
চন্দ্রকোনা 11 ই ডিসেম্বর:
নদীর জলে ভেসে গিয়েছে বাড়ি, ঠাই নিয়েছে বৃদ্ধ মেয়ের বাড়িতে।কিন্তু পুরানো বাড়ির বিপিএল মিটারের সেই ইলেকট্রিক মিটারে বিল এসেছে প্রায় তিন লক্ষ টাকা।যা নিয়ে আতঙ্কিত বৃদ্ধ। তিনি চাইছেন সমস্যার সমাধান করে এর থেকে অব্যাহতি দিক ইলেকট্রিক দপ্তর।যদিও বিদ্যুৎ আধিকারিক এক বার্তায় বলেন এই বিষয়ে বার বার ওনাকে জানান হয়েছিল কিন্তু উনি যোগাযোগ করেন নি।

বিদ্যুৎ বিল নিয়ে রাতের ঘুম উড়ছে বৃদ্ধ গোলাম নবী খানের। বাড়িতে BPL মিটার তার বিল ২ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা,ভূমিহীন বৃদ্ধের ইলেকট্রিক বিল আসতেই পড়েছে চরম সমস্যায়। বিদ্যুৎ বিল মুকুবের দাবিতে বিদ্যুৎ দপ্তরের দ্বারস্থ বৃদ্ধ, একাধিক বার বিদ্যুৎ দপ্তরে যোগাযোগ করলেও মেলেনি কোন সূরাহা। এলাকাবাসী বলছেন অবিশ্বাস্য বিল, এটা কখনোই হতে পারে না গোলামকে ভরসা জোগাচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষ। এমনই ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা দু’নম্বর ব্লকের ধাইখন্ড গ্রামের। ধাইখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা গোলাম নবী খান।এ এইবৃদ্ধ সহ এলাকার প্রত্যেকেরই দাবি এলাকার শিলাবতি নদীর গর্ভে বেশ কয়েক বছর আগে তলিয়ে গিয়েছে গোলাম এর একমাত্র বসত বাড়ি। তার পর থেকে গ্রামের মেয়ের বাড়িতে উঠেছে এই বৃদ্ধ।তিনি বেশ কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎ দপ্তর থেকে ইলেকট্রিক মিটার সংযোগ নিয়েছিলেন।

কিন্তু হঠাৎ করে কয়েক বছর আগে গোলামের প্রথম বিদ্যুৎ দপ্তরের বিল আছে ১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা।সেই বিল দেখে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় এই ব্যক্তি।সেই সময় বিদ্যুৎ দপ্তরে যোগাযোগ করেছিলেন,লিখিত আবেদনও করেছিলেন তিনি। ফের আবার কয়েকদিন আগে হঠাৎ গোলামের বিল আসে ২ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা।এই বিল দেখেই চরম দুশ্চিন্তায় এই বৃদ্ধ।ইতিমধ্যে একাধিকবার বিদ্যুৎ দপ্তরে লিখিত আবেদন নিবেদন করেও মেলেনি কোন সূরাহা।তবে এই গোলামকে এই বিষয়ে ভরসা যোগাচ্ছে গ্রামের মানুষজন। এখন দেখার বিপিএল তালিকাভুক্ত এই গোলামের বিষয়ে কি সমাধান সূত্র বের হয়।

এ বিষয়ে ক্রেতা গোলাম নবী খান বলেন বাড়িতে আমার মাত্র একটি আলো এবং একটি ফ্যান চলে।না আছে এসি না আছে ফ্রিজ।তারপরও বিদ্যুতের বিল দেখি প্রায় তিন লক্ষ টাকা।আমি আতঙ্কিত এই সমস্যার সমাধান এবং এর থেকে অব্যাহতি চাইছি।কারণ আমার মতন খেটে খাওয়া মজুরের পক্ষে এত টাকা কারেন্টের বিল দেওয়া সম্ভব না।

এ বিষয়ে এলাকার পঞ্চায়েত মেম্বার শক্তিপদ রায় বলেন এই বৃদ্ধটির একটি বাড়ি ছিল কিন্তু তা নদী গর্ভে চলে যায়। এরপরও পাগলের মতন ঘুরতে থাকে।পরে ওই বাড়ির পাশেই ওর মেয়ে বাড়িতেও কোনক্রমে দিন কাটানো শুরু করে।সেখানেই ওর পুরনো বাড়ির মিটারটা এনে লাগানো হয় যা হচ্ছে বিপিএল মিটার। বছর পাঁচেক আগেই এরকম এক ধরনের ভুতুড়ে বিল এসেছিল।এরপরও ইলেকট্রিক অফিসের দ্বারস্থ হয়েছিল কিন্তু ওর ইলেকট্রিক না কেটেছে না সমস্যার সমাধান করেছে। কারণ ওর বাড়িতে না আছে ফ্রিজ না আছে এসি না আছে বড় কিছু ইলেকট্রিক পোড়ানোর সাবমারসিবল। তারপরও পুনরায় আবার প্রায় তিন লক্ষ টাকার বিল পাঠিয়েছি ইলেকট্রিক দপ্তর।খেটে খাওয়ার দিনমজুর এই বৃদ্ধের পক্ষে এত টাকা বিল মেটানো সম্ভব নয়।আমরা চাই এ বিষয়ে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হোক ইলেকট্রিক দপ্তর।

যদিও এই নিয়ে মেদিনীপুরের জেলা এক বিদ্যুৎ আধিকারিক বক্তব্যে বলেন,”ঘটনাটা এক দিনের না। দীর্ঘ ২০১০ সাল থেকে উনি কারেন্টের বিল দিচ্ছেন না।এই নিয়ে আমরা ওনার কারেন্ট ডিসকানেক্ট করে দিয়েছিলাম। তারপর উনি আবার কিছুদিন পর লাইনটা যোগ করে নিয়েছিলেন।পরবর্তীকালে উনাকে বিল পাঠানো হয়েছিল কিন্তু তারপর উনি বিল দেন নি। ২০১৮ সালে দুয়ারের সরকার বসেছিল সেখানেও আমরা মাইকিং গাড়ি ঘুরেছিলাম তাতেও উনি বিল এডজাস্টমেন্ট করতে নিয়ে আসেননি। আমাদের মনে হয় উনি শুধু টিউব জ্বালাতেন তা নয় এমন কিছু করতেন যার জন্যই কারেন্টের বিল বেড়েছে।তবে ওনার জন্য পথ এখনো খোলা আছে।উনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা অবশ্যই বিষয়টা ভেবে দেখব।