রায়ের বাড়িতে পৌঁছন ইডি অফিসাররা। বাড়ি ঘিরে ফেলেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। টানা কয়েক ১১ ঘন্টা ধরে চলছে তল্লাশি অভিযান। যদিও, সৌরভ রায় বাড়িতে নেই।তাঁর মা, স্ত্রী, ছেলে-বৌমারা বাড়িতে ছিলেন। বালি পাচার মামলায় এই তল্লাশি বলে ইডি সূত্রে খবর।খতিয়ে দেখা হচ্ছে ব্যবসায়িক নথিপত্র।

বালি পাচার মামলায় ইডির তদন্ত রাজ্যের বাইশটি জায়গায়,যা নিয়ে উত্তেজনা গোটা রাজ্য জুড়ে। মূলত সকাল হতেই দিয়ে হানা দেয় ঝাড়গ্রাম পশ্চিম মেদিনীপুর কলকাতা সহ রাজ্যের ভিন্ন ভিন্ন জেলায়।ঝাড়গ্রাম এর অবৈধভাবে বালি পাচার মামলায় নাম জড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বালি মাফিয়া সৌরভ রায়ের। যদিও এদিন সৌরভ রায় বাড়িতে না থাকায় তার পরিবারের সদস্যদের তল্লাশি চালানো ইডির আধিকারিকরা।সূত্রে জানা যায়, অল্প বয়সে বাবাকে হারানোর পর মা বিজলি প্রভা রায়-ই মানুষ করেছেন সৌরভকে। প্রথমে ঠিকাদারি ব্যবসার মধ্য দিয়ে উত্থান হয় এই বালি মাফিয়ার।মেদিনীপুর,লালগড় সহ বিভিন্ন জায়গাতে আছে তাঁর একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি। গত ২-৩ বছর ধরে তিনি বৈধ খাদান লিজে নিয়ে বালি ব্যবসা শুরু করেন।এই মুহূর্তে রাজ্যের অন্যতম বড় বালি ব্যবসায়ী হিসেবে তাঁর পরিচিতি।

সেই সূত্রে শাসকদলের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে দহরম মহরম এই বালি মাফিয়ার।সম্প্রতি গত কয়েকদিন ধরে ব্যবসার কাজে তিনি কলকাতায় থাকা শুরু করেন বলে সূত্রের খবর।মেদিনীপুরের বাড়িতে অভিযান চললেও সৌরভের বালি খাদান থেকে ব্যবসা সবটাই ঝাড়গ্রাম থেকে চলত।ঝাড়গ্রামের লালগড়ে রয়েছে সুবিশাল বাংলো ও অফিস। বড় ঠিকাদার হিসেব পরিচিতি থাকলেও, গত দু-তিন বছর ধরে বালি ব্যবসার সাথে যুক্ত হওয়ার পরই সৌরভের চমকপ্রদ উত্থান হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি।জাল সিও ব্যবহার করে বালি পাচারের কারণেই এই ব্যবসায় সৌরভের চমকপ্রদ উত্থান বলে অভিযোগ ওয়াকিবহাল মহলের।

যদিও এই ঘটনায় ওভারলোডিং এর জন্য তার গাড়ি যা যাতায়াতের ফলে রাস্তার সমস্যা নিয়ে বহুবার এলাকার মানুষ বিক্ষোভও দেখেছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু মাথায় বড় রাঘব বোয়ায়েলের হাত থাকায় খুব একটা কেউ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারেনি।বৈধ বালি ব্যবসার আড়ালে সৌরভ অবৈধবাবে ব্যবসা চালাতেন কিনা, মূলত সেটাই এদিন খতিয়ে দেখছেন ইডি-র তদন্তকারী দল।ঘটনা ঘিরে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বলে জানা গেছে।

যদিও এ বিষয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি-র সহ-সভাপতি শঙ্কর গুছাইতের অভিযোগ করেন “বালি পাচার, কয়লা পাচার, গরু পাচার ছাড়া এই সরকারের আমলে আর আছেটা কি।সৌরভ রায় একজন বালি মাফিয়া হিসেবে পরিচিত। জাল সিও (ক্যারিং অর্ডার) ব্যবহার করে বালি পাচার করেন। আর সেই অবৈধ টাকার ভাগ কলকাতা অবধি পৌঁছে যায়।” যদিও, শাসকদলের বিরুদ্ধে আঙ্গুল ওঠায় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক তথা মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান দীনেন রায়।

তিনি বলেন, “আমি যতদূর জানি পশ্চিম মেদিনীপুরে নয়, ওঁর বালি খাদান বা ব্যবসা সবটাই ঝাড়গ্রামে।আর এই বিষয়ের সাথে আমাদের দল কোনোভাবেই যুক্ত নয়।”